নতুন মোড়ে ঘুরে গেল স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chirokhokha)। এতদিন দর্শকের সন্দেহ শুধু, এবার পর্ব এগোতেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে বাবিল ও মিটিলের জীবনে সত্যিই তৃতীয় একজন ঢুকে পড়েছে। বাইরে শান্ত দৃশ্যের আড়ালে যে অস্বস্তিটা ধীরে ধীরে জমছিল, সেটা আর আড়াল থাকল না। দীর্ঘদিনের সঙ্গ, ভরসা আর সম্পর্কের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন নিয়ে তৈরি হল এমন এক পরিস্থিতি, যা মিটিলকেও যেন একেবারে বিচলিত করে দিল! গল্পটা এখন এমন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে দুজনের সম্পর্ক আর আগের মতো নেই, আর এই ভাঙনের কেন্দ্রে এসে পড়েছে নতুন একটি মুখ।
দর্শকের সামনে অবশেষে হাজির সেই নাম, কোয়েল। এই চরিত্রে যুক্ত হয়েছেন অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা মিত্র। যিনি একসময় ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ‘চিনি’ হয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন। আবার ‘রাজ রাজেশ্বরী রানী ভবানী’র ‘পরমেশ্বরী’ চরিত্রেও নজর কেড়েছেন। এবার ‘চিরসখা’য় তার প্রবেশেই গল্পে তৈরি হয়েছে নতুন কৌতূহল। পর্দায় দেখা যাচ্ছে, কোয়েল আধুনিক ভেবে বাঁচতে পছন্দ করে আর কথা বলার ধরনেও তার আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। সামাজিকতার নিয়মকানুনে খুব একটা পাত্তা দেয় না, নিজের সিদ্ধান্ত নিয়েই এগিয়ে যায়।
এই চরিত্রের আগমনেই যেন সম্পর্কের সমীকরণ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বাবিলের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছিল বদল। না চাইলেও পরিষ্কার হয়ে উঠছিল, সে আগের মতো নেই। কথাবার্তায় অনীহা, এড়িয়ে যাওয়া আচরণ মিলিয়ে সবটাই পরিষ্কার ছিল। মিটিলের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনটা ছিল কষ্টকর। সে শুধু সঙ্গী নয়, পরিবারের অংশ হয়ে থেকেছে। তবুও বাবিলের মন দূরে চলে যাচ্ছিল আর সেই ফাঁকটা অবশেষে কোয়েলের নামেই পূরণ হল। দর্শক হয়তো অনেকদিন ধরেই আন্দাজ করছিলেন, এবার তা বাস্তবের রূপ নিল।
মজার বিষয় হলো, কোয়েলও কিন্তু একগুঁয়ে বা নরম কোনও একরঙা চরিত্র নয়। তার আচরণে স্পষ্টতা আছে, কিন্তু আবেগের জায়গায় সে মিটিলের মতো নয়। যেখানে মিটিল সম্পর্কের ভিত ধরে রাখতে চায়, সেখানে কোয়েল জীবনকে নিজের পথে এগোনোর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। দুজনের ভাবনার এই তফাৎই গল্পকে আরও তীক্ষ্ণ করে তুলছে। এখানে কে ভুল বা কে ঠিক সেই সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে বলা কঠিন, কিন্তু এই সমীকরণই ধারাবাহিকের গতিকে আরও টানটান করে তুলেছে।
আরও পড়ুনঃ “পড়াশোনা শেষ করতে পারিনি, আমার জায়গায় থাকলে অন্যরা করে ফেলত, কিন্তু আমি পারিনি এটা আমার ব্যর্থতা।” ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দা, সাফল্যের মাঝেও অপূর্ণতার কথা বললেন দিব্যজ্যোতি! কী ছিল তাঁর না-পারার কারণ?
এখন বড় প্রশ্ন, কোয়েল কি খলনায়িকা হয়ে উঠবে, নাকি সে শুধু পরিস্থিতির একটি অংশ? বাবিলের সিদ্ধান্তকে কি সে এগিয়ে দেবে, নাকি গল্পে আরও নতুন বাঁক তৈরি করবে? দর্শকের প্রতিক্রিয়া দ্বিধাবিভক্ত, কেউ মনে করছেন কোয়েলই কলহের কারণ। আবার কেউ ভাবছেন তার উপস্থিতি হয়তো গল্পকে নতুন আলোয় দেখার সুযোগ করে দেবে। তবে এটুকু নিশ্চিত, ‘চিরসখা’র আগামি পর্বগুলোতে সম্পর্ক, সিদ্ধান্ত আর মানসিক দূরত্বই গল্পের প্রধান ভূমিকা হয়ে উঠতে চলেছে।






