“শ্বাস নিতে পারছিলাম না, স্বর্গে ফিরলাম!”— পাঁচ বছর পরে শাসক দলে রূপাঞ্জনার ‘ঘর ওয়াপসি’! দিদির ডাকে ২১ মঞ্চে রূপাঞ্জনা, বিজেপি থেকে ফিরে এলেন শাসক শিবিরে!

সালটা ছিল ২০১৯, এক দমকা হাওয়ার মতো বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন টলিউড অভিনেত্রী ‘রূপাঞ্জনা মিত্র’ (Rupanjana Mitra)। তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেকেই তাঁর মতো শিবির বদলেছিলেন। সে সময় লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে উঠেছিল। বেশ কিছু শিল্পী দাবি করেছিলেন, তাঁরা নাকি কাজ পাচ্ছেন না বা তৃণমূল (TMC) ঘনিষ্ঠ মহলের তরফে চাপের মুখে পড়েছেন। সেই আবহেই রূপাঞ্জনার বিজেপি-তে (BJP) যোগদান ছিল বেশ চাঞ্চল্যকর। সঙ্গী ছিলেন ঋষি কৌশিক, কাঞ্চনা মৈত্র, বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো আরও পরিচিত মুখ।

তবে বিজেপিতে দীর্ঘ পাঁচ বছরের যাত্রা শেষে, আবার পুরনো ঘরে ফিরে এলেন রূপাঞ্জনা। ২১ জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের সভামঞ্চে যোগ দিয়ে জানালেন, যেন দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো। ‘ঘর ওয়াপসি’-র এই মুহূর্তকে তিনি তুলনা করলেন স্বর্গীয় প্রশান্তির সঙ্গে। তাঁর মতে, দলে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত ছিল আত্মার স্বস্তি খোঁজার মতোই কিছু। আর এই ফেরার নেপথ্যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিক আহ্বান, যেটা রূপাঞ্জনার কাছে এক বিশাল মর্যাদা।

পাঁচ বছর আগে বিজেপি-তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত যে পুরোপুরি ভুল ছিল—তা তিনি সরাসরি না বললেও, তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ রাজনৈতিক কাঠামোতে হাঁসফাঁস করে ওঠার অভিজ্ঞতা। রূপাঞ্জনার মতে, সেখানে থেকেও শিল্পীসত্তাকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। রাজনৈতিক আদর্শ আর সংস্কৃতির মধ্যে যে ফারাক, তা তিনি ভালোভাবেই টের পেয়েছেন। তাই এবার তিনি শুধু রাজনীতিতে নয়, আবার নিজের চেনা অভিনয় জগতে সক্রিয় হতে চান বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তবে এত বছর পর ফের দলবদল করার সিদ্ধান্তে কোনও বিতর্ক থাকলেও, রূপাঞ্জনা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—তাঁর উদ্দেশ্য একটাই, শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষা ও টলিউড ইন্ডাস্ট্রির সার্বিক উন্নতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর পূর্ববর্তী সম্পর্ক এবং তৃণমূলের সংস্কৃতিমূলক পরিসরের প্রতি আস্থাই নাকি তাঁকে আবার টেনেছে দলে ফিরে আসার দিকে। তাঁর আশ্বাস, অভিনয় এবং রাজনীতি—দুটো দিকেই তিনি সমানভাবে নজর দেবেন।

আরও পড়ুনঃ “হাউ হাউ করে এমন কাঁদতাম, কখনও নাক-মুখ দিয়ে র’ক্ত বেরোত!”— নব্বইয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আজও সেই কান্না মনে রেখেছেন ‘জন্মভূমি’-র পিসিমা মিতা চট্টোপাধ্যায়! অতীতের কোন স্মৃতি আজও আবেগী করে তোলে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে?

বর্তমানের প্রেক্ষাপটে, যেখানে ফেডারেশন এবং ইন্ডাস্ট্রি পরিচালকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে, সেখানে রূপাঞ্জনার মতো অভিজ্ঞ ও দৃঢ় মনের শিল্পীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব—এই বিশ্বাস নিয়েই তিনি আশাবাদী যে, ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ জটিলতাও খুব শীঘ্রই কাটিয়ে ওঠা যাবে। আর সেই লড়াইয়ে পাশে থাকবেন ‘দিদি’। আপাতত টলিপাড়ার রাজনৈতিক মানচিত্রে রূপাঞ্জনার ফিরে আসা নিঃসন্দেহে এক তাৎপর্যপূর্ণ মোড়।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।