“মা হতে গেলে ত্যাগ, কেরিয়ার বিসর্জন আর বড় মন দরকার, যেমনটা আমি করেছি!”— মাতৃত্বের নামেই আত্মপ্রচার, কর্মরত মায়েদের ছোট করলেন মধুবনী! ‘হাই গাইস বলে ন্যাকামিটা থেকে টাকা আসেনা?’ ‘বড় মন’ মধুবনীকে ধুয়ে দিল নেটপাড়া!

একসময় যাঁর নাম মুখে মুখে ফিরত বাংলা টেলিভিশনের দর্শকদের, আজকাল তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায় পর্দায়। বিয়ের পর ছেড়েছেন অভিনয়, এখন তাঁকে ইনস্টাগ্রামের রিল আর ফেসবুক পোস্ট বা ইউটিউবেই দেখা যায়। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে অভিনেত্রী ‘মধুবনী গোস্বামী’ (Madhubani Goswami) কে নিয়ে। সম্প্রতি ছেলের মুখেভাতের পুরনো একটি ছবি পোস্ট করে মধুবনী লিখেছেন, কীভাবে মা হওয়া মানে কেরিয়ার বিসর্জনের গল্প! আর এই ‘বিসর্জন’-এর গল্পেই শুরু হয়েছে আরও একবার সমালোচনার নতুন পর্ব। অনেকেরই প্রশ্ন, সত্যিই কি তিনি কেরিয়ার বিসর্জন দিয়েছেন, নাকি এক প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে আরেকটা প্ল্যাটফর্মে আরও বেশি আলোয় এসেছেন?

এদিন পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন,”মা হওয়া সহজ নয়, কারণ নিজের প্রমিসিং কেরিয়ারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, সন্তান এবং সংসারের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা মুখের কথা নয়…আমি এমন বহুজনকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি যারা আর্থিক সচ্ছলতায় থাকা সত্বেও করেনি। শুধু বরের পয়সা থাকলেই হয় না, সন্তান হওয়ার পর ছায়াসঙ্গীর মতো থাকাতে হয়। নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে বিসর্জন দিতে মন থাকা দরকার, যেটা সবার থাকে না।” এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক!

এক কথায় বলতে গেলে তিনি যেন এই কথায় ছোট করে দিয়েছেন সমস্ত ‘ওয়ার্কিং মাদার্স’দের! একজন মধুবনীকে পাল্টা যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, “আপনি তো স্যালুন ওনার, ইউটিউবেও ভ্লগ করছেন, ফেসবুকেও ইনফ্লুয়েন্সার। তাহলে ঠিক কোন কেরিয়ারটা আপনি বিসর্জন দিলেন? ফেম তো এখনো আছে, ইনকাম তো আগের থেকে বেশি!” সত্যি বলতে কি, অভিনয়কে পিছনে ফেলে মধুবনী এখন সমাজ মাধ্যমে ভীষণভাবে অ্যাক্টিভ। এমনকি কমেন্ট বক্সে নিজেই নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে বলেন!

একজন বলেছেন, “এটা কি কেরিয়ার বিসর্জন না নতুন কেরিয়ারের জমি তৈরি?” আরেকজন বক্তব্য আরও কড়া। তাঁর কথায়, “তুমি নিজের শর্তে চলছো, সেটাই তো চয়েস! তা হলে এত বড় মন, ত্যাগ, বিসর্জনের গল্প শোনানোর কী দরকার? একজন মা হিসেবে নিজের ভূমিকা পালন করাটাই স্বাভাবিক, এই ধারণাকে ভেঙে ফেলে তুমি যেন নিজেকেই কেন্দ্র করে এক ‘বিরল উদাহরণ’ গড়তে চাইছো, এটা নিতান্তই ‘নিজের প্রচার’।” হাজারো ওয়ার্কিং মাদার রোজের জীবন সংগ্রামের মাঝেও সামলাচ্ছেন সংসার, সন্তান আর কেরিয়ার।

সেখানে দাঁড়িয়ে মধুবনীর এই “বিসর্জনের গর্ব” অনেকের কাছেই অতিরিক্ত। বরং উলটে তাঁকেই প্রশ্ন করা হচ্ছে, “তোমার আর্নিং বন্ধ হয়নি, বরং সোর্স অফ ইনকাম বেড়েছে। তাহলে কিসের ত্যাগ?” একদিকে সমাজ মাধ্যমের খুঁটিনাটি আয় থেকে রোজগার, অন্যদিকে “নিজের ভবিষ্যত বিসর্জন” বলাটা নিছকই আত্মপ্রশংসা বলেই মনে করছেন অনেকে। শেষে একটাই কথা, মাতৃত্ব অবশ্যই শ্রদ্ধার বিষয়, সেটা অন্য মায়েদের ছোট করে দেখানোর অস্ত্র নয়।

আরও পড়ুনঃ মাঝপথেই বিদায় নিচ্ছে ‘সুধা’! ‘শুভ বিবাহ’ ছাড়ছেন প্রধান অভিনেত্রী? নতুন ধারাবাহিকেই নাকি মন অভিনেত্রীর! তবে কী প্রতীকের নতুন ধারাবাহিকে দেখা যাবে তাকে?

আর সেটা হয়ে উঠলে তা আর গর্ব থাকে না, বরং একরকম আত্মকেন্দ্রিকতায় পরিণত হয়। মধুবনী যদি নিজের সিদ্ধান্তে খুশি থাকেন, খুব ভালো কথা। কিন্তু বারবার “বড় মন”, “ত্যাগ”, “বিসর্জন” বলার মাধ্যমে বাকি মায়েদের অপমান করে ফেলছেন কিনা, সে দিকেও একটু নজর দেওয়াই ভালো। মাতৃত্ব কোনও কেরিয়ার থামানোর নাম নয়, এটা বরং জীবনের নতুন অধ্যায়। যেখানে কাজ আর সন্তান, দুটোই সমানভাবে জায়গা পেতে পারে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।