“বাংলা সিনেমায় আদতে কোনও সুপারস্টার নেই! সুপারস্টার আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়”— দেব-কুণাল বাগযুদ্ধের মাঝে অদ্ভুত মন্তব্য ব্রাত্য বসুর!

বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যেন ফের একবার শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। একদিকে অভিনেতা দেব এবং তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বাগযুদ্ধ, অন্যদিকে সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন শিক্ষামন্ত্রী ও নাট্যকার ব্রাত্য বসু। তাঁর এক মন্তব্যে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে ‘সুপারস্টার’ শব্দটি। ব্রাত্যের দাবি, বাংলা সিনেমায় প্রকৃত কোনও ‘সুপারস্টার’ নেই— এই বক্তব্যে ইতিমধ্যেই টলিপাড়ায় নেমে এসেছে তীব্র আলোড়ন।

গত কয়েকদিন ধরেই দেব ও কুণাল ঘোষের মধ্যে বাগযুদ্ধ চলছিল খোলামেলা ভাবে। দুর্গাপূজার সময় মুক্তি পাওয়া দেবের ‘রঘু ডাকাত’ ছবি নিয়ে কুণাল ঘোষ প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেন এবং দেবকে ‘মাফিয়া’ বলে আক্রমণ করেন। সেই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে দেব বলেন, “আমার শত্রু হতে গেলেও যোগ্যতা লাগে।” এই কথার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় নেটিজেনদের মধ্যে প্রবল তর্ক-বিতর্ক। কেউ দেবের পাশে দাঁড়ান, কেউ আবার কুণালের মন্তব্যকে সমর্থন জানান। ঠিক এই সময়েই ব্রাত্য বসুর বক্তব্য নতুন মাত্রা এনে দিল এই বিতর্কে।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “বাংলা সিনেমায় কোনও সুপারস্টার নেই। যারা নিজেদের সুপারস্টার ভাবে, তারা আসলে একধরনের ‘হাস্যকর কনস্ট্রাকশন’-এর অংশ।” তাঁর মতে, প্রকৃত সুপারস্টার কখনও অন্য কারও ছায়ায় রাজনীতি করেন না, বরং নিজের দল গড়ে তুলতে সক্ষম হন। তিনি উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ ভারতের কমল হাসান, চিরঞ্জীবী বা বিজয়ের নাম উল্লেখ করেন। ব্রাত্যের বক্তব্যে স্পষ্ট, বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তথাকথিত তারকা সংস্কৃতিকে তিনি কড়া ভাষায় খোঁচা দিয়েছেন।

ব্রাত্য বসু আরও বলেন, “বাংলার প্রকৃত সুপারস্টার হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” তাঁর এই মন্তব্যে অনেকেই মনে করছেন, সিনেমা ও রাজনীতির মিশ্রণ নিয়ে ব্রাত্য আসলে গভীর ইঙ্গিত দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে, দেবের মতো তারকাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এই বক্তব্য কি কোনও বার্তা বহন করছে? আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি ব্রাত্যের নিজস্ব মতামত হলেও, তার প্রভাব টলিপাড়ায় ব্যাপকভাবে পড়তে চলেছে।

আরও পড়ুনঃ “এরা তো বুড়ি হয়ে গেছে, আর কোনো কাজ পাবে না,তাই সরকারের গায়ে লেগে থাকতে হয়! যদি টিকিট পায়” — দুর্গোৎসবের কার্নিভালে গিয়ে নোংরা কটা’ক্ষের মুখে অপরাজিতা আঢ্য!

ব্রাত্যের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ বলছেন, তিনি সত্যিই সাহসিকতার সঙ্গে বাস্তব কথা বলেছেন, আবার অনেকে প্রশ্ন তুলছেন— এই মন্তব্যের মাধ্যমে কি তিনি দেবকে পরোক্ষভাবে আঘাত করলেন? সব মিলিয়ে, দেব-কুণাল বাগযুদ্ধের পর ব্রাত্যের এই বিস্ফোরক মন্তব্যে নতুন রূপ পেল টলিউড বিতর্ক। এখন দেখার, এই উত্তাপ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়— ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন সংলাপের সূচনা হয়, নাকি বিতর্কের আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে।