‘মেয়েটাকে দেখলেই ওর বাবার কুকীর্তি আর অন্য সন্তানের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের কথা মনে পড়ে যায়!’ সোশ্যাল মিডিয়ায় কৃষভিকে নজিরবিহীন আক্রমণ নেটিজেনের! রেগে আগুন শ্রীময়ী

মাতৃত্ব, তারকার জীবন আর সোশ্যাল মিডিয়ার এক অদ্ভুত ত্রিমুখী টানাপোড়েন আবার প্রকাশ্যে এল শ্রীময়ী চট্টোরাজ মল্লিকের সাম্প্রতিক পোস্ট ঘিরে। নিজের কোলে বসে থাকা এক বছরের মেয়ে কৃষভিকে নিয়ে বানানো এক সাধারণ রিল অচানকই বিতর্কের ঝড় তোলে। ছোট্ট মেয়ে মেকআপের গন্ধ এবং আলো দেখেই গম্ভীর মুখে চুপ করে ছিল। সেই দৃশ্যটাই ছিল রিলের মূল মজা। ঠিক এখানেই এসে পড়ে তির্যক মন্তব্য, যা মুহূর্তে রাগিয়ে তোলে শ্রীময়ীকে।

মন্তব্যটি ছিল একেবারেই অশালীন। লেখা হয়েছিল যে কৃষভিকে দেখতে নাকি অদ্ভুত লাগে এবং তার চেহারা দেখে নাকি তার বাবার পুরনো কাজ বা বেদনাদায়ক অতীত মনে পড়ে যায়। এমন ব্যক্তিগত কটাক্ষ কোনো বাবা-মাকেই শান্ত থাকতে দেয় না। শ্রীময়ীও স্বভাবতই এড়াননি। তিনি জবাব দেন যে অদ্ভুত যদি কিছু থাকে, তা হলো ট্রোলারের মানসিকতা। নিজের দিকে তাকালে যে আয়নাও ভয় পাবে, সে কথা সেই মহিলার ধারণা নেই — এমন কঠোর ভাষাতেই পাল্টা আক্রমণ শ্রীময়ীর।

এই মন্তব্যের পেছনে যে দীর্ঘদিনের বিতর্কিত সম্পর্ক এবং পুরনো টানাপোড়েন রয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না। কাঞ্চন মল্লিক ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাম্পত্য ভাঙন সামনে আসে ২০২১ সালেই এবং সেই সময় থেকেই শ্রীময়ীর নাম যুক্ত হতে থাকে নানা অভিযোগে। বহু আইনগত জটিলতার পর ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে চূড়ান্ত হয় কাঞ্চন এবং পিঙ্কির ডিভোর্স এবং তাঁদের ছেলে ওশের দায়িত্ব বাবদ কাঞ্চন দেন ৫৬ লক্ষ টাকা, যদিও বাবা-ছেলের সম্পর্ক এখন দূরত্বে ভরা।

ডিভোর্সের ঠিক এক মাস পরই শ্রীময়ীকে বিয়ে করেন কাঞ্চন। ফেব্রুয়ারিতে আইনি বিবাহ, মার্চে সামাজিক অনুষ্ঠান এবং একই বছরের অক্টোবরে জন্ম নেয় তাঁদের মেয়ে কৃষভি। বয়সের ২৭ বছরের ব্যবধান, তিন নম্বর বিয়ে, এবং বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই সন্তানের আগমন—এই সবকিছুই নিয়ে ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছেন তাঁরা বারবার। এই কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হয় শ্রীময়ীকে।

আরও পড়ুনঃ ‘বাংলায় এসে হিন্দু-মুসলিম নিয়ে ধর্মভিত্তিক দ্বন্দ্ব তৈরি করতে চেয়েছিল অবাঙালি চালক…বাংলার সংস্কৃতি এমন কোনদিনও ছিল না, বাঙালি এসব ধর্মবিদ্বেষের অনেক ঊর্ধ্বে!’ অ্যাপ ক্যাবে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে, সুদীপার প্রতিবাদ!

কিন্তু এবার আঘাতটি সরাসরি তাঁদের শিশুকে ঘিরেই হওয়ায় প্রতিক্রিয়াও হয়েছে তীক্ষ্ণ। মাত্র এক বছরের একটি মেয়েকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য যে কতটা নিচুতে নামাতে পারে সমাজের এক অংশকে, তা আবারও স্পষ্ট হলো। শ্রীময়ীর জবাব ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিছক বিনোদনের নামে শিশুকে অপমান করা কতটা অমানবিক—সেই প্রশ্নই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।