“কাজ থাকলেই সম্পর্ক, কাজ ফুরোলেই কেউ চেনে না” অকপট অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় !

একটা সময় ছিল যখন জন্মদিন মানেই ফোন বেজে চলত, কাজের ব্যস্ততায়ও বন্ধু-পরিচিতরা শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি। কিন্তু এখন? বর্ষীয়ান অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে জন্মদিন আর বছরের অন্য দিনের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। ফোন বাজে না, কেউ খোঁজও নেন না। শুধুই স্ত্রীর হাতের পাঁঠার মাংস, পায়েস আর ডিমের ডেভিল—এই সামান্য আয়োজনেই কেটে যায় দিনটা। কখনও কখনও এক-আধজন বন্ধু আসেন, তাও বিরল।

দু’বছর আগেও এক নামজাদা পরিচালকের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করেছিলেন বিপ্লববাবু। শ্যুটিং চলাকালীন প্রায় প্রতিদিন কথা, প্রশংসা, আড্ডা—সবই ছিল। কিন্তু কাজ শেষ হতেই যেন ঘড়ির কাঁটার মতো বন্ধ হয়ে গেল যোগাযোগ। এখন ফোন করলেও সাড়া মেলে না। তাঁর কণ্ঠে হতাশার ছায়া—“আমার ফোন তো কেউ ধরে না। এখন বুঝে গিয়েছি, কাজ থাকলেই সম্পর্ক, কাজ ফুরোলেই আর কেউ চেনে না।”

এই বদলে যাওয়া ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একসময় সত্যজিৎ রায়ের মতো ব্যক্তিত্বদের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি। বিপ্লববাবু আজও অবাক হয়ে বলেন, “স্বয়ং সত্যজিৎ রায় শেষ দিন পর্যন্ত নিজে ফোন ধরতেন। কী ভদ্র, কতটুকু বিনয়ী ছিলেন!” সেই তুলনায় আজ সকলে ‘মুরুব্বি’ হলেও সৌজন্য বা মানবিকতা যেন নেই বললেই চলে।

অনেকদিন অভিনয়ের বাইরে থাকলেও, ঘরে বসেই টলিউডের হালচাল নজরে রাখেন তিনি। বলেন, “সবাই শুধু টাকায় ডুবে। রাজনীতি, দলাদলি চলছে। কাজের মান কোথায় নেমেছে!” সঙ্গে এক ধরনের সন্দেহও ঘুরে বেড়ায় তাঁর মনে—”আমার অভিজ্ঞ চোখ হয়তো অনেক কিছু দেখে ফেলবে বলেই কেউ ডাকে না!” অথচ এত বছরের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এখনও তাঁকে অপ্রয়োজনীয় করে রেখেছে ইন্ডাস্ট্রি।

আরও পড়ুনঃ বিয়ের প্রমাণ নিয়ে হাজির সোহিনী! ডিভোর্স দিয়ে এবার চন্দ্রকে বিদায় করবে কমলিনী! ভালোবাসার নামে প্রতারণা, সন্তান নিয়েও করেছিল নাটক! চরম অপমানের মুখে বাড়ি ছাড়তে চায় কমলিনী! কমলিনীকে আটকাতে মরিয়া মিটিল-মিঠি!

তবুও, চূড়ান্ত একাকীত্বের মধ্যেও তিনি মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারাননি। বলেন, “সবাই খারাপ নয়। প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু ভাল গুণ থাকে। শুধু দোষ ধরলে চলবে না, সেই ভাল দিকগুলোও তুলে আনা উচিত। তাহলেই সমাজে সাম্য ফিরবে।” কথাগুলো যেন শুধু টলিউড নয়, গোটা সমাজের জন্য এক নীরব শিক্ষা। বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের অভিমান নয়, বরং অভিজ্ঞতায় মোড়া এক আশার আলো।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।