বর্ষায় টিনের চালের চারপাশে বালতি পেতে রাখতে হত, অল্প বয়সে বাবা মা’রা গেছেন, কঠিন লড়াই করেছেন মা, পর্দার পরিনীতার জীবনের গল্প চোখ ভেজাবে আপনারও

বাঙালির বোরিং সন্ধ্যেগুলো রাঙিয়ে দেয় কারা? এক কথায় অবশ্যই উত্তর হবে বাংলা ধারাবাহিকগুলো (Bengali Serial ) আর কারা? বলাই বাহুল্য উত্তরটা একেবারেই যথার্থ। এই মুহূর্তে বাঙালির বিনোদনের সবথেকে বড় মাধ্যম অবশ্যই বাংলা ধারাবাহিকগুলি। ‌দীর্ঘদিন ধরেই বাঙালি দর্শকদের একাকীত্ব কাটানোর সঙ্গী হয়ে উঠেছে এই বাংলা ধারাবাহিকগুলি। আর যারা একাকীত্ব কাটায় তারা তো অবশ্যই খুব কাছের মানুষ হয়ে ওঠে তাই নয় কি! আর সেই কারণেই বেশিরভাগ বাংলা ধারাবাহিক এবং তাদের চরিত্ররা বাঙালি দর্শকদের ভীষণ কাছের।

এখন আগের থেকে বাংলা ধারাবাহিকের সংখ্যাও যেমন বেড়েছে তেমন‌ই বেড়েছে প্রতিযোগিতা, চ্যালেঞ্জ। আর নতুন নতুন ধারাবাহিকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সংখ্যা বেড়েছে নায়ক নায়িকাদের। তবে শুধু তাই নয় নতুনদের পাশাপাশি সমাদৃত হচ্ছেন পুরনোরাও। তাদের কদরও কিন্তু কমে যায়নি নতুন ধারাবাহিকে ফিরছেন পুরনো অভিনেতা অভিনেত্রীরাও। এমনকি একটা সময় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও পাচ্ছেন মূল চরিত্র। আর সেই রকমই একজন অভিনেতা হলেন অভিনেতা উদয় প্রতাপ সিং।

মিঠাই, নিম ফুলের মধু একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন এই অভিনেতা। যদিও সবই ছিল পার্শ্ব চরিত্র। কিন্তু সম্প্রতি জি বাংলার পর্দায় পরিনীতা ধারাবাহিকের মধ্যে নিয়ে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয়েছে এই অভিনেতার।‌‌ আর এই ধারাবাহিকেই তার বিপরীতে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী ঈশানী চ্যাটার্জী। মিষ্টি চেহারার এই অভিনেত্রী প্রথম দর্শনেই মন জিতেছেন বাঙালি দর্শকদের। ইতিমধ্যে ভালো রেজাল্ট করতেও শুরু করেছে পরিনীতা।

পর্দার পারুলকেও যেরকম নিজের পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে সেই রকমই বাস্তবের ঈশানীকেও কিন্তু নিজের প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে আজ নিজের জায়গায় পৌঁছাতে হয়েছে। দারুণ অর্থ কষ্ট, বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে আজ বাংলা টেলিভিশনের সফল অভিনেত্রী তিনি। একটি ছোট্ট এক কামরার ঘরে তিনজন মিলে থাকতেন তারা। বাবা ইলেকট্রিকের কাজ করতেন। মা সেলাইয়ের কাজ। এখনও দুর্গাপুরে তিনি সেই কাজই করেন। সেই অর্থেই ঘর করেছেন, বড় করেছেন মেয়েকে।

আরও পড়ুন: মিথ্যের খেলা ফাঁস করলো রাঙামতি, তীরন্দাজিতে রাঙার স্বপ্ন পূরণের চ্যালেঞ্জ! এপিসোড মিস করবেন

কিন্তু একসঙ্গে দেখার সব স্বপ্ন পূরণের আগেই মারা গেছেন ঈশানের বাবা। অভিনেত্রীর কথায়, তার বাবা-মা কোন‌ওদিন তাকে অভাব বুঝতে দেননি। ভালো স্কুল, ভালো কলেজে পড়িয়েছেন। অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, এমন একটা সময় গেছে যখন বর্ষাকাল এলেই তাদের আতঙ্কে থাকতে হত, টিনের চাল দিয়ে জল পরে চারিদিক না ভেসে যায়। এই জন্য টিনের ঘরের জন্য চারিদিকে বালতি পেতে রাখতে হত। তবে আজকের সমস্ত কষ্ট সার্থক। সফল অভিনেত্রী হতে পেরেছেন তিনি। তবে আক্ষেপ একটাই বাবা দেখে যেতে পারলেন না।