যে কয়েকজন ব্যক্তিত্ব বাঙালির আবেগ এবং বাঙালির গর্ব তাঁদের মধ্যে তালিকায় ওপরেই নাম রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের। এই বাঙালি পরিচালক আসলে গোটা বিশ্বের কাছে রত্ন। তেমনই মূল্যবান তাঁর এক একটি সৃষ্টি যার মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৫৫ সালে তৈরি করা কালজয়ী সিনেমা পথের পাঁচালী।
এমন কোন বাঙালি নেই যিনি এই সিনেমাটি দেখেননি বা সিনেমার নাম শোনেননি। সেই সঙ্গে প্রতিটি বাঙালির ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা এই সিনেমার হাত ধরে। পাশাপাশি অপু, দুর্গা চরিত্রগুলি দাগ কেটে গেছে প্রত্যেকের মনে।
সময় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। এমন সিনেমা আর তৈরি হয়নি। বহু যুগ অতিক্রান্ত হলেও সেই চরিত্রগুলি এখনও অবিস্মরণীয় আমাদের মননে।বহু সময় পেরিয়ে যাবার পরে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে সেই ছোট্ট অপু আর দুর্গা কতটা বড় হয়েছে বা তাঁরা কী করছেন এখন?
দুর্গা কিন্তু আর পাঁচটা সাধারন গ্রামের মেয়ের মতো ছিল না। গ্রামের মানুষের কাছে সে পরিচিত ছিল একটা দস্যি মেয়ে রূপে। ভাইয়ের সঙ্গে মিলে ফল চুরি, ফুল চুরি ছিল নিত্যকর্ম। প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে ভালোবাসতো সে। দিদির সান্নিধ্যে এসে প্রকৃতির প্রেমে পড়ে অপু। এমনকি তার মনে সাংস্কৃতিক বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। দিদি সংস্পর্শে এসেই সাঁওতাল নাচ বেশ প্রিয় হয়ে ওঠে ছোট্ট অপুর। তারপর দিদি দুর্গার অস্বাভাবিক মৃত্যু অপুর মনে অপূরণীয় ক্ষয় সৃষ্টি করেছিল।
এ দুর্গা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন উমা দাশগুপ্ত। শোনা যায় যখন এই সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছিল তখন টাকা পয়সার অভাব ছিল তাই বেশ কিছু কলাকুশলী পারিশ্রমিক না নিয়েই অভিনয় করেছিলেন। এর কারণ ছিল আর্থিক মন্দ।
যে শিল্পীরা পারিশ্রমিক না নিয়েই অভিনয় করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন উমা দাশগুপ্ত। সিনেমার জনপ্রিয়তায় এই শিল্পীর অবদান ভোলার মত নয়। তবে দুঃখের বিষয় ২০১৫ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন অভিনেত্রী উমা দাশগুপ্ত।