চলচ্চিত্র মুক্তির আগে সাধারণত ঝলকমুক্তি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে উৎসবমুখর পরিবেশে। কিন্তু শুক্রবার সকালে কলকাতার বাইপাস সংলগ্ন এক বিলাসবহুল হোটেলে সেই চিত্র উল্টে গেল পুরোপুরি। একসময় যে মঞ্চে সেলিব্রিটি উপস্থিতির উচ্ছ্বাস থাকার কথা, সেখানে তৈরি হল বিশৃঙ্খলার ছবি। ফলে অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্যই বিঘ্নিত হল।
পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী তাঁর নতুন ছবি দ্য বেঙ্গল ফাইল্স–এর প্রচার ঝলক মুক্তি করতে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে মুম্বই থেকে কলকাতায় পৌঁছন তিনি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল অনুষ্ঠানটি একটি মাল্টিপ্লেক্সে আয়োজন হবে, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে ভেন্যু বদলানো হয়। হোটেলে সকাল থেকে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও অনুষ্ঠান শুরু হতেই দেখা দেয় অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।
অভিযোগ উঠেছে অনুষ্ঠান চলাকালীন এক পর্যায়ে কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক মঞ্চে উঠে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। ফলে দ্বিতীয়বারের জন্য ঝলক প্রদর্শন ব্যাহত হয়। এমনকি ছবির প্রচারে ব্যবহৃত ল্যাপটপও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে বলে অভিযোগ। এই সময় পরিচালক ও পুলিশকর্তাদের মধ্যে বচসার ঘটনাও ঘটে। বিবেক অভিযোগ করেন, “কোনও কারণ ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে, এটাই বাংলার চিত্র।”
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতেই বিবেকের স্ত্রী, অভিনেত্রী–প্রযোজক পল্লবী জোশীকে ঘিরেও পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁদের কথা বলতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে গ্রেফতারের জল্পনা উড়ে গেলেও পুলিশি ঘেরাটোপে দু’জনকে হোটেল চত্বর থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ অবশ্য দুপুর পর্যন্ত কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি।
আরও পড়ুনঃ এক দশকের রাগ-অভিমান ভুলে ফের হাত ধরাধরি! ‘ধূমকেতু’র সাফল্যে ভাসছেন দেব-শুভশ্রী, ইনস্টাগ্রামে প্রাক্তনের উদ্দেশে শুভেচ্ছা জানাতেই টলিউডে শুরু নতুন গুঞ্জন!
ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, “বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালক নামেই, আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছবি বানান তিনি।” তাঁর কটাক্ষ, “গোধরার দাঙ্গা বা গুজরাত নিয়ে কেন ছবি তৈরি করেননি?” অন্যদিকে বিধায়ক–অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করতে এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে বিবেকের বক্তব্য স্পষ্ট—“এটা যদি একনায়কতন্ত্র না হয়, তবে আর কী?” ফলে একটি ছবির ঝলকমুক্তিকে ঘিরে শহরে যে বিতর্কের আগুন ছড়িয়েছে, তা এত সহজে নিভবে না বলেই মনে করছেন অনেকে।