সম্পূর্ণ বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরে আসুক অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা, গোটা বাংলা এখন এমনটাই প্রার্থনা করছে। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে রীতিমতো কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। তাই বলা যায় একপ্রকার মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
যদিও এখন নাকি আগের থেকে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন কিন্তু পুরোপুরি বিপদ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি এমনটাই জানিয়েছে ডাক্তাররা। কিন্তু আপনারা জানেন কি আরো একজন ছোট পর্দার জনপ্রিয় নায়িকা রয়েছে যিনি এমন একটা সময় কাটিয়েছেন নিজের জীবনে? সময় না বলে বরং দুঃসময় বা কঠিন সময়ই বলা উচিত।
কে সেই নায়িকা? তিনি হলেন অভিনেত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী। লুকোচুরি, দীপ জ্বেলে যাই, মেঘের পালকের মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে মৌমিতাকে। যথেষ্ট প্রশংসা অর্জন করেছিলেন দর্শকদের তরফ থেকে নিজের অভিনয়ের জন্য। শুধু তাই নয় কাজ করেছেন বড় পর্দায়ও।
কিন্তু তারপর তেমনভাবে আর দেখা যায় না এই নায়িকাকে। কেনো আর দেখা যায় না? কী হয়েছে তার? এই নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন অভিনেত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোস্ট করেছেন তিনি যেখানে নিজের যন্ত্রণার কথা শেয়ার করেছেন ভক্তদের সঙ্গে।
লিখেছিলেন “ভেবেছিলাম সেসব দিনগুলো ভুলে যাব কিন্তু ঐন্দ্রিলার ঝড়ে আমার ভুলে যেতে চাওয়া দিনগুলো ফের মনের কোনায় ভেসে এলো। সালটা ২০১৬, এপ্রিল মাস… তখন আমি সবার প্রিয় খলনায়িকা তৃণা… দীপ জ্বেলে যাইয়ের টিআরপি তুঙ্গে…এমন সময়ে অত্যন্ত কঠিন একটা অসুখ ধরা পড়ল যার নাম এন্ডোকার্ডাইটিস। যা কিনা ভয়াবহ এক ওরাল ব্যাকটেরিয়া হার্টকে ইম্প্যাক্ট করে…”।
কিন্তু রোগটা এতটাই বিরল একটা রোগ ছিল যে তখন তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে হয়ে গেলেন গিনিপিগ কারণ অর্ধেক জুনিয়র ডাক্তাররা এর সম্পর্কে অবগতই ছিল না। টানা দুমাস ইন্ট্রা ভেনাস ফ্লুইড চলছিলো হাতে চ্যানেল করে। আর ওই অবস্থাতেই তিনি ঘর গুছিয়েছেন, রান্না করেছেন, পাগলামি করেছেন।
অবশেষে দুমাস পর নায়িকার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হলো। তিন দিনের মাথায় ফিরল জ্ঞ্যান। চোখ খুলেই নিজের বাবাকে দেখলেন। এদিকে অপারেশন চলাকালীনই হয়ে গেছিল একটা ব্রেন স্টোক যার কারণে নায়িকার শরীরের বাঁদিক অসাড় হয়ে যায়। ২০১৬ সালের জুন থেকে জানুয়ারি অবধি কিছু মনে নেই তার। পুরোটাই নিজের মা বাবা এবং প্রীতমের কাছ থেকে শুনেছেন। তখন মাঝে মাঝেই খুব হিংসাত্মক হয়ে উঠতেন এবং একসময় এক নার্সকে আঁচড় দিয়ে ফেলেছিলেন। দীর্ঘ নয়-দশ মাস টানা ফিজিওথেরাপি চলেছে এবং এখন তিনি আগের মতই সুস্থ। আর এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব তিনি দিয়েছেন নিজের মা, বাবা, ভাই, প্রীতম এবং মামাবাড়িকে।
আর ওই সময়টায় এই কয়েকজনকে ছাড়া বাড়ির আর কেউ পাশে ছিলেন না এমনকি খোঁজ নেননি কোনদিন। আর ঐন্দ্রিলার পাশে ওর গোটা পরিবার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন এবং ভক্তরা রয়েছে। তাই মৌমিতার বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি ঐন্দ্রিলা আবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন এবং কাজেও ফিরবেন।