“টিফিনের পয়সায় সিনেমা দেখতাম, কোল্ড ড্রিঙ্কসের ঢাকনা ছুড়তাম!” “এখন টিকিট কেনাই দায়, তার ওপর পপকর্ন কিনলে বাজেট উড়ে যায়!” “মাল্টিপ্লেক্স মানেই আকাশছোঁয়া খরচ!”— বাংলা সিনেমা কেন পিছিয়ে পড়ছে, ব্যাখ্যা দিলেন শাশ্বত! বাঙালি আর সিনেমা দেখে কী করে? প্রশ্ন তুললেন অভিনেতা!

টলিউড ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood Industry) ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন নানা মহলে শঙ্কা ও সংশয় ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন অভিনেতা ‘শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়’ (Saswata Chatterjee) –এর কণ্ঠে শোনা গেল এক দৃঢ় আশাবাদ। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি সোজাসাপ্টা জানিয়েছেন, যারা বারবার টলিউড নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, তারা নিজেরাই বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তাঁর বক্তব্যে– টলিউড শেষ হয়ে যাচ্ছে, এই ধারণা অনেকাংশেই ভ্রান্ত। কিন্তু বাস্তবে, দর্শক ধীরে ধীরে সিনেমাহল ত্যাগ করছেন এই কথা অস্বীকার করা যায় না।

শাশ্বতের মতে, বর্তমান সময়ে বাংলা সিনেমায় পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, সেটা কাকতালীয় নয়। বরং এটাই প্রমাণ করে, বাঙালির এখনও ভালো গল্প, অভিনয়, নির্মাণ—সবকিছুর খিদে আছে। এই ছবি যদি দর্শকের মন ছুঁয়ে যেতে পারে, তাহলে তারা প্রেক্ষাগৃহে টিকিট কেটে ছবি দেখতে ঠিকই আসবেন। শাশ্বতের নিজের সাম্প্রতিক ছবি ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’ দর্শকের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি পাশাপাশি আরও কিছু সফল ছবির নামও উল্লেখ করেন।

ছবি যেমন ‘টনিক’, ‘প্রজাপতি’, ‘বহুরূপী’ কিংবা ‘খাদান’—যেগুলি প্রমাণ করে বাংলা সিনেমা আবার গল্পকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। সুপারস্টার বা হিট ফর্মুলার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে চরিত্রের গভীরতা ও নির্মাণশৈলী। এই বদলই বাংলা ছবির পুনরুত্থানের পেছনের মূল চালিকাশক্তি, বলেই মনে করেন তিনি। তবে শুধু কনটেন্ট বা গল্প নয়, শাশ্বতের মতে বর্তমান প্রেক্ষাগৃহ সংস্কৃতি ও দর্শকের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও একটি বড় পরিবর্তন এসেছে অর্থনৈতিক বাস্তবতার কারণে।

তাঁর স্মৃতিতে এখনও টাটকা সেই সময়ের ছবি—যখন টিফিনের পয়সা জমিয়ে স্কুলের ছাত্ররা সিনেমা দেখতে যেত, উত্তেজনার দৃশ্যে দর্শকরা হলে বসেই পয়সা ছুড়তেন। কেউ আবার কোল্ড ড্রিঙ্কসের ঢাকনাও চুরতেন, আর এখন? একটি মাল্টিপ্লেক্স টিকিট কিনলেই তার সঙ্গে যুক্ত হয় পপকর্ন থেকে শুরু করে নানা খরচ, যা সাধারণ মানুষের কাছে রীতিমতো ব্যয়বহুল। তিনি বলেন, সিনেমা হলের দামে ও পরিবেশে যে পরিবর্তন এসেছে, তা দর্শকের উপস্থিতির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

আরও পড়ুনঃ “বাংলা গানের ভার এখন দুই নারী ‘ইমন ও সোমলতা’র কাঁধে!”— অকপট লোপামুদ্রা মিত্র! ত্রিশ বছরের সুরযাত্রার পর উত্তরাধিকার নির্ধারণ করলেন গায়িকা!

অভিনেতার মতে, এটা একান্তই অর্থনৈতিক বাস্তবতা। সবমিলিয়ে শাশ্বতের মত স্পষ্ট—টলিউড পতন এক্ষুনি না হলেও, ধীর গতিতে চলছে। নির্মাতারা এখন সচেতন, অভিনেতারা আন্তরিক, আর দর্শকও ধীরে ধীরে ফিরে আসছেন গল্পের টানে। কিন্তু ব্যয়বহুল টিকিট অনেকের সেই উৎসাহ নষ্ট করে দিচ্ছে। তিনি অনুরোধ করেছেন, যাতে এই টিকিটের মূল্য কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়। যাতে আরও বেশি মানুষ ছবির আনন্দ নিতে পারে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।