বাংলা টেলিভিশন এখন মুড়ি-মুড়কির মতো ধারাবাহিক আসছে আর যাচ্ছে। তবে আজ থেকে তিন-চার বছর আগে এমনটা একেবারেই হত না। এক একটি ধারাবাহিক এলে দু’তিন বছরের আগে তা টেলিভিশনের পর্দা থেকে সরে যেত না। কোন কোন ধারাবাহিক তো আবার ৫-৬ বছর পর্যন্ত চলত। তবে বর্তমান কালে সেই মেয়াদ কমে দাঁড়িয়েছে ৫-৬ মাস।
আর সেই রকমই একটি দীর্ঘমেয়াদী ধারাবাহিক ছিল ‘মা।’ বলা বাহুল্য, বাংলা ধারাবাহিকের দুনিয়ায় এমন কিছু কিছু ধারাবাহিক রয়েছে যা চিরকালীন হয়ে রয়েছে। আর বাঙালি টেলিভিশন প্রেমীদের মনে জনপ্রিয় সেই ধারাবাহিক গুলির কদর, গুরুত্ব, ভালোবাসা, আবেগ আলাদাই। বাংলা সিরিয়াল প্রেমী বাঙালির নিশ্চয়ই মা ধারাবাহিকটি মনে আছে? নিজের মেয়েকে মেলায় হারিয়ে তাঁকে খুঁজে পাওয়ার এক অদম্য লড়াই লড়া মায়ের কাহিনী বারবার চোখে জল এনে দিয়েছিল বাঙালি দর্শকদের। মা ও মেয়ের এই হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার গল্প মন ছুঁয়ে গিয়েছিল বাঙালি দর্শকদের।
উল্লেখ্য, বাংলা সিরিয়াল দুনিয়ায় ইতিহাসের সৃষ্টি করেছিল এই ধারাবাহিকটি। মায়ের সঙ্গে মেলায় মেয়েকে হারিয়ে ফেলার গল্পকে ঘিরে এগিয়ে চলে এই সিরিয়াল। এই ধারাবাহিকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী মহুয়া হালদার ও মেয়ের চরিত্রে নজরকাড়া অভিনয় করেছিলেন তিথি বসু। আর বড় ঝিলিকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী শ্রীতমা ভট্টাচার্য। ছোট ফুলকির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ভাবনা ব্যানার্জী আর বড় ফুলকির চরিত্রে নজর কেড়েছিলেন অভিনেত্রী অস্মিতা চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, শেষের দিকে গল্পে জট পাকলেও টিআরপি রেটিংয়ে নিজের স্থান ধরে রেখেছিল এই ধারাবাহিক। টেলিভিশনের পর্দায় চলা সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ব্যাপী ধারাবাহিকের তকমা পেয়েছে এই ধারাবাহিকটিই। ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিক শেষ হয় ২০১৪ সালে। স্টার জলসার পর্দায় শুরু হওয়া এই ধারাবাহিকের পর্ব সংখ্যা পেরিয়েছিল ১৫০৮। বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে এত দীর্ঘ মেয়াদী আর কোনও ধারাবাহিকই নেই।
আজও এই ধারাবাহিকের কথা বললে নস্টালজিক হয়ে পড়েন দর্শকরা। আর সেই নস্টালজিয়া উস্কে আবারো পর্দায় ফিরেছে ধারাবাহিক ‘মা।’ জানা গেছে দর্শকদের কথা মাথায় রেখেই এই ধারাবাহিককে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার থেকে আপনারা আবার নিয়মিত এই জনপ্রিয় ‘মা’ ধারাবাহিকটি দেখতে পারে স্টার জলসার অফিশিয়াল ইউটিউবের পেজে গিয়ে। এই অফিশিয়াল পেজে প্রতিদিন টেলিকাস্ট করা হবে একসময়ের এই জনপ্রিয়তম ধারাবাহিকটি।