টলিউড যখন জোর গলায় বলছে— ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’, ঠিক তখনই এক স্বাধীন পরিচালকের ছবি মুক্তির আগেই আটকে গেল নানা জটিলতায়। সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া সত্ত্বেও ১৪ নভেম্বর মুক্তি পায়নি ‘দ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’। ছবির পরিচালনা করেছেন নবাগত জয়ব্রত দাস, যার পিছনে রয়েছে এসআরএফটিআই-এর একদল ছাত্রছাত্রীর বহু বছরের পরিশ্রম। প্রচার চলছিল বেশ জমজমাট, কিন্তু ঠিক মুক্তির আগের মুহূর্তে ফেডারেশনের আপত্তিতে থমকে যায় সবকিছু।
ফেডারেশনের অভিযোগ, ছবিটির ক্ষেত্রে নাকি নিয়ম মানা হয়নি। শুক্রবার এক বৈঠকে পরিচালক জয়ব্রত, প্রযোজক মানব সাহা ও সঙ্কেত মিশ্র উপস্থিত থাকলেও সেখান থেকে কোনও সমাধান মেলেনি। রাতেই নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করে জয়ব্রত জানান, মুক্তির তারিখ নিয়ে তিনি নিজেও অনিশ্চিত। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হল— তাঁর কাছে পৌঁছচ্ছে ব্যক্তিগত আক্রমণের হুমকি। যদিও সেই ফোনকলগুলোর উৎস ফেডারেশন নয়, মাঝেমধ্যেই কেউ কেউ নাকি ছাত্র পরিচালিত টিমের পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছেন।
পরিচালকের অভিযোগ, তাঁদের স্বাধীন ছাত্র-প্রয়াসকে ইন্ডাস্ট্রির একাংশ ‘প্রতারণা’ বলে তুলে ধরছে। বাজেট মাত্র ২৫ লক্ষ— তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে সামান্য সঞ্চয় আর ছোট ছোট তহবিল মিলিয়ে বানানো এই ছবি। রুদ্রনীল ঘোষ, সৌরভ দাস, পায়েল সরকার, দর্শনা বণিক— কোনও অভিনেতাই পারিশ্রমিক নেননি। পরে প্রমোদ ফিল্মস কিছু আর্থিক সহায়তা দেয়, আর সেখান থেকেই নাকি তৈরি হয়েছে জটিলতা। সেন্সর, ট্রেলার, পোস্টার— সব জায়গায় প্রযোজক প্রতীক চক্রবর্তীর নাম থাকায় ফেডারেশনের দাবি, এটি ‘স্টুডেন্ট ফিল্ম’ নয়, বাণিজ্যিক ছবি। তাই অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস আরও প্রশ্ন তুলেছেন ছবির নিবন্ধিকরণ নিয়ে— বাংলার ছবি হয়েও নাকি তা মুম্বইয়ে রেজিস্টার করা হয়েছে। পাশাপাশি টেকনিশিয়ান ব্যবহার না করা এবং প্রচারে যে ব্যয় হয়েছে— সেসব নিয়েও তাঁদের আপত্তি। ফেডারেশনের দাবি, যেহেতু প্রচার ও পরিবেশনার খরচ বহন করেছে প্রমোদ ফিল্মস, তাই তাঁদের সঙ্গেই ফের বৈঠক করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ‘জিতুকে মাসের পর মাস ধরে মান’সিক নি’র্যাতন করেছে, ঈশ্বর সব দেখছেন…দিন গোনা শুরু করুন!’ ‘একপেশে প্রোডাকশনের নায়িকার মুখে ঝাঁ’টা মা’রতেও ঘে’ন্না করে!’– ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ থেকে জিতুর বিদায়ে দিতিপ্রিয়াকে তুলোধোনা দর্শকদের! ডাক পড়ছে বয়কটের!
সব মিলিয়ে, বহু বছরের পরিশ্রমে তৈরি একটি স্বাধীন ছাত্র-চলচ্চিত্র আজ আটকে আছে প্রশাসনিক জটিলতায়। জয়ব্রতর কথায় স্পষ্ট হতাশা— “সব ভুল করেছি। সিনেমা বানানোই নাকি আমাদের সবচেয়ে বড় অপরাধ।” এখন দেখার, আলোচনার টেবিল থেকে উঠে আসতে পারে কি নতুন কোনও সমাধান, নাকি ‘দ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবে বড় পর্দায় আসার জন্য।






