টলিউডের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar) আবারও সংবাদ শিরোনামে! বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্য এবং অবস্থান নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। কখনও আধুনিক নারীর শাড়ি পরার ধরন, বাঙালি হয়ে শাঁখা-পলা বর্জন, কখনও বা রিয়েলিটি শোতে নৃত্য পরিবেশনা, বিভিন্ন বিষয় ঘিরে বহুবার জনমত বিভাজিত হয়েছে তাঁকে কেন্দ্র করে। এবার ফের এক সাক্ষাৎকারে কিছু মন্তব্য করে সমাজ মাধ্যমে তীব্র আলোড়ন তুলেছেন তিনি।
সমাজের তথাকথিত ‘অতি আধুনিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকারে সোজাসাপ্টা ভাষায় মমতা শঙ্কর বলেন, বর্তমানে কিছু বিজ্ঞাপন নিয়ে তাঁর প্রবল আপত্তি রয়েছে। ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’ এবং অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপনের ধরন তাঁর মতে দৃষ্টিকটু। অভিনেত্রীর সাফ কথা, “স্যানিটারি ন্যাপকিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়! মানুষ সেটা কিনবেই। আগে বিজ্ঞাপনে এগুলো একটু অন্যভাবে দেখানো হতো। এখন তো রীতিমতো লাল রঙ দিয়ে দেখাতে হচ্ছে!
আমরা কি এতটাই বোকা হয়ে গেছি? সবকিছুই এখন গিলিয়ে দিতে হচ্ছে? আমরা কি সভ্যতার দিকে এগোচ্ছি না আরও পেছোচ্ছি?” সমাজের অগ্রগতির নামে কীভাবে সরাসরি ও প্রায় নগ্নভাবে কিছু বিষয় উপস্থাপিত হচ্ছে, তা নিয়ে তাঁর গভীর আপত্তি। এই বিষয়গুলি নিয়ে শুধু আপত্তি নয়, ব্যক্তিগতভাবে যে তিনি অস্বস্তি বোধ করেন তাও অকপটে বলেন অভিনেত্রী। “টিভিতে এই বিজ্ঞাপন চলার সময় যদি কেউ এসে পড়ে, আমার সত্যিই লজ্জা করে। আমি এই বয়সেও এতটা মডার্ন হতে পারিনি,
যে আমার ছেলেকে বা বাবাকে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পাঠাতে পারি। স্বামীকে দিয়ে কিনিয়ে নিতে পারি, কিন্তু বাকিদের দিয়ে কেনাবার কথা ভাবতেই পারি না,”— একেবারে স্পষ্ট ভাষায় নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেন মমতা শঙ্কর। তাঁর মতে, ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত কখনও কোনও পুরুষকে তিনি এমন কিছু কিনে দিতে বলেননি, এবং ভবিষ্যতেও বলবেন না। তবে এখানেই শেষ নয়। আরও চাঁচাছোলা মন্তব্য উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে। অভিনেত্রী বলেন, “কিছু জিনিসে গোপনীয়তা প্রয়োজনীয়, তাই মানুষ বাথরুমেও যায়।
কিন্তু রাস্তায় বসেই তো করা যায়! গোপনীয়তা যদি আবশ্যক না হয়, তাহলে মানুষ প্রকাশ্যে করে না কেন? জামাকাপড় খুললেই যদি আধুনিক হওয়া যায়, তাহলে পাগলরা তো আরও বেশি আধুনিক।” তাঁর মতে, অতি আধুনিকতার নামে সমাজ আজ এমন কিছু বিষয়কেও স্বাভাবিক করে তুলছে, যা আদতে দৃষ্টিকটু, অপ্রয়োজনীয় এবং সমাজের শালীনতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে টানটান বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, মমতা শঙ্কর বাস্তবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কথা বলছেন।
আরও পড়ুনঃ শুরুতেই ধাক্কা! মাঝপথেই বন্ধের মুখে স্টার জলসার ‘বুলেট সরোজিনী’! একাধিক পরিবর্তনের পরও আশানুরূপ সাড়া নেই, দর্শকদের মন ভরাতে পারছে না ধারাবাহিক! কবে হতে পারে শেষ সম্প্রচার?
যেখানে বুদ্ধিদীপ্ত পরিমিতিবোধের অভাব প্রকট। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, অভিনেত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি পুরনো এবং ‘রিগ্রেসিভ’। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, “স্যানিটারি ন্যাপকিন তো একটা স্বাভাবিক, তা কে কিনবে তা নিয়ে এত টানাপোড়েন কেন?” তবে একথা বলাই যায়, সমাজের একাংশ তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করলেও, অন্য এক অংশ আবার তাঁর স্পষ্টবাদিতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। এই বিতর্ক শেষ কোথায় দাঁড়াবে, তা সময় বলবে। তবে মমতা শঙ্করের মন্তব্যে যে নেটপাড়া ফের সরগরম, তা বলাই বাহুল্য।