সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এবং বক্স অফিসেও দারুণ সাড়া ফেলেছে। সিনেমাটি শুধু বাণিজ্যিকভাবে সফল নয়, দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। এই সাফল্য উদযাপনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি একটি বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে শহরের যৌনকর্মীদের জন্য বিনামূল্যে এই চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, নটী বিনোদিনী নিজেও এক সময় বারবনিতার সন্তান ছিলেন, যা এই আয়োজনকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। এই বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ছবির মুখ্য চরিত্রাভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, শহরের বিখ্যাত বিনোদিনী থিয়েটারে এই স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করা হয়। বিশেষ এই অনুষ্ঠানে যৌনকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়, যাতে তারা বিনোদিনীর জীবনসংগ্রাম ও সাফল্যের কাহিনি পর্দায় উপভোগ করতে পারেন। এদিন রুক্মিণী মৈত্র একটি ছাই রঙের শাড়িতে উপস্থিত হন এবং এক বয়স্কা মহিলার হাত ধরে সিনেমা হলে প্রবেশ করেন, যা তার সংবেদনশীল ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক। তিনি উপস্থিত অতিথিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের সঙ্গে ছবি তোলেন, যা অনুষ্ঠানের আবেগঘন মুহূর্তগুলোর অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠে।
এই মহতী উদ্যোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসার জোয়ার বইয়ে দেয়। নেটিজেনরা অভিনেত্রীর প্রশংসা করে বলেন, ‘ওঁর অভিনয় নিয়ে যতই বিতর্ক হোক না কেন, মানবিক গুণাবলীর দিক থেকে তিনি অনন্য।’ কেউ কেউ উদ্যোগটিকে ‘অসাধারণ’ বলে অভিহিত করেছেন। রুক্মিণী মৈত্রের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে চলচ্চিত্র শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেও সক্ষম।
আরও পড়ুনঃ অনুরাগের ছোঁয়ায় বদল হলো মুখ্য অভিনেত্রী! নেপথ্যে কারণ কি?
চলচ্চিত্রটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুক্মিণী মৈত্র, যিনি বিনোদিনীর চরিত্রে তার শক্তিশালী অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এছাড়াও গুরমুখ রাইয়ের ভূমিকায় আছেন মীর আফসার আলি, কুমারের চরিত্রে ওম সাহানি, গিরিশচন্দ্র ঘোষ হিসেবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাঙা বাবুর ভূমিকায় রয়েছেন রাহুল বসু। স্বামী রামকৃষ্ণের চরিত্রে অভিনয় করেছেন চন্দন রায় সান্যাল। ছবিটি পরিচালনা করেছেন রাম কমল মুখোপাধ্যায় এবং প্রযোজনার দায়িত্ব নিয়েছে দেব এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চার্স লিমিটেড।
‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ আন্তর্জাতিক মহলেও স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি দক্ষিণ এশীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (South Asian International Film Festival) মনোনীত হয়েছে এবং আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি উৎসবের শেষ দিনে প্রদর্শিত হবে। এই সাফল্য বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় এবং ছবিটির বিষয়বস্তু ও প্রেক্ষাপট এর তাৎপর্যকে আরও গভীর করে তোলে।