তাঁর প্রতিটি গান, সেই গানের ভাষা থেকে শুরু করে নিজের বক্তব্যেও যেন সবসময়ই প্রচলিত ধারার বাইরে, অত্যন্ত ব্যতিক্রমী! হ্যাঁ, কথা হচ্ছে বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ‘কবীর সুমন’কে (Kabir Suman) নিয়ে। সম্প্রতি ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, তাঁর হিন্দি-হিন্দুত্ববাদের বিস্তারের বিরুদ্ধে বক্তব্য তুমুল সাড়া ফেলেছিল সর্বত্র। সেখানে তিনি বলেছিলেন, বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি ক্রমশ হিন্দি আধিপত্যের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। তাই যদি এখনই সচেতনতা আর প্রতিবাদ না দেখানো হয়, ভবিষ্যতে বাংলাভাষীদের সমস্যা বাড়বে।
তিনি মনে করেন, ভাষা আর সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। সেই সঙ্গে তিনি আবার বাংলা গান আর বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি তার আনুগত্যও স্পষ্ট করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কেউ বাংলা বললেই বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, যা তার কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। একই সঙ্গে তিনি এই বিষয়টি ধর্ম বা জাতির সীমারেখায়ও বাঁধতে চান না! সঙ্গীতকে কোনও সীমাবদ্ধতার মধ্যে আটকে রাখা উচিত নয় বরং তা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘সোনার বাংলা’ বিতর্কেও তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছিলেন, তাঁর বাবার মাধ্যমে এই গান প্রথমে চলচ্চিত্রে ব্যাবহার হয়। কিন্তু তিনি মনে করেন গানটি শুধু একটি নির্দিষ্ট দেশের জন্য নয় বরং সবের জন্য। তাই তিনি যে কোনও অনুষ্ঠান বা জায়গায় এই গান গাইতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এবার আরও একটি বিতর্কিত সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর! সেখানে এবার কবীর সুমনকে বলতে শোনা গেল, “সলিল চৌধুরী গীতিকার ও সুরকার আর সুমনও গীতিকার, সুরকার এটা ঠিক আছে।
কিন্তু মোহিনী চৌধুরীর মতো এরকম গুরুচণ্ডালী দোষ মুক্ত গান কিন্তু খুব কম বাঙালিই লিখতে পেরেছেন, কিন্তু তিনি তো সুরকার ছিলেন না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সলিল চৌধুরীর আর কবীর সুমন– তিনজনেই গীতিকার এবং সুরকার। কাজেই আমার মনে হয় যে এই দুজনের পড়ে আমার নামের যে ধারণার জায়গাটা, খুব একটা বেঠিক কিছু না!” এই ছোট্ট একটি ভিডিও যেন একাংশের বাঙালিদের আবেগকে আঘাত করেছে! কবীর সুমন নিঃসন্দেহে তাঁর ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার জন্য সব সময় আলোচনায় থাকেন, বিতর্কে জড়ান।
আরও পড়ুনঃ এক কন্যা সন্তানের মা হওয়া সত্ত্বেও কেন পঞ্চাশ বছর বয়সে ছেলেকে দত্তক নিয়েছিলেন জোজো? কারণ জানলে অবাক হবেন আপনিও
কিন্তু এবার যেন সেটার সীমা কিছুটা অতিক্রম করে ফেলেছেন তিনি! সমাজ মাধ্যমে চলছে শিল্পীকে কটাক্ষ আর সমালোচনার ঝড়। কেউ বলছেন, “আপনার সাহস তো কম না যে, রবীন্দ্রনাথ আর নিজের নাম এক বাক্যে ব্যবহার করছেন!” অন্যজনের কথায়, “মনে হয় কিছুদিন পরে পরেই একটু কথা না শুনলে না ভাত হজম হয় না! ভিমরতি আর কাকে বলে!” একজন আবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন, “এ তুমি কেমন তুমি গানটা আমার বড় প্রিয়।ভাবতে অবাক লাগে এই গানটার স্রষ্টা আপনি!” সব মিলিয়ে শিল্পীকে নিয়ে আবারও একবার উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে!






‘রবীন্দ্রনাথ আর সলিল চৌধুরীর পরেই আমি, ওই দু’জনের পর কবীর সুমন নামটাই তো স্বাভাবিক!’ কবীর সুমনের বিতর্কিত দাবি! ভিডিও ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় সমাজ মাধ্যমে, শিল্পীর বক্তব্যে আহত বাঙালির আবেগ?