“বাবা টাকা দেননি, তাই পুরস্কার মেলেনি!” “দূর গগন কি ছাও মে-র জন্য পুরস্কারে ‘কিশোর কুমার’ নামই লেখা ছিল!”— জাতীয় পুরস্কার নিয়ে বি’স্ফো’রক অভিযোগ অমিত কুমারের! পুরস্কার বঞ্চনার পিছনে দুর্নী’তির অভিযোগ তুললেন তিনি!

বিনোদন জগতে পুরস্কার বিতর্ক (Award Controversy) নতুন কিছু নয়। গত সপ্তাহে ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (71st National Films Award) বিতরণী শেষ হতেই সমাজ মাধ্যমে তীব্র আলোচনা-প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। শাহরুখ খান, রানি মুখার্জি সহ কিছু শিল্পীর নাম ঘোষণা হওয়ায় নেটপাড়া তুলকালাম! অনেকে লিখেছেন যে, স্বর্ণজুগের অনেক প্রতিভাবান শিল্পী মৃ’ত্যুর পরে আজও সেই সম্মান পাননি। সেই তালিকায় বারবার যে নামটি ফিরে এসেছে, তিনি বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী– ‘কিশোর কুমার’ (Kishore Kumar) ! একাধারে– গায়ক, অভিনয়শিল্পী, সুরকার ও পরিচালকরূপে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে আলোচ্য।

কিশোর কুমারের সিনেমাজীবন ও জনপ্রিয়তা নিয়ে কেউ সন্দেহ করে না, কিন্তু জাতীয় পুরস্কারের নোমিনেশনে তাঁর নাম ওঠেনি কখনও! এই নিয়েই প্রশ্ন জেগেছে সবার মনে। তাঁর অভিনীত অনেক ছবি আজও মানুষের স্মৃতিতে স্বমহিমায় বেঁচে আছে, যেমন– ‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ‘পড়োসান’, ‘হাফ টিকিট’, এই শিরোনামগুলো আজকার প্রজন্মও চেনে। তবু পুরস্কারের তালিকায় কিশোরের অনুপস্থিতি নিয়ে দীর্ঘদিন গুঞ্জন ছিল, আর সাম্প্রতিক বিতর্কে সেই প্রশ্ন নতুন করে জোরালো হয়েছে।

আর এবার সেই বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিলেন কিশোর কুমারের ছেলে ‘অমিত কুমার’ (Amit Kumar)। তিনি জানান, ১৯৬৪ সালের জাতীয় পুরস্কার বিবেচনার সময় তাঁর বাবার নাম বেশ এগিয়ে গিয়েছিল—বিশেষত ‘দূর গগন কি ছাও মে’ ছবিটির জন্য। তবে তখনই কোনও এক সরকারি আধিকারিকের তরফে মনোনয়ন পেতে অনৈতিক অনুরোধ আসে বলে তাঁর দাবি। দিল্লি থেকে কিশোরের কাছে ফোন করে বলা হয়েছিল, কিছু অর্থ দিলে মনোনয়ন করে দেওয়া হবে।

এই ঘটনার কথা অমিত এতদিন বাদে প্রকাশ করলেন এবং পুরস্কার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন। অমিত দাবি করেন, তাঁর বাবা সেই অনুরোধ মানেননি। কিশোর কুমারের প্রতিক্রিয়া ছিল একরকম অহংকারহীন। তিনি বলেছিলেন, তাঁর জন্য ছবির ব্যবসা ও দর্শকপ্রিয়তাই বড় মাপকাঠি, টাকা দেওয়ার বিনিময়ে সম্মান কেনার পথে তিনি হাঁটবেন না। সেই সময়ের এই নৈতিক সিদ্ধান্তই আজকের প্রেক্ষাপটে অনেকেই সেটিকে সাহসিকতার নজির বলছে।

আরও পড়ুনঃ বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে এখন রাঘব বোয়ালরাই কাজ পায় না! শকুন্তলা বড়ুয়ার হাতেই দীর্ঘ দিন কাজ নেই! অভিনয়ের পাশাপাশি বিকল্প পেশা না বাছলে বাঁচা‌ মুশকিল! বাস্তব দেখালেন সুজয়প্রসাদ

কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন করছেন, কতটা ন্যায়বিচার হয়েছিল পুরস্কার প্রক্রিয়ায়। এই নতুন তথ্য সামনে আসায় পুরস্কার বিতরণের বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন অতীতের অনুষঙ্গ খণ্ডিত হলে তা পুনর্বিবেচ্য হওয়া উচিত, আবার কোনও একসময়ের অপারগতা এখনকার প্রেক্ষাপটে বিচার হলে সমাজ ও সংস্কৃতির পক্ষ থেকে সুবিচার প্রতিষ্ঠার একটা সুযোগ তৈরি হবে। যাই হোক, কিশোর কুমারের শিল্পীজীবনের মর্যাদা আর ভক্তদের ভালোবাসা আজীবন অটল, তা যে কোন পুরস্কারের থেকেও বড়।