আজ থেকে ঠিক দু’বছর আগে অর্থাৎ ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে মুম্বইয়ের জুহুর একটি বেসরকারি একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ভারতকে সংগীত দুনিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক সুরকার বাপ্পি লাহিড়ীর (Bappi Lahiri)। ৬৯ বছর বয়সে ভারতীয় সংগীত দুনিয়াকে স্তব্ধ করে দিয়ে চলে যান তিনি।
উল্লেখ্য, ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতীয় সংগীত দুনিয়ার এই কিংবদন্তি। তাঁর মৃত্যুতে আজও শোকস্তব্ধ তার ভক্তরা। গায়কের মৃত্যুতে আজও মন ভারী তার ছেলে-মেয়েদের।
বাপ্পি লাহিড়ীর সুপুত্র বাপ্পা লাহিড়ী। বাবার মৃত্যুর সময় লস এঞ্জেলেসে ছিলেন পুত্র বাপ্পা। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ দেশে ফেরেন। একবার একটি সাক্ষাৎকারে বাবার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য ভাগ করে নিয়ে ছিলেন বাপ্পা।
গায়কের মৃত্যুর পর বাবার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, নিজের সাজ পোশাক নিয়ে ভীষণই খুঁতখুঁতে ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। সব সময় রঙিন ঝলমলে পোশাক, চোখে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চোখে কালো চশমা, সেইসঙ্গে অসংখ্য সোনার হার তো ছিলই। অর্থাৎ সদাই ধোপদুরস্ত হয়ে থাকাই দস্তুর ছিল তার।
উক্ত সাক্ষাৎকারে বাপ্পা জানিয়েছিলেন বাবার এহেন সাজের জন্যই নাকি ছোট বেলায় স্কুলে বন্ধুরা তাঁকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করত। সবাই তাঁর বাবার জামাকাপড় নিয়ে মস্করা করত। যার জেরে তিনি বাবাকে প্রশ্ন করতেন, সকাল ৬টার সময় কেন চোখে কালো চশমা পরো?
এমনকি, বাপ্পি লাহিড়ীর পুত্র বাপ্পা লাহিড়ী জানিয়েছেন, ‘‘বাবা একটি দিনও সোনা ছাড়া ঘরের বাইরে পা রাখেননি। ভোর পাঁচটায় বিমান ধরার থাকলেও বাবা সমস্ত সোনা গায়ে পরে নিয়ে তবেই বেরোতেন। সোনা যেন তাঁর কাছে ছিল মন্দিরের মতো, তাঁর ক্ষমতা। তাঁর হয়ত আধ্যাত্মিক কোনও যোগ ছিল সোনার সঙ্গে।’’
আসলে হলিউডের মিউজিশিয়ান এলভিস প্রেসলির দ্বারা তিনি অনুপ্রাণিত ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। তিনি নিজে একবার বলেছিলেন, ‘এলভিস প্রেসলি সোনার চেন পরতেন সবসময়। আর আমার সেটা খুবই ভালো লাগত। আর আমি শুধু ভাবতাম, যখন আমি প্রতিষ্ঠিত হব তখন আমি এইভাবেই নিজের একটা আলাদা ইমেজ তৈরি করব। এরপর যখন আমি সফল হই। সোনার কেনার আর্থিক ক্ষমতা অর্জন করি। তখন আমি একের পর এক গয়না কিনি। সোনা আমার জন্য খুবই লাকি।’