মৌল’বাদীদের হিংসায় জ্বলছে ‘ছায়ানট!’ স্তব্ধ সুরের দেশ, চোখ জলে এপার বাংলার শিল্পীমহলের! কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শ্রাবণী সেন

গতকাল রাত থেকে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেই আগুনের গ্রাসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাংলাদেশের গর্ব, সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র ছায়ানট। গোটা রাত ধরে সেখানে চলে ভাঙচুর ও লুটপাট। তবলা হারমোনিয়াম আছড়ে ফেলা হয় মাটিতে, আগুনে পুড়ে যায় শিল্পের স্মৃতি ও সাধনার চিহ্ন।

ছায়ানট শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি দুই বাংলার শিল্পীসত্ত্বার আবেগ। প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সনজীদা খাতুনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই সংগঠন যুগের পর যুগ ধরে সংস্কৃতির আলো জ্বেলে রেখেছে। সেই আলো নিভে যেতে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন এ পার বাংলার শিল্পীরাও। টিভির পর্দায় জ্বলন্ত ছায়ানট দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শ্রাবণী সেন। তাঁর কণ্ঠে ধিক্কার আর অসহায় যন্ত্রণার সুর।

শ্রাবণী সেন বলেন, ছায়ানটের নাম সারা পৃথিবী জানে। এখান থেকে আমরা পেয়েছি অগণিত গুণী শিল্পী। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শেখার প্রেরণা আসে। সনজীদা খাতুনের ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, যন্ত্র ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এ সব কিছু মেনে নেওয়া যায় না। কাল রাত থেকেই মন ভার হয়ে আছে। কবে আবার স্বাভাবিক হবে, সেই প্রশ্ন তাড়া করছে বারবার।

ছায়ানটের মঞ্চে বহুবার গান গেয়েছেন জয়তী চক্রবর্তী। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর অসংখ্য স্মৃতি ও প্রিয় মানুষের মুখ। এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বারবার গলা ধরে আসছে তাঁর। জয়তী বলেন, ক্ষোভ দুঃখ আর হতাশা মিলিয়ে যে অনুভূতি তৈরি হয়েছে, তা ভাষায় ধরা যায় না। শিল্প নিত্যপ্রয়োজন না হলেও মন বাঁচিয়ে রাখে শিল্পই, আর সেই কারণেই প্রথম আঘাত আসে সংস্কৃতির উপর।

আরও পড়ুনঃ তাঁর অভিনীত চরিত্ররা মুহূর্তে হয়ে ওঠে বাস্তব! প্রচার এড়িয়ে অভিনয় দিয়ে মনে দাগ কাটেন দর্শকদের! কৌশিক রায় কি আজকের সবচেয়ে সংযত ও বিশ্বাসযোগ্য শিল্পীদের একজন?

বাংলাদেশে বহু অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন সৌরেন্দ্র সৌম্যজিৎ। যদিও ছায়ানটে যাওয়া হয়নি, তবু সেখানে গান গাওয়ার স্বপ্ন ছিল সৌম্যজিতের। সেই স্বপ্ন পুড়তে দেখে তিনি ভেঙে পড়েছেন। তবু আশার কথা শোনান তিনি। বিশ্বাস রাখেন একদিন সব ঠিক হবে। আবার ছায়ানটের আকাশে ভেসে আসবে গান, তবলায় উঠবে বোল, হারমোনিয়ামে জন্ম নেবে নতুন সুর।

You cannot copy content of this page