“একটা মানুষ সৃষ্টি করেছি! আমার জীবনের সেরা অ্যাচিভমেন্ট আমার মেয়ে” “ছোট থেকেই মাকে ছাড়া থেকেছে, রাত জেগে কাঁদেনি কখনও!” সহজে সবকিছু পেয়ে গিয়ে নয় স্ট্রাগল করে বড় হোক মেয়ে চান লাভলি!

অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ ‘লাভলি মৈত্র’র (Lovely Maitra) জীবনের প্রতিটি অধ্যায়েই যেন রয়েছে আত্মবিশ্বাস আর ভালোবাসার ছোঁয়ায়। রাজনীতির রঙ্গমঞ্চ হোক কিংবা ক্যামেরার সামনে অভিনয়, সবক্ষেত্রেই নিজের আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়— একজন মা। সাত বছরের ছোট্ট রিহানা এখনই স্কুলে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু তার মা লাভলি। সেই প্রথম মায়ের কোলে আসার মুহূর্তটা এখনও স্পষ্ট মনে আছে লাভলির।

রিহানার জীবন এখন টেনিস, নাচ, আঁকাআঁকি আর পড়াশোনায় ঘেরা। কিন্তু এতো কিছুর মাঝেও মায়ের প্রতি তার নির্ভরতা চোখে পড়ার মতো। মেয়ের মাত্র দেড় বছর বয়স হতেই লাভলি আবার অভিনয়ে ফেরেন, তারপর বছর দুয়েকের মধ্যেই তিনি পা রাখলেন রাজনীতির ময়দানে। এত কাজের চাপের মধ্যেও রিহানা যেন নিজের মতো করে মায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শিখে গেছে। লাভলির কথায়, ছোটবেলা থেকেই রিহানা নিজের মতো করে বড় হয়েছে, নিজের রুটিন নিজেই মেনটেন করে।

কোনওদিন কান্নাকাটি করে রাত জাগায়নি, বরং নিজের মতো করে সব সামলে নিয়েছে। এই পরিণতিবোধের জন্য লাভলি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানান। আজকের দিনে ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন লাভলি, আর তাঁর নিয়মিত দর্শক নাকি রিহানাও। মেয়ের চোখে মা শুধুই অভিনেত্রী নয়, একজন সুপার-ওমেনও বটে। বন্ধুরা মায়ের প্রশংসা করলে মেয়ের মুখে হাসি ফোটে। এমনকি কখনও কখনও মায়ের মতো সাজতেও ভালোবাসে রিহানা।

এক রকমের লিপস্টিক, ম্যাচিং ড্রেস, ঠিক যেন ছোট্ট লাভলি! লাভলি বলেন, “ও আমার মেয়ে হলেও, ও আমাকে মা কম বন্ধু বেশি ভাবে। এই সম্পর্কটা যেন দিন দিন আরও মজবুত হয়ে উঠছে।” লাভলির স্বামী সৌম্য রায় একজন আইপিএস অফিসার। তাঁর কাজের ব্যস্ততাও কম নয়। ফলে তিনজনের একসঙ্গে সময় কাটানো অনেক সময়ই কঠিন হয়ে যায়। তবু তাঁরা চেষ্টা করেন যতটা সম্ভব সমন্বয় রাখার। লাভলির শুটিং থাকলে সৌম্য মেয়েকে সময় দেন, আবার সৌম্যের কোনও ব্যস্ততা থাকলে লাভলি মেয়ের দেখভাল করেন।

রিহানার সঙ্গে সৌম্যের সম্পর্ক বেশ মজার। একটু ভয় পায় সে বাবাকে, কিন্তু সেই ভয়টাই যেন গোপন ভালোবাসার মোড়কে ঢাকা। লাভলির মতে, মেয়েরা বাবার প্রতি একটু বেশিই দূর্বল থাকে। রিহানা বড় হয়ে কী হতে চাইবে তা নিয়ে লাভলির কোনও চাপ নেই। অভিনেত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য,”ও যদি অভিনয়কে নিজের পেশা হিসেবে বেছে নেয়, আমি খুশি হবো। আমার থেকেও যদি ভালো কিছু করতে পারে, তাহলে তো সেটা আরও আনন্দের!”

আরও পড়ুনঃ সুযোগ পেয়ে শুভকে কথা শোনাল পূরবী! এদিকে, সব সত্যি জানা সত্ত্বেও সেবন্তী শুভকে বলল মোহনাকে মেনে নিতে! কী সিদ্ধান্ত নেবে শুভলক্ষ্মী?

লাভলি চান, তাঁর মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াক, নিজের পরিচয় নিজে তৈরি করুক। সমাজ এখনও মেয়েদের কিছু কিছু জায়গায় পিছিয়ে রাখে, আর তাই আত্মনির্ভর হওয়াটা তাঁর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই লাভলি মনে করেন, স্ট্রাগল করেই মেয়েকে শিখতে হবে জীবন, যাতে সে যোগ্য জায়গাটা নিজের মতো করে অর্জন করতে পারে। সর্বোপরি তিনি বলেন, “জীবনে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে আমি কী অর্জন করেছি, আমি নির্দ্বিধায় বলব একজন মানুষ সৃষ্টি করেছি।”

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।