সমাজের চোখ যেন সব সময়ই তাড়া করে বেড়ায়! হাত ধরলেই সন্দেহ, একটু কাছাকাছি এলেই তকমা—‘পরকীয়া’। তাই সমাজের সেই অব্যর্থ বিচারক চোখকে এড়াতে বাধ্য হয়েই কি ‘চিরসখা’র স্বতন্ত্র-কমলিনী বিয়ে করলেন? সম্প্রতি ধারাবাহিকের বিশেষ পর্বে দেখা মিলেছে এই বহুল প্রতীক্ষিত বিয়ের। দর্শকেরাও খুশির জোয়ারে ভাসছেন। তবে সবার মন যে সবটাই খুশিতে ভরা, তা-ও নয়।
বহু বছর ধরে সম্পর্কের বাঁধনে জড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও কমলিনীকে এখন বিয়ে করতে দেখা গেল স্বতন্ত্রকে। এই সিদ্ধান্তে কমলিনীর পরিবার যেন একটু ভিড়ভিড় করছে। সমাজও নানাভাবে প্রশ্ন তুলছে—এই বয়সে এসে বিয়ে? এ কি মানায়? টেলিভিশনের পর্দায় হলেও এমন সামাজিক মানসিকতা তুলে ধরে আবারও আলোচনার তুফান তুলেছে ‘চিরসখা’।
নায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, সামাজিক কটূক্তির জ্বালা থেকে মুক্তি পেতেই এমন সিলমোহর দরকার হয় অনেক সময়। তিনি খোলসা করে বলেন, বন্ধু হিসেবেও হাত ধরলে সমাজের কপালে ভাঁজ। দ্রুত ছুঁড়ে দেওয়া হয় ‘অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা’র অভিযোগ। তাই স্বতন্ত্র-কমলিনীর মতো অসংখ্য মানুষের জন্য বিয়ে হয়ে ওঠে ঢাল—সমাজের রূঢ় রায় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে।
সুদীপের মতে, এক নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছনোর পর সম্পর্কে রোম্যান্সের থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে নির্ভরতা, মানসিক সঙ্গ ও ভালোবাসার নিঃশব্দ প্রতিশ্রুতি। তখন বিয়ের বাড়তি প্রয়োজন বোধ না হলেও, সমাজের চোখ রাঙানি অনেককে বাধ্য করে। তাই গল্পে দেখানো বাস্তবটাই উঠে আসে—দায়িত্বের পাহাড় পার করে, জীবনের শেষ পর্বে এসে হয়তো মানুষ অনেক বেশি সাহসী হয় নিজের ভালবাসাকে স্বীকৃতি দিতে।
আরও পড়ুনঃ ঋজুর জন্যই সেই দিন প্রাণে বেঁচেছিলাম! আজ সত্যি মনে হয় অভিনয় ছেড়ে দিয়ে ভালো আছি! না হলে ওর মতই পরিস্থিতি হত, প্রাক্তন সহকর্মীকে নিয়ে অকপট তিতাস
চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এই জীবন্ত সত্যটাই তুলে ধরেছেন—দর্শকরাও তাই প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নায়ক-নায়িকাকে। কেন এত দিন পর এই সিদ্ধান্ত? ধারাবাহিকেই সেই উত্তর দিয়েছেন স্বতন্ত্র—দায়িত্ব শেষ, এবার শুধু তাদের দু’জনের জীবন। বাস্তবেও তো এমনটা কত ঘটে! ভালোবাসা দেরিতে এলেও ভুল আসে না। বরং সে আসে আরও গভীর হয়ে, আরও দৃঢ় হয়ে।






