“কাশ্মীরের মুসলিমরা হিন্দুবিদ্বেষী নয়।” হিন্দু পর্যটকদের হ’ত্যাকাণ্ডের মাঝেও কাশ্মীরি মুসলিমদের পক্ষে ভাস্বর চ্যাটার্জী! ‘ওই জায়গায় আপনি থাকলে ভালো হতো’, ‘হিন্দুবিদ্বেষী’ ভাস্বরকে কদর্য আক্রমণ নেট পাড়ার!

সাম্প্রতিক কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের হ’ত্যার ঘটনার (Kashmir, Pahalgam Bloodshed) রেশ কাটতে না কাটতেই টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ‘ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়’ (Bhaswar Chatterjee) এর একটি মন্তব্য ঘিরে নেটপড়াতে শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক! অভিনেতা তাঁর বক্তব্যে দাবি করেন, কাশ্মীরিরা মোটেই হিন্দুবিদ্বেষী নন, বরং তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় তাঁরা অত্যন্ত অতিথিবৎসল এবং মানবিক। কাশ্মীর ঘুরতে গিয়ে ক্ষীরভবানী মন্দির বা শঙ্করাচার্যের মন্দিরে কাশ্মীরি মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে পুজো দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তাঁর মতে, এটিও একটি বিচ্ছিন্ন জঙ্গি হামলার ঘটনা। যা দিয়ে আবারো গোটা কাশ্মীরি জনগোষ্ঠীকে ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁর এই বক্তব্যই যেন এবার অগ্নিতে ঘি ঢালল। এই বক্তব্য নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই নেটিজেনদের একাংশ ভাস্বরকে কার্যত কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। অনেকেই বলছেন, এই ধরনের মনোভাব’ই আজ হিন্দুদের দুর্দশার মূল কারণ। কেউ কটাক্ষ করে লিখেছেন, “কিকোরে বলি মশারা ম্যালেরিয়া ছড়ায়, ওরাতো রোজ আমাকে গান শুনিয়ে যায়।” কেউ আবার সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, “দাদা, আজ অন্তত ন্যাকামোটা বাদ রাখুন। বিবেক আছে?”

এরকম ঘটনার পরও যদি কেউ কাশ্মীরিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে চায়, তাহলে তাঁকেও হিন্দুবিদ্বেষী বলেই মনে হয়, এমনও মন্তব্য উঠে এসেছে। ভাস্বর তাঁর বক্তব্যে আরো জানান, তিনি নিয়মিত কাশ্মীরি বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং তাঁদের কাছ থেকেই জানতে পেরেছেন শ্রীনগর কার্যত ‘শাট ডাউন’ হয়ে গিয়েছে। আগে যে জায়গায় হাজার টাকায় ঘর পাওয়া যেত, সেখানে পর্যটকেরা চার হাজার পর্যন্ত দিতে রাজি ছিলেন—এখন সেই ঘরগুলি খালি। আতঙ্কে পর্যটকেরা পালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, গত বছর বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে কাশ্মীর গিয়েছিলেন, তখন শহর জুড়ে ছিল শান্তি।

সাধারণ মানুষ তাঁকে না চিনেই, একজন পর্যটক হিসেবেই নিজেদের বাড়িতে খাওয়াতে ডেকেছেন। এই অভিজ্ঞতাই তাঁকে ভরসা দেয় যে কাশ্মীরিরা হিন্দুবিরোধী নয়। তবে বিতর্ক এখানেই থেমে থাকেনি। একাংশ মনে করছেন, এতবার কাশ্মীরে হিন্দুদের ওপর হামলা হয়েছে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারপরও এই সুরে কথা বলা মানেই নিজের শিকড়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। কেউ বলেছেন, “এত কন্ডরের পরেও যদি আপনি এই কথা বলেন, তবে আপনি নিজেই হিন্দুবিদ্বেষী মনে হচ্ছে এবার।”

আরও পড়ুনঃ ‘রিয়েলিটি শো একটা ব্যবসা, বেশিরভাগটাই স্ক্রিপ্টেড! ইন্ডিয়ান আইডলের অভিজ্ঞতা নিয়ে বি’স্ফো’রক মন্তব্য ময়ূরীর

তবে অভিনেতার বক্তব্যের শেষেও এক তীব্র আক্ষেপ ছিল। তিনি বলেন, এখনকার পরিস্থিতিতে তাঁরও ভয় করছে কাশ্মীর যেতে। দুর্গাপুজোর সময় ফের যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু এখন তা অনিশ্চিত। তাঁর আশঙ্কা, এই ধরণের ঘটনার সুযোগ নিয়েই কাশ্মীরি যুবকদের আবার ভুল পথে চালিত করা হতে পারে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। উগ্রপন্থীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করাই এখন একমাত্র পথ, এমনটাই মত ভাস্বরের।