‘অন্যকে বৈভব দেখিও না, দৈন্যের পাশে দাঁড়াও!’ অভিনয় থেকে দূরে থেকে ছেলেকে জীবনের পাঠ পড়াচ্ছেন বুলবুলি পাঁজা! জানলে কুর্নিশ জানাবেন আপনিও

টেলিভিশনের (Television) পরিচিত মুখ বুলবুলি চৌবে পাঁজা (Bulbuli Choubay Panja)। দুরদর্শন (Doordarshan) থেকে যাত্রা শুরু। তারপর অভিনয় জগতে কাটিয়ে ফেলেছেন অনেকগুলি বছর। এখন বাংলা ধারাবাহিকগুলিতে (Bengali Serial) দেখা মেলে তাঁর। কেরিয়ারের মধ্য গগনে এসে ছেলের জন্য ছেড়ে ছিলেন অভিনয়। তারপর বছর নয়কের লম্বা গ্যাপ। ফের প্রত্যাবর্তন। বহুদিন বাদে আবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন অভিনেত্রী।

মানুষের জীবনে কিছু ঘটনা গালে কষিয়ে থাপ্পড় মারার সমান। যে থাপ্পড়ের দাগ গালে না থাকলেও থেকে যায় মনে। এমনই বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বদলে দেয় মানুষের জীবন দর্শন। অভিনেত্রী বুলবুলি চৌবে পাঁজার জীবনেও রয়েছে এমন এক মর্মান্তিক ঘটনা। ছেলের মুখেভাতের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করেছিলেন এক বয়স্ক ভদ্রলোককে। কথা দিয়েছিলেন অনুষ্ঠানের দিন নিজে গাড়ি করে নিয়ে যাবেন। তবে দিনের দিন নানান ব্যস্ততার মাঝে ভুলে যান ‘তাঁকে’ আনার কথা। তারপর বেমালুম মাথা থেকে বেড়িয়েও যায় বিষয়টা।

Bulbuli Choubay Panja

তারপর একদিন বিদেশ থেকে সেই মানুষটির মেয়ে ফোন করে বলেন তাঁর বাবা আর নেই। ছেলে মুখেভাতে যা যেতে পেরে খানিক কষ্টই পেয়েছিলেন ভদ্রলোক। খামে অভিনেত্রীর ছেলের জন্য গুঁজে রেখেছিলেন দুশো টাকা। এই ঘটনা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় অভিনেত্রীর। তারপর থেকে কাউকে কথা দিয়ে কথা রাখেননি এমনটা হয়নি কোনোদিন। তাঁর কথায়, “আমি যদি কাউকে বলি একদিন বসবো, তাহলেও আমি তাঁর সঙ্গে বসি। তুমি জানো না সে হয়তো আশা করে আছে। তোমরা বসলে সে কতগুলো মনের কথা বলবে। হালকা হবে। তুমি জানো না মানুষ তোমার কথায় কতটা আশান্বিত হতে পারে। তাকে আশা হত করো না।”

অভিনেত্রীর আরেকটি গুণ হল কাজের প্রতি সব সময় ডেডিকেট থাকেন তিনি। যখন সিনেমা, ধারাবাহিকে কাজ করতেন তখন শুধু সেইটাই করতেন। তারপর যখন ছেলে হয়, সংসার করার প্রসঙ্গ ওঠে তখন মধ্য গগনে সূর্যের মতো উঠতি কেরিয়ারকে মাঝ পথে ছেড়ে দিতে দু’বার ভাবেননি। বলেছেন,”আমি যে কাজটা করি খুব কর্তব্য পরায়ণ হয়ে করার চেষ্টা করি। আমি যখন জানি দুটো জিনিস একসঙ্গে সামলানো সম্ভব নয়, তখন একটা ছেড়ে দিই। আমার কাছে সন্তানের আগে কিছুই নেই।”

Bulbuli Choubay Panja

আরও পড়ুনঃ বড় খবর! জলসায় এবার নায়ক বদল! অনুরাগের ছোঁয়া থেকে বাদ পড়ল সূর্য ওরফে দিব্যজ্যোতি! কেন ধারাবাহিক ছাড়ছেন অভিনেতা?

এই সন্তানকেই মানুষের জন্য সংবেদনশীল হওয়ার শিক্ষা দেন অভিনেত্রী। কারণ তাঁর বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি গ্রামে। গ্রামের মানুষের দৈন্য চোখে পড়েছে তাঁর। আমরা বৈভব প্রকাশের এক চিলতে সুযোগ ছাড়ি না। আর প্রত্যন্ত এলাকায় এমন অনেক মানুষ আছেন যারা রোজের খাবারটা পর্যন্ত জোগাড় করতে পারেন না। তাই ছেলেকে বলেন, “এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াও। খুব বড় কিছু না হলেও, ছোট্ট ছোট্ট কন্ট্রিবিউশন সমাজ বদলে দিতে পারে। পৃথিবীটা আরও সুন্দর করে দিতে পারে।”