ইচ্ছাকৃতভাবে ওই বৃদ্ধকে পিষে মে’রে’ছেন পরিচালক ভিক্টো! অনিচ্ছাকৃত খু’নের মামলা খারিজ করে ইচ্ছাকৃত খুনের মামলা জারি পুলিশের!

গত মাসের ৬ এপ্রিল দিনটা নিঃসন্দেহেই টলিউড ইন্ডাস্ট্রির কাছে একটা লজ্জার দিন, আর ঠাকুরপুকুরের (Thakurpukur Accident) লোকেদের কাছে তো বিভীষিকাময় দিন সেটি। গত রাতে, ৫ এপ্রিল ‘সান বাংলা’ (Sun Bangla) টেলিভিশন চ্যানেলের একটি ধারাবাহিক ‘ভিডিও বৌমা’র (Video Bouma) ভালো টিআরপি উদযাপনের জন্য কিছু তারকা এবং পরিচালক ভিক্টো দাস (Victo Das) সহ চ্যানেলের কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসু (Shreya Basu) শহরের একটি বিলাবহুল ক্লাবে সারারাত পার্টি করে ফেরার পথে সকালে ঘটান এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গাড়িটি ঢুকে পড়ে ঠাকুরপুকুর বাজারের ফুটপাতে। সেখানে বাজার করতে আসা সকল মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়, ঠিক এমন সময় গাড়িটি চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বৃদ্ধ ব্যক্তির দিকে এগিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ সবাই হইচই শুরু করলেও গাড়িটি থামেনা বরং ৩০ মিটার ওই বৃদ্ধকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় ওই গাড়িটি। ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতে পুলিশ পৌঁছায় এবং মদ্যপ অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিচালক ও কার্যনির্বাহী প্রযোজককে।

অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় প্রাথমিকভাবে জেল হেফাজত হলেও, এবার লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। প্রথমত পরিচালক ভিক্টোর থেকে জানা যায় সেদিন তিনি ‘সবমেরিনো’ নামের একটি পানীয় সেবন করেছিলেন, যাতে মাত্রাতিরিক্ত নেশা হতে বেশিক্ষণ সময় লাগে না। তার ওপর ঘন্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিমি বেগে গাড়ির গতি তুলে বাড়ি ফিরছিলেন সেদিন। পুলিশকে ভিক্টো জানিয়েছেন, সেদিন নেশার ঘোড় এতটাই ছিল যে দিন আর রাতে পার্থক্য করতে পারছিলেন না।

তিনি বলেন অভ্যাসবশতই তাড়াহুড়ো করে বাজারের রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন কারণ প্রায় প্রতিদিন রাতেই তিনি ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরতেন। মদের নেশা এতটাই ছিল যে সেদিন দিনকে রাত মনে হওয়াতে ভেবেছিলেন বাজারের রাস্তা শুনশান থাকবে, তাই অত জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু এই বয়ান নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় গোয়েন্দা দপ্তরের হাতে তদন্তের ভার যায়। এক্ষেত্রে মামলায় গোয়েন্দা বিভাগ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দুটি বিষয় তদন্ত করেন, একটি ‘নলেজ’ আর অপরটি ‘ইনটেনশন’।

আরও পড়ুনঃ আক্ষেপের কিছু নেই মাত্র ছয় মাসেরই প্রজেক্ট ছিল দুই শালিক, উল্টে সময় বেড়েছে! স্পষ্ট কথা স্বর্ণেন্দুর! লম্বা রেসের ঘোড়া হবে ‘বুলেট সরোজিনী!’ ৫.৩০-এর স্লটে আসতেই ক্ষোভ দর্শকদের

প্রশ্ন ওঠে নে’শার ঘোরে থাকলেও মানুষের হইচইতেও গাড়ির কেন থামেনি? প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা গিয়েছে প্রথমে গাড়িটি একটি স্কুটিকে ধাক্কা মারে তৎক্ষণাৎ চিৎকার শুরু করে ঘটনাস্থলে পথচারীরা, তাও গাড়িটি না থামিয়ে বাজারে দোকানগুলিতে ধাক্কা মারতে মারতে গিয়ে ওই মৃ’ত ব্যক্তিকে চা’পা দিয়ে দেয়। এরপরেও থামেনি গাড়িটি বরং বেশ কিছুদূর ওই ভাবেই চাপা দিয়ে নিয়ে যান বৃদ্ধকে। সিসিটিভি ফুটেজো একই কথা বলছে, আর সমস্ত প্রমাণের ভিত্তিতে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা খারিজ করে পুলিশ নতুন করে খুনের মামলা জারি করেছে ভিক্টোর বিরুদ্ধে।