“খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি… কাউকে বলিনি” — কী এমন ঘটছে স্বস্তিকার জীবনে, যা লুকিয়ে রেখে চালিয়ে যাচ্ছেন শ্যুটিং?

টানা শুটিংয়ের মাঝে চোখে অন্ধকার, তবুও ক্যামেরার সামনে দৃঢ় অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত। আলো সহ্য না-করতে পারা, চোখে অসহ্য যন্ত্রণা, শরীরও একপ্রকার বিদ্রোহ করছে—তবুও তিনি শুটিং করছেন অবিচল মনোভাব নিয়ে। অভিনেত্রীর কথায়, “যত ঝড় আসুক, কাজ ছাড়ব না।” এখন প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ এমন কী ঘটল, যা এই জেদ আরও বাড়িয়ে দিল স্বস্তিকার?

‘ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল’ ছবির শুটিং চলাকালীন ঘটে দুর্ঘটনাটি। ছবির পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায় জানান, শুটিংয়ের সময় হঠাৎ করেই স্বস্তিকার বাঁ চোখে বড় দানার বালি ঢুকে পড়ে। এতে চোখের কর্নিয়ায় গভীর ক্ষত তৈরি হয়। চিকিৎসক রূপককান্তি বিশ্বাস জানান, এ ধরনের আঘাতে যন্ত্রণা অত্যন্ত তীব্র হয়, এবং স্বাভাবিকভাবে চোখ খোলা রাখা প্রায় অসম্ভব। তবুও তিনি শুটিং চালিয়ে যান—একা একজ়িম্পল!

এই ঘটনার পরও অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত শুটিং বন্ধ করেননি। বানতলার একটি পুরনো বাড়িতে, টানা দু’দিন রাতভর শুটিং চালিয়ে যান তিনি। ছবির গল্পকার জ়িনিয়া সেন বলেন, “চোখে যেন কেউ পিন ফুটোচ্ছে—এমন যন্ত্রণা নিয়েই তিনি অভিনয় করেছেন। মিনিট ২০-এর জন্য অ্যানাসথেটিক ড্রপে সামান্য স্বস্তি পেতেন, সেই সময়টাই কাজে লাগিয়ে শট দিতেন।” সেই সময় মোবাইলও ব্যবহার করতেন না, আলো সহ্য করতে না পারায় ঘর অন্ধকার করে রাখতেন।

চোখের আঘাত ছাড়াও আরও একাধিক শারীরিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন স্বস্তিকা। লাভার পাহাড়ি এলাকায় শুটিংয়ের আগে হঠাৎ কাঁধে টান লাগে, যার জেরে হাত নাড়াতে পারছিলেন না তিনি। এরপর শহরে ফিরে প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি-কাশি। এই অবস্থার মধ্যেও তাঁর লড়াই থামেনি। কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এতটাই যে, কারও কাছে কিছু না বলেই তিনি একের পর এক চ্যালেঞ্জ সামলেছেন নিঃশব্দে।

আরও পড়ুনঃ টলিউডের প্রানবন্ত অভিনেতা আজ মৃ’ত্যুর দোরগোড়ায়! চিকিৎসায় প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ! সহ-অভিনেতাদের কাছে কা’ন্নাভেজা আর্জি মেয়ের! জীবনের মঞ্চে শে’ষ দৃশ্য কি এতটাই নির্মম?

সব মিলিয়ে স্বস্তিকার এই পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণামূলক। তাঁর নিজের কথায়, “ওষুধ দিয়ে অবশ করে হোক বা আইপ্যাক লাগিয়ে… শুটিং আমি করবই।” এই কথাই প্রমাণ করে দেয়, অভিনয়ের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ঠিক কতটা গভীর। বর্তমান বাংলা টেলিভিশনের ব্যস্ততম এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অভিনেত্রীদের মধ্যে তিনি যে অন্যতম, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।