“স্বামী-সন্তান ফেলে প’রপুরুষের সঙ্গে ঘ’নিষ্ঠতা!” “বুড়ো বয়সে রাত কাটাচ্ছে, আবার ক্যান্ডল লাইট ডিনার!”— কমলিনী-স্বতন্ত্রের সম্পর্ক নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক! এই সম্পর্ক নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ‘চিরসখা’র ভক্তমহল! লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কলমে নীতির বারোটা, কি বললেন তিনি?

স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকের পরতে পরতে এখন যেন শুধুই টানাপোড়েন। কমলিনী ও স্বতন্ত্রর বন্ধুত্ব থেকে তৈরি হওয়া গভীর সম্পর্ক একপ্রকার বদলে দিয়েছে গোটা গল্পের ধারা। দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের প্রতি আবেগ জমে উঠলেও দর্শকের মনে প্রশ্ন ছিল—তারা কি আদৌ এক হবে? এবার সেই প্রশ্নের উত্তর যেন মিলল, কারণ তারা একে অপরের আরও কাছাকাছি এসেছে। কিন্তু এই ‘ঘনিষ্ঠতা’ই তৈরি করেছে নতুন বিতর্ক!

ধারাবাহিকের সাম্প্রতিক পর্ব দেখে দর্শক মহল যেন একেবারে দ্বিখণ্ডিত। কেউ কেউ বলছেন, “এটাই তো ভালোবাসার স্বাভাবিক গতি! বয়স বড় বিষয় নয়, সম্পর্কের গভীরতাই আসল।” আবার অনেকে রীতিমতো তির্যক মন্তব্য করছেন, “ডিভোর্স হয়নি, স্বামী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও অন্য পুরুষের সঙ্গে এই সম্পর্ক কাম্য নয়।” সমাজ মাধ্যমে দেখা গেছে একের পর এক কটাক্ষ, “বুড়ো বয়সে আবার ক্যান্ডল লাইট ডিনার?”, “শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে গেল না তো?”— এমন মন্তব্যে ভরে উঠেছে কমেন্টবক্স।

কিন্তু এত বিতর্কের মধ্যেও আশ্চর্যভাবে ধারাবাহিকের টিআরপি বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন ধারাবাহিকের লেখিকা ‘লীনা গঙ্গোপাধ্যায়’। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন—সব সময় দর্শকের প্রতিক্রিয়া মাথায় রেখে গল্প লেখা যায় না। তাঁর কথায়, “দর্শকের ভাবনা আলাদা, লেখকেরও নিজস্ব কল্পনার জগৎ থাকে। সেই স্বাধীনতাটা না থাকলে কোনও গল্পই এগোয় না।” লীনার মতে, গল্পের নিজস্ব গতি আছে, এবং সেটা লেখকের সিদ্ধান্তেই চলা উচিত।

ভক্তদের মন রাখতে গিয়ে গল্পকে থামিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। কমলিনী ও তাঁর স্বামীর সম্পর্ক নিয়েও লেখিকার দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার। তিনি মনে করিয়ে দেন, “যদি কেউ ৭ বছর ধরে নিখোঁজ থাকে, আইনত ধরা হয় সে মৃত। এখানে তো ২০ বছর ধরে কমলিনী ও তার স্বামী আলাদা। স্বামী আবার নতুন সংসারও গড়েছে, সন্তানের বাবা হয়েছে। তাহলে একে স্বাভাবিক সম্পর্ক বলে ধরে নেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত?” লেখিকার বক্তব্য, গল্পে কোনও সহবাস দেখানো হয়নি, শুধু মানসিক ঘনিষ্ঠতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ বাঙালি কন্যার মুকুটে নয়া পালক! জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত রানি মুখোপাধ্যায়! ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবিতে এক মায়ের লড়াইয়ে মুগ্ধ দর্শক! এই ছবির জন্যই সেরা অভিনেত্রীর সম্মান রানির ঝুলিতে!

সব মিলিয়ে ‘চিরসখা’ এখন আর শুধু এক ধারাবাহিক নয়, এক সামাজিক বিতর্কের মঞ্চ। প্রেম, বন্ধুত্ব, নৈতিকতা আর সামাজিক মূল্যবোধের সীমারেখা নিয়ে চলেছে নিরন্তর আলোচনা। কে ঠিক, কে ভুল—সে বিচার দর্শকের উপরই ছেড়ে দিলেন লেখিকা। তবু একথা স্পষ্ট, কমলিনী-স্বতন্ত্রর এই সমীকরণ যে কেবল টেলিভিশনের পর্দাতেই সীমাবদ্ধ রইলো না, বরং সমাজ মাধ্যমে ঝড়েও তা বেশ জোরালোভাবেই দেখা দিচ্ছে।