সোশ্যাল মিডিয়ার লোকদেখানো সহানুভূতির বাইরে গিয়ে দেব দেখালেন, বিপদের সময় পাশে থাকার মানে কী! বাংলা ইন্ডাস্ট্রির তারকারা যেখানে কার্নিভাল-পোস্টে ব্যস্ত, দেব তখন বাস্তব জীবনেও নায়ক– উত্তরবঙ্গের দুর্গতদের পাশে দাঁড়ালেন তিনি!

উত্তরবঙ্গ (North Bengal Flood) যখন বন্যার গ্রাসে বিপর্যস্ত, তখন পাশে দাঁড়ানোটা শুধুই দায়িত্ব নয়, মানবিকতার এক বাস্তব প্রয়োগ। সেই সময়েই চোখে পড়ে দেব (Dev) এবং তাঁর টিমের নিঃশব্দ কিন্তু দৃঢ় পদক্ষেপ। দুর্গাপুজোর ব্যস্ততা, আলো ঝলমলে কার্নিভালের (Durga Puja Carnival) উচ্ছ্বাসের মধ্যেও দেব বেছে নিয়েছেন মানুষের পাশে থাকা। তিনি শুধু ছবি পোস্ট করে সহানুভূতি দেখিয়ে থেমে থাকেননি, বরং তাঁর টিম হাতে তুলে দিয়েছে ত্রাণসামগ্রী, চালু করেছে কমিউনিটি কিচেন, পৌঁছে গিয়েছে সেই সব জায়গায়, যেখানে এখন জীবনের চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে বেঁচে থাকার লড়াই।

এই সময়ে বহু তারকাই সামাজিক মাধ্যমে এক-দুটো পোস্ট করে “উত্তরবঙ্গের পাশে আছি” বলেই দায় মেটাতে চেয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের কাউকে দেখা যায়নি দুর্গত মানুষের হাতে খাবার বা ওষুধ তুলে দিতে। বরং পুজো কার্নিভালের অনুষ্ঠানে তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি অনেকের মনেই প্রশ্ন তুলেছে— রাজ্যের একপ্রান্তে যখন মানুষ কাদঁছে, তখন আরেকপ্রান্তে এতটা উচ্ছ্বাস কি ঠিক? বিশেষ করে বাংলা সিনেমার প্রথম সারির একাধিক মুখ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দায়িত্ব এড়ানো যায় কি? এই প্রেক্ষাপটেই দেবের কাজগুলো উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছে। তাঁর টিম শুধু খাবার বা ওষুধ নয়, দিচ্ছে আশ্বাসও-তাঁরা পাশে আছেন, শুধু এখন নয়, যতদিন প্রয়োজন ততদিন। এমনকি নিজের নতুন সিনেমার প্রচার কার্যক্রমও পিছিয়ে দিয়েছেন দেবের সহ অভিনেত্রী রুক্মিণী, এই দুর্যোগের সময়ে সেটা যেন বেমানান না হয়। দেব নিজেও জানিয়েছেন, তিনি প্রার্থনা করেন এই কঠিন সময় যেন দ্রুত কেটে যায় এবং মানুষ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। এমন একটি সময়ে তাঁর এই অবস্থান নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।

অনেকেই বলেছেন, দেব আসলে যা বলেন, তা করেন। আগেও বহুবার দেখা গেছে তিনি অসহায় মানুষের পাশে থেকেছেন নীরবে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স এলাকায় যখন বহু মানুষ ঘরছাড়া, খাবার ও চিকিৎসার অভাবে দিন কাটাচ্ছেন, তখন দেবের দল সেইসব মানুষদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে প্রয়োজনীয় জিনিস। তাঁরা কোথাও শুকনো খাবার, কোথাও প্রয়োজনীয় ওষুধ, আবার কোথাও নতুন কাপড় দিচ্ছেন, যাতে মানুষ অন্তত এই দুর্যোগে একটু স্বস্তি পায়।

আরও পড়ুনঃ “বেঁচে থাকার তাগিদে নিরুপায় আমি, এক এক সময় ভাবি…” “ভালো চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, শুধু একটু সুযোগ দিন!”—টলিউডে কর্মসংকটে হতাশ সত্যম মজুমদার!

অভিনয় জগতের অনেকেই হয়ত দেবের মতো সক্ষম, কিন্তু তাঁদের থেকে এই সময়ে তেমন কোনও কার্যকর সাহায্য দেখা যাচ্ছে না। শুধু সমাজ মাধ্যমে ছবি আর পোস্ট শেয়ার করলেই দায় শেষ হয় না। দেব সেটা বুঝেছেন, এবং তিনি যা করেছেন, তা দেখিয়ে দিয়েছেন– কীভাবে বাস্তবে পাশে থাকা যায়, নাম কামানোর বাইরে গিয়ে, নিঃশব্দে। এই সময়টা যেমন উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য দুঃসময়, তেমনই এটা আসল মানুষের পরিচয় বেরিয়ে আসারও সময়। এবং এই সময়ে দেবের পাশে থাকা নিঃসন্দেহে এক উদাহরণ হয়ে থাকল।