২০১৪ সালে যখন ছেলেকে হারিয়ে ছিলেন তখন ছেলের বয়স ২৮ বছর। টালিগঞ্জের বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়েছিল তাঁর ছেলে। এরপর কতগুলো বছর পেরিয়ে গেল, ফিরে আসেনি ছেলে। ছেলেকে খুঁজতে কম জায়গা ঘোরেননি মা গীতা ভট্টাচার্য (৬৪)। অবশেষে সিলিকনের মূর্তির মাধ্যমে ছেলেকে ফিরে পেতে চান অসহায় মা। তাই বাড়িতেই বসালেন ছেলের সিলিকনের মূর্তি। যে ঘরে ছেলের মূর্তি বসেছে, সেই ঘরটা বড্ড প্রিয় ছিল ছেলের।
২০১৪ সালের ৮ই আগস্ট ভোরবেলা দুধ আনতে গিয়েছিল ছেলে। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি সে। জেলে, হাসপাতালে, মর্গে সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি ছেলের। বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেওয়া, মাইকে ঘোষণা করা কিছুই করতে বাকি রাখেননি বছর ৬৪-এর গীতা দেবী।
বছর চারেক আগে একটি মিসকলের সূত্র ধরে আগরতলায়ও ছেলের সন্ধানে গিয়েছিলেন মা। ভেবেছিলেন হয়ত ছেলেই ফোন করেছিল। কিন্তু সেখানেও দেখা মেলেনি। নিরাশ হয়ে ফিরে এসেছিলেন গীতা ভট্টাচার্য। হারানো ছেলেকে খুঁজে পেতে জীবনের শেষ সঞ্চয়ের উচ্ছিষ্ট টুকুও বিলিয়ে দিয়েছেন।
ছেলের এই সিলিকনের মূর্তিকে পরিয়েছেন স্ট্রাইপ দেওয়া জামা, হালকা নীল রঙের প্যান্ট। এই পোশাকে ঠিক যেন সত্য়িকারের তাঁর ছেলে। নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন আগেই এই জামা প্যান্টগুলি বানাতে দিয়েছিল অভিষেক। সেই পোশাকই পরানো হয়েছে মূর্তিটিকে। মূর্তির হাতে হাতঘড়ি ও পায়ে কালো জুতোও পরানো হয়েছে।
ইতিপূর্বে, গীতা ভট্টাচার্য শ্রমদফতরে চাকরি করতেন। ৩২ বছর বয়সে স্বামীর মৃত্যুর পরে চাকরিটা পেয়েছিলেন তিনি। ছেলেকে ঘিরেই ছিল তাঁর সব স্বপ্ন। কিন্তু কোথায় যেন হারিয়ে গেল সে। বিরাটির স্টুডিওতে তৈরি হয়েছে ছেলের মূর্তি। এখন সিলিকনের মূর্তিতেই হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজে পেয়েছেন পুত্রহারা মা।