সকাল থেকে ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকের সেটে জমজমাট শুটিং। এ দিনের মূল দৃশ্য আদালতের ঘরে, যেখানে কমলিনী মুখোপাধ্যায় এবং চন্দ্রোদয় মুখোপাধ্যায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার শুনানি চলছে। দুই দশক আগে যিনি স্বামী ছিলেন, তাঁর ফিরে আসা কমলিনীর জীবনে নতুন ঝড় তুলেছে। এত বছর ধরে যাকে মৃত ভেবে জীবন এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই মানুষটি এখন নিজের দাম্পত্য অধিকার দাবি করতে হাজির। কিন্তু সময়ের সঙ্গে কমলিনীর জীবনে এসেছে অনেক পরিবর্তন, নতুন সম্পর্ক, নতুন সমীকরণ।
এতদিনে কমলিনীর জীবনে এক নতুন মানুষ জায়গা করে নিয়েছে— তার ঠাকুরপো স্বতন্ত্র। জীবনের কঠিন সময়ে সে-ই এখন কমলিনীর শক্তি ও সঙ্গী। পরিণত বয়সের প্রেমের এই গল্পকে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় নিখুঁতভাবে সাজাচ্ছেন পর্দায়। গল্পের ভেতরেই তিনি ছুঁড়ে দিচ্ছেন একাধিক প্রশ্ন, কোনও মহিলার জীবনে পুরুষের উপস্থিতি কি সত্যিই অপরিহার্য? আর অর্ধেক জীবন কাটিয়ে দেওয়ার পর নতুন করে কি প্রেমে পড়া যায়?
সকাল আটটা থেকে একটার পর একটা দৃশ্যের শুটিং চলছে। কমলিনীর চরিত্রে অপরাজিতা ঘোষ দাসকে দেখা গেল সাদাসিধে শাড়ি আর কালো ব্লাউজে, মেকআপের আড়ম্বর একেবারেই নেই। অন্যদিকে স্বতন্ত্র চরিত্রে সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে দেখলেই মনে হয়, মার্জিত ভদ্রলোকের প্রতিচ্ছবি যেন পর্দায় ফুটে উঠেছে। সেটে ব্যস্ততা হলেও দুই অভিনেতাই জানালেন, তাঁদের চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে জীবনের প্রতি কিছু ব্যক্তিগত ভাবনাও মিলিয়ে গিয়েছে।
স্বতন্ত্রের চরিত্র নিয়ে সুদীপের মত, জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে এমন একজন সঙ্গী থাকা জরুরি, যিনি বিপদে-আপদে ভরসা হয়ে দাঁড়াবেন। তাঁর ভাষায়, “এমন একজন নতুন ঠাকুরপোর সবার দরকার আছে জীবনে। যাকে বিপদে-আপদে সবার আগে পাওয়া যায়।” আর অপরাজিতা মনে করেন, বয়স কখনও প্রেমের বাঁধা হতে পারে না। তাঁর কথায়, “প্রেম মানুষের জীবনের যে কোনও পর্যায়ে আসতেই পারে। আর আমি এটা মন-প্রাণ দিয়ে নিজেও বিশ্বাস করি।”
আরও পড়ুনঃ“গর্ব হচ্ছে তোমার জন্য!” রাজনন্দিনীর সাফল্যে দারুণ খুশি জীতু! দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে বিতর্কের মাঝেও ‘চিনি’র প্রশংসা অব্যাহত! ‘আপনি মেয়ে দেখলেই গলে যান? ছেলেটাকেও শুভেচ্ছা জানাতে পারতেন!’ জীতুকে কটাক্ষ নেটপাড়ার!
এই দুই অভিনেতা-অভিনেত্রীর মতে, ‘চিরসখা’র গল্প শুধু একটি প্রেমকাহিনি নয়, বরং সমাজের সেই দিকটিকেও তুলে ধরছে যা অনেকের চোখে ‘বেআইনি’ বা ‘অশোভন’ বলে ধরা হয়। কিন্তু লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এই লেখনীর মাধ্যমে দেখাচ্ছেন, জীবনকে নতুনভাবে শুরু করার কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। দর্শক হয়তো এই গল্পের মধ্যে খুঁজে পাবেন নিজের জীবনের কোনও না কোনও উত্তর, এমনটাই আশা রাখেন এই দুই শিল্পী।