গোলগাল চেহারা। রসগোল্লার মতো ফোলা ফোলা গাল।গানের গলাও বেশ। হুবহু কুমার শানুর গলা নকল করেন। তবে গান নয়। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন অভিনয়কে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কমেডি অভিনেতা হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার। তিনি অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু (Bishwanath Basu)।
জন্ম বসিরহাটে। সেখানেই বড় হওয়া বিশ্বনাথের। মফস্বলের ছেলের দু-চোখ ভরে স্বপ্ন ছিল একদিন কলকাতায় এসে প্রতিষ্ঠিত হবেনই। আর অভিনয় ছিল একমাত্র নেশা। নেশাকে পেশা বানিয়ে একদিন সকলের মন জয় করবেন। কিছু না থেকেও মুম্বইয়ের মত জায়গায় যদি বাংলার ‘গৌরাঙ্গ’ ওরফে মিঠুন চক্রবর্তী প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন। তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বিশ্বনাথ। মিঠুনদা পারলে তিনি কেন নয়?
আরো পড়ুন:শ্রাবণের পাশে দাঁড়িয়ে মৃত্তিকার মুখোশ খুলে দিল রোহিণী, টানটান উ’ত্তে’জ’না Love বিয়ে আজকাল-এ
প্রথম জীবনটা সহজ ছিল না। পরিবারের সকলে আর্থিক স্বচ্ছলতায় কাটালেও, বিশ্বনাথের ছোটবেলায় মোটেই গোলাপের পাপড়ি বিছানো ছিল না। কর্মজীবনের প্রথমার্ধেও পথে ছিল একাধিক কাঁটা। কটাক্ষ শুনেছেন চেহারা নিয়ে। কটাক্ষের কাঁটায় বিদ্ধ হয়েছেন। মন রক্তাক্ত হয়েছে বহুবার। তবুও হাল ছাড়েননি।
একবার নাকি এক প্ৰখ্যাত পরিচালক সরস্বতী পুজোর দিন সকাল ৭টায় ডেকেছিলেন বিশ্বনাথকে। সেই অনুযায়ী, ৫টায় কোন বাড়িতে সরস্বতী পুজো হয় খুঁজে বের করে, সেখানে অঞ্জলি দিয়ে, কাঁটায় কাঁটায় সাতটার সময় হাজির হয়েছিলেন পরিচালকের বাড়ি। আর এসে শুনেছিলেন পরিচালক নাকি বেমালুম ভুলেই গেছে। এক পরিচালক তো আটবার দৌড় করিয়েছিলেন তার অফিসে। প্রতিবারই বিশ্বনাথ গিয়েছেন। কিন্তু কাজ জোটেনি।
জীবনে এরকম হাজারও বাঁধার সম্মুখীন হয়েও হাল ছাড়েননি বিশ্বনাথ। বড়পর্দায় কাজ করেছেন। থিয়েটার করেছেন। সিনেমায় কাজ করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, দেব মতো দিকপালদের সঙ্গে। ১০০-র বেশি বাংলা ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৫০র বেশি সিনেমায় কাজ। কিন্তু নিজেকে ভুলে যাননি।