“জানিনা বয়স হলে কেন প্রেমে এত পাক ধরে/জানিনা হৃদয় কেন রাত জেগে পায়চারি করে।” আশির দশকের শেষ থেকে আজও যাঁর গাওয়া গান প্রচুর সঙ্গীত শিল্পীর অনুপ্রেরণা, যাঁর গানে এখনও মোহিত এই বাংলা, সেই গানওয়ালার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। বিতর্ক বিভিন্ন সময় তাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। আর জন্মদিনের প্রাক্কালেও নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিলেন কবীর সুমন(Kabir Suman)।
১৬ই মার্চ,১৯৪৯ সালে কটক, ওড়িশা’তে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবীর সুমন। তিনি নিজেই বলেছিলেন ছেলে যাতে আরও একবছর বেশি সরকারি চাকরী করতে পারে তাই বাবা, মা একবছর বয়স কমিয়ে দিয়েছিলেন। আসল ১৯৪৯। এই ৭৫ বছরে প্রচুর চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। শিল্প থেকে রাজনীতি সব মাধ্যমেই তাঁর অবাধ গতি দেখেছে বাংলা।
তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, কবি, গদ্যকার। কখনও তিনিই আবার দক্ষ সাংবাদিক। হাতে গিটার, গানের কথায় তীব্র বাস্তবতা, সুরে এক অন্যরকম ঝাঁঝ নিয়ে বাংলা সঙ্গীত জগতে ‘অন্য কথা অন্য গান’ অ্যালবাম দিয়ে পা রেখেছিলেন কবীর সুমন। এরপর তিনি যুক্ত হন ‘নাগরিক’ সঙ্গীত দলের সঙ্গে। একটা সময় নিজের গান নিজেই ফাঁকা ক্যাসেটে রেকর্ড করে বিক্রি করেছেন বই মেলায়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লেটার বক্সে ফেলে এসেছেন সেই ক্যাসেট। সঙ্গে ছোট্ট একটি অনুরোধ পত্র ‘আমার গান শুনে দেখবেন। ভালো লাগলে আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন’।
তাঁর এই কঠিন সংগ্রামের ফল ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’, যা জানান দিল বাংলা সঙ্গীত জগতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। এরপর একে একে ‘পেটকাটি’, ‘চাঁদিয়াল’, ‘কখনও সময় আসে’, ‘যদি ভাবো কিনছো আমায়’, ‘তিনতালের গান’, ‘পাগল’, ‘দশ ফুট বাই দশ ফুট’ নিয়ে গেল তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
তিনিই হয়ত বাংলার একমাত্র এমন শিল্পী যিনি সবরকম বাদ্যযন্ত্র বাজাতে সক্ষম। এই সুরের যাত্রাপথে তাঁর অনুপ্রেরণা হয়েছেন শ্যামল মিত্র, হিমাংশু দত্ত, হয়েছেন সলিল, হয়েছেন ডিলান,পীঠ সীগার। তাঁকে অনুকরণ করেননি এমন শিল্পীও বাংলায় কম নেই। নীল জিন্স, টি-শার্ট পরিহিত হাতে গিটার অত্যন্ত আলোকিত এবং একই সঙ্গে আলোচিত একটি ছবি। সম্মুখ ভাগ যতটা উজ্জ্বল প্রেক্ষাপট ততটাই অন্ধকার।

অসম্ভব গুণী এই শিল্পীকে বিতর্ক তাড়া করেছে আজীবন। কট্টর হিন্দু সংগঠন বজরং দল খ্রীষ্টান মিশনারী গ্রাহাম স্টেনস্ এর ওপর আক্রমন করলে তার তীব্র নিন্দা করে ইসলামকে আপন করে ত্যাগ করেছিলেন হিন্দু ধর্ম। ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে ভোটে দাঁড়ান তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ছিলেন পার্লামেন্টের সদস্য। সেই সঙ্গে প্রকাশ পায় তাঁর রাজনৈতিক সত্তা। এই ক্ষেত্রেও বিতর্ক কম হয়নি।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে কবীর সুমনের কাছ থেকে এই বয়সেও তাঁর অফুরান প্রাণ শক্তির উৎস কী তা জানতে চাওয়া হলে ঠোঁট কাটা এই গায়ক জানিয়েছেন, কা’ম, মুক্ত কা’ম তাঁর অফুরান প্রাণশক্তির উৎস। তিনি বলেছেন, বয়স বাড়লেও রাতে ভালো করে ঘুম না এলেও এই বয়সেও বিছানায় কিন্তু দারুণ সক্ষম তিনি। তাঁর কথায় প্রেম করতে হবে শ’রীর দিয়ে। আর সেই প্রেমে থাকবে ভালবাসা ও সম্মান। যথারীতি তাঁর এই বক্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
কিন্তু যে মানুষের চেতনায় বর্তমান লালন, রামপ্রসাদ, জয়দেব তাঁকে আটকেয় কে? তর্ক-বিতর্ক সবের মাঝে আজও বাংলার শিল্প জগতের উজ্জ্বল ধ্রুবতারা তিনি। ধ্রুবতারা যে রকম সবার থেকে আলাদা হয়েও একাই প্রজ্জ্বল কবীর সুমনও নিজ শিল্প গুনে সবার থেকে আলাদা।






‘পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চালিয়েই যাচ্ছিল, অবসাদ থাকলেই যা খুশি করা যায় না!’ ‘মান’সিকভাবে অ’সুস্থ হলেও সীমা মানতে হয়, লেবুটা এমন কচলাবেন না যাতে তেতো হয়ে যায়!’– ঋজুকে নিয়ে মানসীর স্মৃতিচারণে সামনে এলো নতুন বিতর্ক, বিভিন্ন ম্যাসেজ করে উত্তপ্ত করেছেন অভিনেত্রীর বোনকে!