“নিজের দেশের পরিস্থিতিতে মুখ খোলে না, অথচ যে দেশ ভারতকে নিত্য গালিগালাজ করছে সেই বাংলাদেশের ‘কাচ্চি’র প্রশংসায় পঞ্চমুখ রিয়াজ-অনিন্দ্য! সোশ্যাল মাধ্যমে কটাক্ষ নেটিজেনদের !

সম্প্রতি জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক “পরিণীতা” (Parineeta) -র অফস্ক্রীন মুহূর্তের একটি ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে নানান সমালোচনা। উল্লেখ্য প্রায়শই এই ধারাবাহিকের অভিনেতা অভিনেত্রীরা ক্যামেরা বন্ধ হতেই অফ স্ক্রিনের দুষ্টু মিষ্টি মুহূর্ত সমাজ মাধ্যমে তুলে ধরেন, এদিনও তার ব্যাতিক্রম হলো না। ধারাবাহিকের খলনায়ক তূর্য ওরফে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় (Anindya Chatterjee) ও সহ-অভিনেতা রিয়াজ লস্কর (Riaz Laskar) এর একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তারা দুজনেই বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁর বিরিয়ানি খাচ্ছেন এবং তার প্রশংসা করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দেশে যেখানে একদিকে মুসলিম আততায়ীদের দ্বারা হিন্দুদের চিহ্নিত করে নিধনের ঘটনা ঘটে, অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের শীতলতার মধ্যেও এই ধরনের ভিডিওর মাধ্যমে বাংলাদেশি বিরিয়ানির প্রশংসা করার কি প্রয়োজন ছিল? এই ভিডিওটি প্রকাশের পরেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

একাংশ দর্শক তাদের প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কি আসলেই দেশের প্রতি আনুগত্যের চিহ্ন? এতসব রাজনৈতিক, সামাজিক উত্তেজনার মধ্যে, কীভাবে তাদের এমন একটি দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায়?” কিছু জনের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের দেশের প্রতি অবমাননা হিসেবে ধরা যেতে পারে। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো নয় এবং অনেক ভারতীয়দের সেখানে ঘৃণার চোখে দেখা হয়,

তখন এই ধরনের আচরণ অত্যন্ত বিতর্কিত মনে হচ্ছে। অনেকে আবার বলেছেন, “অভিনেতাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিতর্ক তো চলতেই থাকে, তবে দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে তাদের কেন কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায় না? অথচ যে দেশ ঘৃণার চোখে দেখে তাদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন!” এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই রিয়াজ ও অনিন্দ্যকে ট্রোল করতে শুরু করেছেন। তাদেরকে এক ধরনের ‘দ্বৈত মানসিকতা’ দেখানোর অভিযোগ তুলছেন।

যেখানে একদিকে তারা ভারতীয়, অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা প্রকাশ করছেন। এটা সত্যি যে, দুই বাংলার মধ্যে সম্পর্ক মিষ্টি হলেও, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মন্দা এবং সামাজিক বা ধর্মীয় কারণে অবনতি ঘটেছে। কিছু দর্শক এই নিয়েও আক্ষেপ করেছেন, “এতদিন ধরে দুই বাংলার মধ্যে মিষ্টি সম্পর্ক থাকার কথা ছিল, কিন্তু নোংরা রাজনীতির কারণে এই সম্পর্ক ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।”

আরও পড়ুনঃ অভিষেক-শার্লির জোড়ায় আইবুড়ো ভাত! একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে এবার অভিষেক! “এই সম্পর্ক কতদিন টিকবে সেটাই দেখার!” কটাক্ষ করছেন নেটিজেনরা!

অনেকের মতে আবার, নিজেদের দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের বদলে এই ধরনের দেশের বাইরে ভালোবাসা একেবারে অপ্রয়োজনীয়। সবশেষে, প্রশ্ন উঠছে, এই ধরনের ঘটনার পরেও যদি শিল্পীরা নিজেদের মান সম্মানের প্রতি যত্নশীল না হন এবং দর্শকদের অনুভূতিকে গুরুত্ব না দেন, তবে তাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে? রাজনৈতিক সংকট এবং সামাজিক সংবেদনশীলতা মাথায় রেখে এমন পদক্ষেপ নেয়ার সময় আসলে অনেকটা সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল বলে মনে হয়?