কমলিনীর জীবনে পুরনো ছায়া, প্রশ্নের মুখে স্বতন্ত্রর অস্তিত্ব! কমলিনী-স্বতন্ত্রর দুরত্ব বাড়াতে বর্ষা আর বুবালাই কি আঁটছে ষড়যন্ত্র? এই ব্যক্তি কি আসলেই কমলিনীর হারিয়ে যাওয়া স্বামী? কমলিনীকে নিয়ে লীনা গাঙ্গুলির ছেলেখেলায় ক্ষুব্ধ দর্শক!

বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় চলছিল এক অনবদ্য প্রেমকাহিনি, কমলিনী আর নতুন ঠাকুরপো স্বতন্ত্রর নিঃশব্দ প্রেমের রসায়ন। কিন্তু সেই মিষ্টি সম্পর্কে হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটাল চন্দ্র নামের কমলিনীর জীবনের পুরনো ছায়া। স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) তে বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া কমলিনীর স্বামী চন্দ্র আবার ফিরে এসেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ, স্বতন্ত্রর ঘর এক মুহূর্তে হয়ে উঠেছে নিঃসঙ্গ আর নির্বান্ধব। বৌঠানের সান্নিধ্যে আর নেই ভালোলাগা, নেই চোখে চোখে প্রেমের ইঙ্গিত।

পুরনো বর ফিরে আসার খবরে কমলিনীর শাশুড়ির উচ্ছ্বাস যেন আকাশ ছুঁয়েছে। যিনি এতকাল বৌমাকে বিধবার সাজে বেঁধে রাখতেন, তিনিই এখন তাঁকে সধবা সাজিয়ে পুনরায় সংসারে টেনে আনতে চাইছেন। শাঁখা, পলা, সিঁদুর, সবই যেন আবার ফিরিয়ে আনার উদ্যোগে মেতেছেন তিনি। কিন্তু কমলিনীর সাফ কথা, দীর্ঘদিন যার কোনও খোঁজ নেই, সমাজও যাকে মৃত বলেই ধরে নিয়েছে, তাঁর জন্য আবার এক নারীর জীবনে সধবার সাজ এনে দেওয়া মানে নিজের অস্তিত্বের অস্বীকৃতি।

এই পরিস্থিতিতে চন্দ্রর চরিত্র ঘিরে তৈরি হয়েছে এক নতুন ধোঁয়াশা। তাঁর কথাবার্তায় ফাঁকফোকর স্পষ্ট, আর তাতেই সন্দেহ জেগেছে দর্শকদের মনে। অনেকেই বলছেন, চন্দ্রর ফিরে আসা আসলে এক সাজানো নাটক। তাঁকে সামনে এনে কমলিনী ও স্বতন্ত্রর ঘনিষ্ঠতায় ইতি টানাই লক্ষ্য। দর্শকদের একাংশের মতে, পুত্রবধূ বর্ষা ও বড় ছেলে বুবলাই মিলে এই ষড়যন্ত্রের মূল কারিগর। মিতিল ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে, আর চন্দ্রর পরিচয় ধীরে ধীরে সামনে আসছে।

কমলিনীর চরিত্রে অপরাজিতা ঘোষ দাস যেমন অসামান্য অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছেন, তেমনই চরিত্রটি তার নিজস্ব যুক্তি, বুদ্ধি ও আত্মসম্মানবোধ দিয়ে অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে উঠেছে। যে সমাজ এক নারীর সাজ-পোশাকে তার সম্পর্কের মান্যতা নির্ধারণ করে, সেই সমাজকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন কমলিনী। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, একবার বিধবা সাজানো নারীর পক্ষে আবার সধবার ভূমিকায় অভিনয় করা মানে নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে বাঁচা।

অন্যদিকে স্বতন্ত্রর চরিত্রে সুদীপ মুখোপাধ্যায় যেন দর্শকের হৃদয়ে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন। তাঁর নিঃশব্দ ভালোবাসা, আত্মত্যাগ, আর অসহায়তা এই ধারাবাহিকে অন্যতম প্রাণ। কমলিনী যখন তাঁকে বলে, “তুমি ডলের সঙ্গে ঘর বাঁধো,” তখন স্বতন্ত্রর চোখের জল যেন দর্শকের মনেও ব্যথা জাগায়। তবে কি এই প্রেম সত্যিই শেষ হয়ে যাবে? নাকি চন্দ্রর ষড়যন্ত্র ফাঁস হতেই আবার জোড়া লাগবে হৃদয়? এই প্রশ্নের উত্তরই এখন খুঁজছে দর্শক।

আরও পড়ুনঃ “গল্প কোথা থেকে কোথায় চলে যায়, নিজেরাই বুঝি না!” — ছোট পর্দা নিয়ে বিরক্ত লিলি চক্রবর্তী, একই পথে অনামিকা সাহা, রত্না ঘোষালরাও!

দুজনের মধ্যে যে নিঃশব্দ প্রেম, দর্শক চায় দুজনের মুখে আসুক এবার। সবাই জানুক তাদের সম্পর্কের নাম। দীর্ঘদিন ধরে কমলিনীকে নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে মানসিক ও শারীরিকভাবে। যেখানে স্বতন্ত্রের মধ্যে একটা শান্তির আশ্রয় খুঁজে পেয়েছিল কমলিনী, হঠাৎ করে মৃত স্বামীকে ফিরিয়ে আনতেই ক্ষুব্ধ দর্শক বলছে কমলিনীকে নিয়ে ছেলেখেলা বন্ধ হোক এবার! তবে লীনার স্পষ্ট কথা, কমলিনী শুধু চরিত্র নয়, সমাজের মুখোমুখি দাঁড়ানো এক প্রতিবাদী নারীর প্রতিমূর্তি।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।