“গাছের ডাল ধরে ডিস্কো করাকে নাচ বলা যায় না!” “বাংলায় নাচের কোনও সম্মান নেই!”— তীক্ষ্ণ ভাষায় কটাক্ষ কল্যাণী মন্ডলের! বর্ষীয়ান অভিনেত্রী তথা উত্তমের সহঅভিনেত্রীর কণ্ঠে দুঃখের সুর! গ্ল্যামারের আড়ালে কি সত্যিই উপেক্ষিত শিল্প?

বাংলা বিনোদন জগতে (Tollywood Industry) এমন কিছু প্রবীণ মুখ আছেন, যাঁদের উপস্থিতি পর্দায় মানেই একপ্রকার নিশ্চিন্ত দর্শক। তাঁদের অভিনয়ের ধরন, অভিজ্ঞতা এবং চরিত্রে একাত্ম হওয়ার ক্ষমতা আজও অবাক করে নতুন প্রজন্মকে। এমনই একজন অভিনেত্রী হলেন ‘কল্যাণী মন্ডল’ (Kalyani Mandal)। বয়সের ভার, সময়ের পরিবর্তন—সব কিছুকে ছাপিয়ে তিনি আজও সমান দক্ষতায় কাজ করে চলেছেন। ছোট কিংবা বড়, চরিত্র যতই সীমিত হোক না কেন, কল্যাণীর অভিনয়ে থাকে নিজস্ব ছাপ।

বর্তমানে অভিনেত্রী কল্যাণী মন্ডলকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘আনন্দী’তে (Anondi)। সেখানে তিনি ‘ঠাম্মি’ চরিত্রে অভিনয় করছেন এবং দর্শক সেই চরিত্রে তাঁর আন্তরিকতা ও সাবলীলতা বেশ পছন্দ করছেন। তবে ছোট পর্দায় নিয়মিত কাজ করলেও একসময় তিনি বাংলা বড়পর্দার অত্যন্ত পরিচিত মুখ ছিলেন। কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তম কুমার থেকে মহানায়িকার সঙ্গেও স্ক্রিন ভাগ করেছেন তিনি।

এই অভিনেত্রী নিজের যুগে ছিলেন অন্যতম ব্যস্ত শিল্পী। কেরিয়ারের বিভিন্ন পর্যায় বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করলেও, বাংলা সিনেমায় তাঁকে মা বা ঠাম্মির চরিত্রে বেশি দেখা গেছে। অনেকেই তাঁকে ‘বয়স্ক’ চরিত্রের জন্য আদর্শ মনে করলেও, কল্যাণী মন্ডলের অভিনয় ক্ষমতা বরাবরই বহুমাত্রিক। অভিনয়ের বাইরে একজন সংস্কৃতিমনস্ক শিল্পী হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের দীর্ঘ অভিনয় জীবনের একটি অতৃপ্তি নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী।

কল্যাণী মন্ডলের কথায়, বাংলা চলচ্চিত্রে সঠিক অর্থে নাচকে কখনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাঁর মতে, বিচিত্র লোকেশনে ক্যামেরার সামনে যা কিছু করলেই সেটাকে ‘নাচ’ বলা যায় না। তাঁর কথায়,”গাছের ডাল ধরে ডিস্কো করাকে নাচ বলা যায় না!” শিল্পের প্রতি ভালোবাসা থেকেই অভিনেত্রীর ক্ষোভ—তিনি চান বাংলা সিনেমাতেও যেন এমন কিছু সৃষ্টি হোক যেখানে সত্যিকারের নাচ প্রাধান্য পাবে।

আরও পড়ুনঃ মহিলা সাংবাদিকের জুতো এগিয়ে দিলেন যিশু! সাহায্য করতে গিয়েই বিতর্কে অভিনেতা! ব্যক্তিগত জীবনের সমালোচনার মাঝে মানবিকতা না অভিনয়? ‘নিজের বউ মেয়েকেও যদি এমন সম্মান দিতেন!’— যিশুর ভাইরাল ভিডিও ঘিরে নেট মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া!

কল্যাণী বলেন, যদি তাঁর সময়ে এমন কোনও সুযোগ থাকত, তাহলে তাঁর জীবন আরও পূর্ণ হতো। একজন বর্ষীয়ান শিল্পীর এমন কথা আজকের দিনে অত্যন্ত মূল্যবান। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের জন্য তাঁর এই মন্তব্য শুধুই অভিমান নয়, বরং এটি একপ্রকার দিকনির্দেশনাও। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা এই হতাশা, বাংলা সিনেমাকে আরও উন্নত করার আহ্বান হিসেবেই ধরা উচিত।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।