“আমি ধন্য! এই চরিত্র এর আগে কখনওই বাংলা টেলিভিশনে হয়নি!”— শ্রীময়ীর পর লীনা গাঙ্গুলীর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কমলিনী! অকপট অপরাজিতা!

ক্যামেরার সামনে আজ অভিনেত্রী ‘অপরাজিতা ঘোষ দাস’ (Aparajita Ghosh Das) এর উপস্থিতি যতই স্বতঃস্ফূর্ত মনে হোক না কেন, অভিনয় কিন্তু তাঁর কাছে ছিল জীবনের এক আকস্মিক মোড়। তাঁর ছাত্রজীবন, প্রাথমিক কেরিয়ার সবই ছিল কর্পোরেট ও সাংবাদিকতার দিকে। এক সময়ে মিডিয়া হাউসের কর্মী ছিলেন, যেখানে রিপোর্টিং আর স্ক্রিপ্টিং ছিল তাঁর রোজকার কাজ। অথচ, সেই কর্পোরেট ডেস্ক থেকে টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠতে খুব একটা সময় লাগেনি।

সালটা ২০০৫, ‘একদিন প্রতিদিন’ ধারাবাহিকে ‘ঋষি কৌশিকে’র (Rishi Kaushik) সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করে শুরু হয়ে অভিনয় যাত্রা এবং এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে ‘চিরসখা’য় (Chiroshakha) ধারাবাহিকে ‘কমলিনী’র (Kamalini) চরিত্রে অপরাজিতাকে দেখে অনেক দর্শকই আজ মুগ্ধ। কঠিন, আত্মবিশ্বাসী এবং সমাজের চোখে বিরুদ্ধ এক নারীর চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে যে রকম আবেগ, সংবেদনশীলতা আর অভ্যন্তরীণ শক্তি লাগে, তা যেন অপরাজিতা নিজের মধ্যে থেকেই তুলে আনেন।

এই চরিত্রটি নিয়ে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও এই চরিত্রে অভিনয় করে ধন্যই মনে করত।” এই চরিত্রের অফার প্রথম হাতে আসার মুহূর্তের কথাও আলাদা করে মনে রেখেছেন অভিনেত্রী। তাঁর বক্তব্যে ছিল আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি একরকম দারুণ কৃতজ্ঞতা, “কমলিনী এমন একটি চরিত্র, যা বাংলার টেলিভিশনে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। অফার পেয়ে আমি এক মুহূর্তও ভাবিনি, সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।”

একজন অভিনেত্রীর কাছে যখন চরিত্রটি শুধু স্ক্রিপ্ট নয়, বরং ভালোবাসা হয়ে দাঁড়ায়, তখন বোঝা যায় যে তিনি কতটা মানসিকভাবে পরিপক্ক। কমলিনীর জীবনের সঙ্গে নিজের বাস্তব জীবনের মিল কতটা? প্রশ্নে সোজাসাপটা জবাব দেন অপরাজিতা। তিনি বলেন, “হয়তো আমার ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে মিল খুব একটা নেই। কিন্তু আমাদের সমাজে এরকম বহু নারী আছেন, যাঁরা প্রতিদিন এই ধরনের প্রশ্ন, নিপীড়ন বা দ্বিধার শিকার হন।

আরও পড়ুনঃ “আমার বরকে নিয়ে কোনও শাশুড়ির ব্যস্ততা নেই আজকে। তাই আমিই বরের শাশুড়ি, আমিই ওর শ্বশুর”— মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, স্বামীর জন্য নিজে জামাইষষ্ঠীর আয়োজন করলেন অহনা! ‘নিজেই শাশুড়ি’ বলে মাকে করলেন কটাক্ষ!

আমি কৃতজ্ঞ, আমি তাঁদের প্রতিনিধি হয়ে পর্দায় কিছুটা আওয়াজ তুলতে পারছি।” এই কথার মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে তাঁর অভিনেত্রী হিসেবে সামাজিক দায়িত্ববোধ। অপরাজিতা ঘোষ দাস আজ শুধু একজন সফল অভিনেত্রী নন, তাঁর প্রতিটি চরিত্রের পেছনে থাকে গল্প, প্রতিবাদ আর আত্মবিশ্বাস। ‘চিরসখা’য় কমলিনীর মতো চরিত্র তাই কেবল গল্পের প্রয়োজনেই নয়, সমাজকে কিছু দেখানোর তাগিদেই তৈরি হয়। আর সেখানেই অপরাজিতা অনন্য।