“সোনার ভরি এক লক্ষ, তবু ধারাবাহিকে অভিনেত্রীদের গা ভর্তি গয়না!” “বাস্তবতা হারিয়ে যাচ্ছে আজকের ধারাবাহিক থেকে”— ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ‘জন্মভূমি’র পিসিমা তথা বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মিতা চট্টোপাধ্যায়!

নব্বইয়ের দশকে বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে এক স্মরণীয় নাম ‘জন্মভূমি’ (Janmabhumi) । দীর্ঘদিন ধরে চলা এই ধারাবাহিকটি সেই সময়ে ছিল পারিবারিক বিনোদনের প্রধান উৎস, যা আপামর দর্শকদের মন জয় করেছিল। এই ধারাবাহিকের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘মিতা চট্টোপাধ্যায়’ (Mita Chatterjee)। এই ধারাবাহিকের মাধ্যমে ‘পিসিমা’ চরিত্রে সকলের ঘরে ঘরে জায়গা করে নেন তিনি। আজ তাঁর বয়স ৯২ বছর ছুঁইছুঁই হলেও, শারীরিক ও মানসিকভাবে তিনি যথেষ্ট সতেজ।

ক্যামেরার আলো থেকে বহু দূরে থাকলেও আজও টেলিভিশনের ভাল অনুষ্ঠানগুলো দেখতে ভোলেন না তিনি। ‘জন্মভূমি’-র মতো ধারাবাহিকের মূল শক্তি ছিল তার বাস্তবতা ও পারিবারিক গল্পের প্রেক্ষাপট। তখনকার ধারাবাহিকগুলিতে অভিনয়, পোশাক বা সংলাপে ছিল একধরনের সহজাততা, যা দর্শকের সঙ্গে স্বাভাবিক সংযোগ তৈরি করত। এখনকার ধারাবাহিকগুলো পরিবার কেন্দ্রিক হলেও সেখানে গল্পের মূল সুর বদলে গিয়েছে বলে মনে করেন মিতা চট্টোপাধ্যায়।

তার কথায়, ‘‘এখনও তো পরিবার নিয়েই গল্প হচ্ছে, কিন্তু গল্প বলার ধরন, চরিত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা আর আগের মতো নেই।’’ এই প্রসঙ্গে মিতা চট্টোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য বেশ আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। তিনি বলেন, “আজকাল টিভিতে অভিনেত্রীদের দেখি গায়ে ভর্তি গয়না পরে অভিনয় করছেন। যেখানে সোনার দাম ভরি প্রতি এক লক্ষ টাকা, সেখানে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী চরিত্রকে এত গয়নায় মুড়ে রাখা কতটা বাস্তবসম্মত তা সত্যিই বোঝা মুশকিল।”

তার মতে, এ ধরনের দৃশ্য দর্শকের সঙ্গে বাস্তবতার দূরত্ব তৈরি করে দেয়। এক সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর মতে, ধারাবাহিকের চরিত্রগুলো যখন বাস্তব জীবন থেকে উঠে আসে, তখনই দর্শকেরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেন। অতিরঞ্জিত সাজপোশাক বা চাকচিক্যপূর্ণ সেটার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাওয়া উচিত গল্পের গভীরতা ও চরিত্রের মানসিক বাঁকগুলির।

আরও পড়ুনঃ টিআরপির সিংহাসনে এবার যুগল রাজত্ব! তালিকায় ‘ফুলকি’ ও ‘পরশুরামে’র একচেটিয়া আধিপত্যে হোঁচট খেল ‘পরিণীতা’ আর ‘জগদ্ধাত্রী’! টিআরপি-র সেরা পাঁচে আবারও রাজত্ব ‘চিরসখা’র!

শেষ বয়সেও মিতা চট্টোপাধ্যায়ের এই দৃষ্টিভঙ্গি যেন নতুন প্রজন্মের জন্য এক শিক্ষা। অভিনয় এবং টেলিভিশন এখনও তাঁর ভালোবাসার জায়গা। আর সেই ভালবাসার জায়গা থেকেই তিনি স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন আজকের ধারাবাহিকের অপ্রাসঙ্গিকতাকে। তাঁর বক্তব্য যেন এক বৃদ্ধ অভিজ্ঞ শিল্পীর সতর্ক সঙ্কেত, যার মধ্যে বর্তমান টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির বাস্তব মুখও স্পষ্ট।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।

You cannot copy content of this page