“হু ইজ কেকে ম্যান?”, সেই একটা ফেসবুক লাইভ যেন আজীবনের জন্য আঁচড় কেটে দিয়ে গেল হাজার হাজার বাঙালিকে, কেকে (KK) অনুরাগীদের। আর চির ক্ষত রেখে গেল লাইভ যে শিল্পী করেছিলেন তাঁর জীবনে। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। তবে কিছু কিছু ভুল আর ক্ষমার জায়গায় থাকে না। তার আগেই অনেক ঘটনা ঘটে যায়। ভুলটি করার সময় হয়তো ভাবনার বাইরে থাকে এত বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেমন একটি ভুকের আজীবন মাসুল দিয়ে যেতে হবে গায়ক রূপঙ্কর বাগচিকে (Rupankar Bagchi)।
কেকে অধিকাংশ মানুষের একটি ইমোশন ছিলেন, আছেন আর থাকবেন। যখন স্পটিফাই বলে কিছু ছিল না, শুধু ছিল নাইন এক্স এম, তখন মানুষ শুধু গানকে শুনতো। সেই গানই আজও যেন পারে শরীর থেকে আত্মা বার করে দিতে। কত গান মানুষ আজীবন শুনে গেল, জানলোই না কে গেয়েছেন! শুধু শুনে গিয়েছেন, গানটাকে অনুভব করেছেন।
এমন শিল্পী হওয়ার ভাগ্য কজনের হয়? আসলে এরকম শিল্পী হয়েছেন নিজের গুণে। এরকম অসম্ভব প্রতিভাবান শিল্পী ছিলেন কেকে। মানুষকে বিভোর করে দিতেন। সেই শিল্পী যখন কোলকাতায় আসার খবর হল, তখন তো মানুষে লাফালাফি করবেই। কিন্তু যেন এত উত্তেজনা, এত ভালোবাসা একটা অভিশাপে পরিণত হবে কোলকাতাবাসীর জন্য তা কেউ অনুমানও করতে পারেনি।
কেকে আসার ঠিক আগেই রূপঙ্কর বাগচী একটি ফেসবুক লাইভ করলেন। আর তাতে বলে উঠলেন, আঞ্চলিক শিল্পীদের নিয়ে এত লাফালাফি হয় না কেন? আর তারপরই সেই বিখ্যাত কটুক্তি, যায় খেসারত তাঁকে হয়তো আজীবন দিয়ে যেতে হবে। নিন্দায়, বদনামে ডুবে গেলেন গায়ক।
আর তারপরই ঘটে গেল দুর্ঘটনা। নজরুল মঞ্চের গাফিলতি, নিজের অনিয়ম আরও নানা দিক দিয়ে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। মারা গেলেন কেকে। তারপর থেকে দূর্বিসহ হয়ে গেল রূপঙ্কর বাগচীর বেঁচে থাকা। এমনকী তাঁর বৃদ্ধা মাকে নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি লোকে।
তারপর বহুবার প্রেস কনফারেন্স করে, টিভি চ্যানেলে নিজের ভুল স্বীকার করেছেন। নিজের আবেগের কথা জানিয়েছেন। আর সম্প্রতি এইসবকে দূরে ঠেলে অরিজিৎ সিং এর কনসার্টের ছবিতে কমেন্ট করেন, “ভালোবাসা নিও”। আর তারপরই কটাক্ষে ভরিয়ে নিয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকেই লিখেছেন, “এনাকে বেঁচে থাকতে দিন”। তবে এটাও দেখার মতো বিষয়, অনেকেই এত বাজে কমেন্টের ভিড়ে লিখেছেন, “যিনি একবার ভুল করেছেন, করে বার বার স্বীকার করেছেন, তাঁকে বেঁচে থাকতে না দেওয়ার দায়িত্ব আপনারা নিয়ে নিয়েছেন?”