টলিউডের (Tollywood) বিতর্ক থামার নাম নেই। যখনই নতুন ছবি মুক্তি পায়, তখনই উঠে আসে নতুন বিতর্ক। সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। বিষয়বস্তু একটি চরিত্র নির্বাচন নিয়ে। বিতর্কের সূত্রপাত রুক্মিণীর সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে, যা নিয়ে এখন সরগরম বিনোদন মহল।
বিগত কয়েক বছরে টলিউডে নারীকেন্দ্রিক ছবির গুরুত্ব বেড়েছে। অভিনেত্রীরা চরিত্র নির্বাচনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং নিজেদের অবস্থানও স্পষ্ট করছেন। সেই ধারাতেই নতুন সংযোজন ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পরেই রুক্মিণী মৈত্রর একটি মন্তব্য সামনে আসে, যেখানে তিনি জানান, পরিচালকের ইচ্ছার পরেও তিনি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে কাজ করেননি। এই বক্তব্যের পরেই নতুন করে আলোড়ন শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি এক প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যেখানে রুক্মিণীকে বলতে শোনা যায়, ‘সৃজিত আমাকেও এই ছবিটা অফার করেছিলেন কয়েক মাস আগে। তারপর কী হল, জানি না। আমি যতদূর জানি, এটা গৌরাঙ্গকে নিয়ে ছবি, যেখানে এই অংশটা মাত্র এক টুকরো। তবে এই যে পুরো বিষয়টা ঘটেছে, এতে আমি গর্বিত। যদিও রাম কমল এই ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগত, তবু গত পাঁচ বছর ধরে যেভাবে উনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেটার জন্য কুর্নিশ জানাই। তিনি বলেছিলেন যে নারীকেন্দ্রিক ছবি বানালে এই বাজেটেই বানাবেন এবং আমার সঙ্গেই বানাবেন। ওনার যে সাহস, তা দেখে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। এটা তো বিনোদিনীর প্রাপ্য।’
এই মন্তব্যের পরেই চুপ থাকেননি সৃজিত। তিনি স্পষ্ট করেছেন, ‘রুক্মিণী মৈত্রকে যে চরিত্র অফার করা হয়েছিল, তা হল রাই-এর চরিত্র। তিনি একজন পরিচালক, যিনি চৈতন্য মহাপ্রভুকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন। বিনোদিনীর চরিত্রের জন্য শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়কে ২০২০ সালেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। ছবির চিত্রনাট্য লেখা হয় ২০১৯ সালে। তাই এটা কোনও বিশেষ পরিচালকের দ্বারা অনুপ্রাণিত নয়। বরং, চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুনঃ গৃহপ্রবেশ ধারাবাহিকে নয়া মোড়! শেষমেষ শুভর পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইল জিনিয়া! আসছে তুলকালাম করা পর্ব
সৃজিতের বক্তব্য যেন রুক্মিণীর কথার প্রত্যুত্তর। কারণ, রুক্মিণী তাঁর ভাইরাল সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমার একটাই আফসোস, ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে কাজ করা হয়ে ওঠেনি। রাজ দা (রাজ চক্রবর্তী) আমায় বলেছিলেন, তোর মতো অভিনেত্রীর ঋতু দার হাতে পড়া উচিত ছিল। আমি যখন রামের সঙ্গে কাজ করি, আমাদের ভিশন মিলে যায়। আমি সবাইকে সম্মান জানিয়েই ছোট মুখে বড় কথা বলছি, বনশালি আর আমাদের বাংলার ঋতু দা যদি একসঙ্গে কাজ করতেন, তবে সেটা হত রাম কমল।’
এই বিতর্ক আরও জোরালো হয়েছে, কারণ রুক্মিণীর মন্তব্যে রাম কমল মুখোপাধ্যায়ের প্রশংসা থাকলেও, তিনি সৃজিতের সম্পর্কে কিছুটা কটাক্ষ করেছেন বলেই মনে করছেন অনেকে। অন্যদিকে, সৃজিতের বক্তব্য তাঁর নিজের সিনেমার মৌলিকতা এবং নিজের পরিচালনার দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতা তুলে ধরেছে। ফলে, টলিউডের দুই গুরুত্বপূর্ণ পরিচালকের মধ্যে এই মতপার্থক্য বিনোদন প্রেমীদের মধ্যে কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামী দিনে এই বিতর্ক নতুন মোড় নেবে কিনা, সেটাই এখন দেখার।