বাংলা বিনোদন জগতের দুইজন খ্যাতনামা অভিনেতা ও অভিনেত্রী তারা। একসময় মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) সঙ্গে প্রেম ছিল অভিনেত্রী মমতা শঙ্করের (Mamata Shankar)। দুজনের প্রেমের কথা জানত দুই বাড়ির লোক এমনকি বিয়ের তারিখও পাকা হয়ে গিয়েছিল। তবে হঠাৎই সরে যান দুজনে। কাকতালীয়ভাবে মমতা শঙ্কর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৭৮ সালে আর ওই বছরই প্রথমবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন মিঠুন চক্রবর্তী।
সংবাদ মাধ্যমকে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে বিয়ে নিয়ে কি বলেছেন মমতা শঙ্কর
নিজের সম্পর্কে নিয়ে আগেই লিখেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। আমার নায়িকারা বইটিতে এই বিষয়ে নিজের সমস্ত কথা বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান “বাপিদা চন্দ্রদয় ঘোষের সঙ্গে তখন আমার বিয়ের কথা চলছিল চলছিল। এরপরই মৃগয়া ছবির শুটে আলাপ হয় মিঠুনের সঙ্গে। বাপিদার সঙ্গেও মিঠুনের আলাপ করিয়েছিলাম। আউট ডোর শুটে যাওয়ার আগে।”
এরপর মমতা শঙ্কর আরও বলেন “কিন্তু কোথায় যে কি হয়ে গেল আমি নিজেও নিজেকে অনেক কষ্টে ধরে রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলাম। যে বাপিদাকে আমি ঠকাবো না কিন্তু কিভাবে কি হয়ে গেল! একদিকে আরও ভালোই হয়েছে বাপিদাকে আমি আরও ভালো করে চিনতে পেরেছি। কারুর সঙ্গে কিছু না হলে হয়ত এত ভালো করে চিনতে পারতাম না। মিঠুনের বাড়ির লোকেদের সঙ্গেও আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। ওর বাড়ির বোনেরা সবসময় আমার খোঁজ নিত।”
কেন মমতা শঙ্করকে বিয়ে করতে রাজি হলেন না মিঠুন চক্রবর্তী?
অভিনেত্রী কথায়, মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর বিয়ের তারিখ ঠিক হলেও বিয়েটা হয়নি। মিঠুন চক্রবর্তী নিজেই নাকি তখন বিয়ে করতে রাজি হননি। আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। সদ্য জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। হাতে একের পর এক কাজ। সেই সমস্তটা জলাঞ্জলি দিয়ে ছাদনা তলায় বসতে তখন রাজি হয়নি মিঠুন। এরপরই সেই পুরোনো প্রেম বাপিদা অর্থাৎ অভিনেত্রীর বর্তমান স্বামী চন্দ্রদয় ঘোষের কাছেই ফিরে যান অভিনেত্রী। যদিও উদ্যোগটা এসেছিল বিপরীত তরফ থেকেই। ফোন করেছিলেন হবু শাশুড়ি। ফোন করে ছেলের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলেন তাকে।
আরো পড়ুন: কোজাগরীতে হ্যাপি এন্ডিং! শেষে গল্প কোন খাতে বইবে? সম্প্রচারের আগেই খোলসা হল প্লট!
মমতা শঙ্করের বিয়ের কথা শুনে কি বলেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী
অভিনেত্রীর মতে, “ও ফোনটা ধরে এমন করে কথা বলতে আরম্ভ করল যেন আমাদের মধ্যে কিছুই হয়নি। আমি ওর গলা শুনে কেঁদেই অস্থির। আমায় বলল মমতা আমি চোখের জল পছন্দ করিনা। আমি তো কথাই বলতে পারছিলাম না। ফোনটা রাখার সময় ও বলল কথা দাও আবার ফোন করবে তবে কাল নয় পরশু ফোন করো। কাল একটা মেয়ে দেখতে যাচ্ছিল। আমার নয়, বন্ধুর। আমি প্রশ্ন করলাম তোমার জন্য কবে দেখতে। ওপাশ থেকে উত্তর এলো আমি তো সেই কবেই দেখে রেখেছি।”এর পরে মিঠুন চক্রবর্তীকে নিজের বিয়ের খবরটা দিয়েছিলেন মমতা নিজেই।
এক রেকর্ডিং স্টুডিওতে মুখোমুখি হতেই মমতা বলেছিলেন “তোর সঙ্গে কথা আছে। মুহূর্তেই সবটা বুঝে নেন মিঠুন। বলেছিলেন কি বলবি বিয়ে করছিস তো? আমিও বিয়ে করছি।” ওই একই বছরে মিথুন বিয়ে করেন হেলেনকে আর মমতা শঙ্কর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তার প্রথম ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে। তবে একসময়কার প্রাক্তন মমতা শঙ্কর এবং মিঠুন চক্রবর্তী বর্তমানে সত্যিকারের বন্ধু এবং সহকর্মী। একসঙ্গে প্রজাপতি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন তারা। তাদের জুটি বেশ পছন্দ করেছেন দর্শক।