বাংলা চলচ্চিত্র (Tollywood) ও ছোট পর্দার এক অত্যন্ত সুপরিচিত মুখ বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘রত্না ঘোষাল’ (Ratna Ghoshal) । ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে তাঁর এই অভিনেত্রী জীবন। ছবি থেকে ধারাবাহিক, প্রতিটি মাধ্যমেই নিজের অসামান্য অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন তিনি। ‘বাংলা মিডিয়াম’ (Bangla Medium) ধারাবাহিকে তাঁকে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনও ধারাবাহিকেই দেখা যায়নি তাঁকে। তবে শোনা যাচ্ছে, দীর্ঘ এই যাত্রার শেষে এবার ছোটপর্দা থেকে নিজেই সরে দাঁড়ালেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
অনেকেই এতোদিন ভেবেছিলেন হয়তো বয়সের কারণেই অভিনয় থেকে দূরে তিনি। কিন্তু সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রত্না ঘোষাল জানিয়েছেন, তিনি নিজেই বাংলা ধারাবাহিক থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ৬১ বছরের সফল অভিনেত্রী জীবনের পরেও এই সিদ্ধান্তের কারণ? ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিনেত্রী বলেন, মূলত ধারাবাহিকের কাজের পরিবেশ এবং সৃজনশীলতার অভাব। আজকের বাংলা ধারাবাহিকে আর সেই আগের মতো গল্প নেই, নেই টানটান স্ক্রিপ্ট বা নির্দিষ্ট কোনও প্ল্যানিং।
দিনের পর দিন সময় মতন চিত্রনাট্য না আসা, সেটে অনিশ্চয়তা, এই সব কারণেই রত্না ঘোষালের মনে হয়েছে আর নয়! তিনি একপ্রকার হতাশ হয়েই বলেছেন, সকাল থেকে শুটিংয়ে গিয়ে একাধিকবার তাঁকে শুধু অপেক্ষা করেই সময় কাটাতে হয়েছে। সময়মতো স্ক্রিপ্ট না আসা, দৃশ্য ঠিক না থাকা, একটার পর একটা অনিশ্চয়তা, এসবই তাঁর অভিনেত্রী সত্তাকে বিরক্ত করেছে। তিনি মনে করেন, “একজন শিল্পীর অভিনয় করার জন্য নির্দিষ্ট কাঠামো থাকা জরুরি, নইলে সেটা শুধু সময় নষ্ট।”
তিনি আরও বলেছেন, “আমার মতন প্রবীণ শিল্পীও যদি দিনে পর দিন এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন, তাহলে নবীনদের অবস্থা কতটা কঠিন, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।”তবে ভালো খবর এটাই, যে অভিনয় থেকে পুরোপুরি বিদায় নিচ্ছেন না তিনি! টেলিভিশনের বাইরে অন্য মাধ্যমে অভিনয় করার ইচ্ছা এখনও রয়েছে তাঁর। বিশেষ করে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে আগ্রহী তিনি। তাঁর মতে, ওটিটিতে অভিনয়ের সুযোগ থাকে, গল্পের গাঁথুনি থাক।
আরও পড়ুনঃ অনেক হল জলসায়! এবার প্রতীক জি বাংলায়! নতুন পরিচয়ে, নতুন ধারাবাহিক নিয়ে জি’র পর্দায় ফিরছেন মহারাজ! বিপরীতে নায়িকা কে জানেন?
আর থাকে সঠিক পেশাদারিত্ব, যা বর্তমানে বাংলা ধারাবাহিকে বড়ই অনুপস্থিত। রত্না ঘোষালের এই খোলামেলা বক্তব্য ফের একবার প্রশ্ন তুলেছে বাংলা ধারাবাহিকের গুণগত মান নিয়ে। একজন অভিজ্ঞ শিল্পীর যখন এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন সেটি নিঃসন্দেহে ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি খারাপ সংকেত। হয়তো এবার সময় এসেছে নতুন করে ভাবার, যে শিল্পীদের সম্মান এবং সৃজনশীলতা বজায় রাখলেই তবে আগামী দিনের পথ সুন্দর হবে।