“আমি এখন সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী, প্রাণীদের খেতে পারি না, খেতে গেলে ওদের চোখ গুলো ভেসে ওঠে!” “নবমীতে তো নিজেই বলেছিলেন বিফ রান্না করবেন! হিপোক্রিট কোথাকার”, দেবলীনা দত্তের পশুপ্রেম দেখে ফের ক’টাক্ষ নেটপাড়ার

মানুষের সহানুভূতিই যে প্রাণীর প্রতি মমতা জাগাতে পারে, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তিনি এখন সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী। এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে এক গভীর মানবিক ভাবনা— যা শুনে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রবল আলোচনা।

দেবলীনা দত্ত বাংলা টেলিভিশনের এক জনপ্রিয় মুখ। ১৯৯৬ সালে ‘সীমারেখা’ ধারাবাহিক দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর অভিনয় জীবন। পরবর্তীকালে ‘সাতকাহন’-এর দীপাবলী চরিত্র এবং রবি ওঝার ‘এক আকাশের নীচে’-র মতো সিরিয়াল তাঁকে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। ছোট পর্দার পাশাপাশি সমাজমূলক কাজেও বরাবরই সক্রিয় এই অভিনেত্রী।

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে দেবলীনা জানান, তিনি আর মাছ-মাংস খান না। কারণ হিসেবে বলেন, “যখন আমি আমার পোষ্যকে আদর করি, তখন মনে হয়— তাদের চোখ, তাদের অনুভূতি তো এক। তাহলে সেই নিরীহ প্রাণীদের কেটে মসলা দিয়ে খাওয়া কীভাবে সম্ভব?” অভিনেত্রীর দাবি, প্রাণীদের যন্ত্রণা অনুভব করেই তিনি আমিষ খাবার ছেড়ে দিয়েছেন।

দেবলীনা আরও বলেন, “আমরা যখন মাছ বা মাংস খাই, তখন শুধু খাবারটাই খাই না, তাদের কষ্ট ও কান্নাটাও যেন খেয়ে ফেলি।” তাঁর এই বক্তব্যে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, “এমন মানবিক চিন্তাভাবনা সত্যিই প্রশংসনীয়।”

তবে অন্যদিকে, নেটমাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রবল সমালোচনা। কারণ, কিছুদিন আগেই দেবলীনা এক নিউজ চ্যানেলের ডিবেটে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে এক ব্যক্তি বলেছিলেন, তাঁর গরুর মাংস খেতে ভালো লাগে। তখন দেবলীনা হাসতে হাসতেই বলে ওঠেন— “দাদা, আমি কিন্তু খুব ভালো বিফ (গো-মাংস) রান্না করতে পারি! নবমীর দিন আসবেন, আমি নিজে রান্না করে খাওয়াবো।” সেই মন্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার নিরামিষভোজী হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই অনেকে লিখেছেন, “উনি নিজেরই কথার বিপরীতে চলে গেছেন।” কেউ আবার তির্যক মন্তব্য করে বলেন, “এখন কাজ পাচ্ছেন না, তাই এমন মানবিক চিন্তাধারা জেগেছে মনে।”

আরও পড়ুনঃ “দু’দিন ওর কাজ দেখবে, না পারলে কাজ থেকে বার করে দেবে!”— নিজের মেয়ের অভিনয় জীবনের প্রথমেই এমন মন্তব্য করেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক! বাবা হয়েও মেয়ের প্রতি কঠোর ছিলেন বেল্টম্যান!

দেবলীনার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তাই তৈরি হয়েছে দ্বিমুখী প্রতিক্রিয়া— একদল তাঁর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন, অন্যদিকে কেউ দেখছেন ‘হিপোক্রেসি’র ছায়া। তবে একথা অস্বীকার করা যায় না যে, তাঁর বক্তব্য নতুন করে প্রাণীপ্রেম নিয়ে ভাবাচ্ছে অনেককেই।