বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উজ্জ্বল নক্ষত্র প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) ওরফে বুম্বাদা। বছরের পর বছর ধরে বড় পর্দায় কার্যত রাজ করে গিয়েছেন তিনি। নানা চরিত্র, নানান ভূমিকায় তিনি সাবলীল। আজও পরপর হিট সিনেমা তিনি উপহার দিচ্ছেন দর্শকদের। বর্তমানে খ্যাতির শীর্ষে থাকলেও একসময় অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন বুম্বাদা ও তাঁর পরিবার। পরিবারের অর্থকষ্টে পেট চালানো কঠিন হয়ে ওঠে। সে সময় রাস্তায় চা বিক্রি করে দুবেলার অন্ন সংস্থান হতো তাঁদের।
একসময় শাশ্বত চ্যাটার্জির নামকরা টক শো ‘অপুর সংসারে’ এসে সেই কঠিন দিনগুলির কথা সবার সামনে তুলে ধরেছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বোন পল্লবী চট্টোপাধ্যায়। তিনি ও তাঁর দাদা একসময় কত কষ্ট করে টাকা রোজগার করেছেন, সেই অজানা কথাগুলি সর্বসমক্ষে জানান তিনি। বলতে বলতে চোখ ভিজে আসে পল্লবীর। যদিও এই কঠিন দিনগুলি যে তাঁদের সমাজ চিনিয়েছিল, তাও মনে মনে স্বীকার করেন পল্লবী।
পল্লবী জানান, সে সময় পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, তাঁর বাবা, মা চেয়েছিলেন মেয়ে ভালোভাবে মানুষ হোক। আর সে কারণেই মাত্র তেরো বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় পল্লবীর। মায়ের আপন মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। মাত্র পনেরো-ষোলো বয়সে পল্লবী মা হন। যদিও বিয়ের পর পড়াশোনা ছাড়েননি, শ্বশুরবাড়ি থেকেই নিয়মিত স্কুলে যেতেন বলে জানান তিনি।
পল্লবী আরও জানান একসময় তিনি ও তাঁর দাদা প্রসেনজিৎ পথে চা বিক্রি করেছিলেন। পল্লবী চা বানাতেন আর সেই চা বিক্রি করতেন প্রসেনজিৎ।
পল্লবী বলেন, চা বিক্রির পর যে টাকাটা এসেছিল, সেটাই সে সময় বিরাট পাওনা ছিল। রোজগারের সমস্ত টাকাটাই মায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা। শুধু তাই নয় চা বিক্রি ছাড়াও রোজগারের জন্য এক সময় ট্যাক্সিও চালিয়েছেন পল্লবী। আজও সেই সব দিনের স্মৃতি ভাসে তার দুচোখের পাতায়।
পল্লবী বলেন, সে সময় প্রথম কলকাতায় এসেছেন তিনি। হাতে কাজ নেই। কীভাবে রোজগার করবেন ভাবছেন সে সময় মাথায় এল তিনি ট্যাক্সি চালাতে পারেন। আর সেটি ভেবেই রোজগারের তাগিদে তিনি ট্যাক্সি চালানোর হাল ধরেন। আজ দুই ভাই বোনই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। কিন্তু তাও তাঁদের অতীত তাঁরা ভোলেননি। আজও সে সব দিন রয়ে গিয়েছে তাঁদের সঙ্গেই।