রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের ছেলে হয়েও গোঁড়া হিন্দু ব্রাহ্মণের মেয়েকে কেন বিয়ে করলেন মীর আফসার আলি? জেনে নিন সব

গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন মীর আফসার আলি। কারণ দীর্ঘ ২৭ বছরের সম্পর্ক শেষ করেছেন তিনি। আর রেডিও মির্চির অনুষ্ঠানে শোনা যাবে না সেই কন্ঠ। গমগমে গলার সাথে এককাপ চায়ে যিনি জমিয়ে দিতেন সকাল বেলা সেই সকালম্যানকে আর পাওয়া যাবে না। সানডে সাসপেন্স মীর ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে এবার।

এক সপ্তাহও হয়নি মীর ঘোষণা করেছেন নিজের এই বিচ্ছাদের কথা। কিন্তু কে এই মীর? মুর্শিদাবাদের একটি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই সকালম্যান। নিজে ছোটবেলা থেকেই ছিলেন রেডিওর ভক্ত। তারপর কর্মক্ষেত্রে জীবনের ২৭ টা বছর যাপন করেছেন রেডিওর সঙ্গেই। শুরুটা হয়েছিল আকাশবাণী দিয়ে। তারপর রেডিও মির্চি।

মুসলিম পরিবারের সন্তান হয়েও মিল কখনওই ধর্মভীরুতার পরিচয় দেননি। বরাবর তিনি সর্ব ধর্মের প্রতি সমানভাবে সহিষ্ণুতা প্রকাশ করেছেন। মীরের কাজের দিক দিয়ে দেখতে গেলে এমনটাই করতে হতো তাঁকে। ধর্মের উপর উঠে যে কোনো অনুষ্ঠান উৎসব উপলক্ষে রেডিওতে আপামর বাঙালীকে শুভেচ্ছা জানানোটাই তাঁর কাজ। এমনকি মীরের স্ত্রী সোমা ভট্টাচার্য একজন হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। মেয়ে মুসকানকে নিয়ে সুখে ঘর করছেন দুজনে। তবে কাজের বাইরেও তিনি বরাবর সর্ব ধর্মের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি রেখেছেন তার প্রমাণ মিলে মীরের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলি থেকে। সেখান থেকে কখনো হাসির খোরাক হয়ে ওঠেন, আবার সমালোচনার বিষয়বস্তুও হয়ে ওঠেন তিনি।

তবে নিজেকে শুধুমাত্র রেডিওতে আবদ্ধ রাখেননি মীর। পাশাপাশি সংবাদ পরিবেশন, ছোট পর্দা, বড় পর্দা, ডিজিটাল পর্দা, হাস্যকৌতুক এবং সঞ্চালনার ক্ষেত্রেও নিজেকে মেলে ধরেছেন সফলভাবে।

সম্প্রতি এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে মীর নিজে ঘোষণা করেছেন যে তিনি রেডিও মির্চি ছাড়ছেন তবে রেডিও নয়। অর্থাৎ যে ক্ষেত্রটি তাঁকে পরিচয় দিয়েছে, সমৃদ্ধ করে তুলেছে সেই ক্ষেত্র থেকে নিজেকে একেবারে সরিয়ে নিচ্ছেন না তিনি। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এর শেষ লাইনে তিনি লিখেছেন গল্পের পরবর্তী অংশ ব্রেকের পর। এর থেকে অনুমান করা হচ্ছে ব্রেক নিলেন তিনি তবে সাময়িকভাবে। হয়তো আবার অন্য কোথাও অন্য কোনো ভাবে দেখা যাবে সকলের সকালম্যানকে।