‘মেয়ে বলে সে মদ খেতে পারবে না? মেয়েদের মদ খাওয়ায় ফতোয়া জারি করে নারী সুরক্ষা হয় না!’ মমতা শঙ্কর

আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ( RG Kar Doctor’s Death ) দিকে দিকে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ছড়াছড়ি। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে পথে নেমেছেন আমজনতা থেকে তারকারা। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে একজোট সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। রাজ্যের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নারী স্বাধীনতা ও ঊর্ধ্বমুখী লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।

টালমাটাল এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক তথা প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের করা মন্তব্যে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। তাঁর দাবি, ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে গিয়ে গভীর রাতে মদের দোকানে যাচ্ছেন মহিলারা। প্রকাশ্যে মদ কিনে খাচ্ছেন। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা করে সতর্ক হতে হচ্ছে প্রশাসনকে।

মহিলাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষী মন্তব্য পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন দেবনাথের

ওই মন্ত্রীর আরও দাবি, ”আমার এলাকায় দেখেছি, একটি দোকানে রাতে মেয়েরা মদ কেনেন। খবরটা পাওয়ার পর আমি দু’দিন পর পর সেখানে রাতে গিয়েছি। কোন মেয়েরা হোটেলে মদ খেতে যায়, সেটাও দেখতে গিয়েছি। আমি হোটেলওয়ালাকে বলে এসেছি, এখন থেকে আর কোনও মহিলাকে সেখানে মদ খেতে দেওয়া যাওয়া যাবে না”।

তৃণমূল মন্ত্রী চাঁচাছোলা ভাষায় তিরস্কার করলেন মমতা শঙ্কর

তৃণমূল মন্ত্রীর মন্তব্যে চাঁচাছোলা ভাষায় তিরস্কার করেছেন মমতা শঙ্কর ( Mamata Shankar )। প্রথমেই তিনি স্বপন দেবনাথকে প্রশ্ন করেছেন, ‘এই ভাবে কি মেয়েদের মদ্যপান আটকানো যাবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা নিষেধাজ্ঞা জারি করি, তখন সেই কাজ লুকিয়ে করার প্রবণতা বাড়ে। আজকে যে সব মেয়েরা দোকানে গিয়ে মদ কিনছেন, তাঁরা কি নিষেধাজ্ঞা জারি হলে মদ্যপান বন্ধ করবেন? বরং, এমন কিছু হলে তাঁরা লুকিয়ে মদ্যপান করবেন। নিজে না কিনতে পারলে অন্যকে দিয়ে কিনিয়ে আনবেন। বিষয়টা খানিকটা ‘বজ্র আঁটুনি ফোসকা গেড়ো’র মতো।’

মমতা শঙ্করের দ্বিতীয় প্রশ্ন, ‘নারী সুরক্ষায় দারুণ কোনও উন্নতি ঘটানো সম্ভব?’ ব্যাখ্যায় বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বলেন, ‘এসব ফতোয়া এক সময় জারি করা হয়েছিল ইসলামিক দেশগুলিতে। সেখানেও কি মদ্যপান বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে! তা হলে আমাদের মতো দেশেই বা কী করে সম্ভব?’

আরও পড়ুন: কেকে কাণ্ডের পরও লজ্জা নেই! কুণালের হয়ে গান বাঁধতেই নেটনাগরিকদের রোষের মুখে পড়ে বিপাকে রূপঙ্কর

মমতা শঙ্করের আরও সংযোজন, মদ্যপান মানেই স্বাধীনতা নয়। আর প্রকাশ্যে মদ্যপান কুরুচিকর এবং অন্যায়। তবে মদ্যপানের নিষেধাজ্ঞা শুধু মেয়েদের জন্যই কেন প্রশ্ন তাঁর। অভিনেত্রীর কথায়, ‘শালীনতার সংজ্ঞা যেমন নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এক, স্বাধীনতারও। কোনও মহিলা ব্যক্তিগত পরিসরে কী করছেন, তার উপর নজরদারি করা আমাদের কারও কাজ নয়। তবে সকলকেই মনে রাখতে হবে, আমারও স্বাধীনতা যেন অন্যের বিরক্তির কারণ না হয়ে ওঠে।’