“অভিনয়ে ফিরলেও টেলিভিশনে নয়!” “টেলিভিশনে না আছে ভালো কাজ, না সম্মান!”— ছোটপর্দা থেক সরে দাঁড়ালেন দেবযানী চ্যাটার্জি! নে’গেটিভ রোলেও ছিল সাড়া জাগানো অভিনয়, তবু কেন টেলিভিশন ছাড়লেন দেবযানী চ্যাটার্জি?

বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ‘দেবযানী চ্যাটার্জি’ (Debjani Chatterjee) , যাঁকে বহু ধারাবাহিকে আমরা কখনও পার্শ্ব চরিত্রে, কখনও বা রুদ্ররূপে দেখে অভ্যস্ত, তিনি এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির (Bengali Television) প্রতি। বনেদি ঘরের মেয়ে হিসেবে তাঁর বেড়ে ওঠা, পরবর্তীতে বনেদি বাড়ির বউ। যথেষ্ট পরিণত বয়সেই তার অভিনয়ে আসা। প্রথমদিকে পেয়েছেন কিছু কেন্দ্রীয় চরিত্রের সুযোগও। কিন্তু সময় গড়াতেই তাঁর ঝুলিতে আসতে শুরু করে মূলত নেগেটিভ বা পার্শ্বচরিত্রের ভূমিকাই।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেবযানী সাফ জানিয়ে দিলেন, আর ফিরছেন না ছোট পর্দায়! তাঁর কথায়, যে সময় তিনি টেলিভিশনে পা রেখেছিলেন, অর্থাৎ ২০০৩ সালে, তখনকার কাজগুলোয় ছিল গুণমান ও ভারসাম্য। সাহিত্যের অনুপ্রেরণায় তৈরি হতো টেলিফিল্ম, ছোট ছোট গল্প। চরিত্রগুলোর ছিল নিজস্ব গুরুত্ব, গভীরতা। তখনকার তুলনায় এখনকার ধারাবাহিকগুলো একঘেয়ে, বড্ড বেশি বানিজ্যিক ও স্টেরিওটাইপড। অভিনেত্রীর মতে, বর্তমান ধারাবাহিকগুলোতে শুধু মূল জুটি নয়, খলচরিত্রেরও যেন একইরকম ছাঁচ।

এক সময় তিনিও সেই কারণেই খলনায়িকার ভূমিকায় কাজ বেছে নিয়েছিলেন, কারণ সেখানে কিছু করার সুযোগ ছিল। ২০২২ সালে ‘যমুনা ঢাকি’ ধারাবাহিকের পরে তার আর ইচ্ছেই করেনি ছোট পর্দায় ফিরতে। দেবযানী জানান, তিনি নিজে থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং মন থেকে নিয়েছেন। তাঁর মতে, এখনকার টিভি কনটেন্টে কোনও অভিনয়গত গ্রোথ নেই, বরং চেনা ছকের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে গল্পগুলো, ছক ভাঙার কোনও চেষ্টাই নেই!

সেই একই গরীব মেয়ের চরিত্র, একই ধাঁচের ধনী ছেলে, একইরকম বিরোধী শক্তি। এতে শিল্পী হিসেবে নিজেকে বিকশিত করার কোনও সুযোগই থাকে না। অভিনেত্রী আরও আক্ষেপ করে বলেন, যাঁরা আজও অভিনয় করছেন তাঁদের অনেকেই জীবিকার কারণে বাধ্য। বহু প্রবীণ অভিনেতা, যাঁরা একসময় দারুন অভিনয় দিয়ে দর্শকের মন জয় করেছিলেন, আজ তাঁরই সেই ধারাবাহিকগুলোতে মুখে একটা সংলাপ না পেয়েও দৃশ্যপটে পড়ে আছেন—শুধু উপস্থিতির জন্য।

আরও পড়ুনঃ কাঞ্চনের জন্যই বদল! শ্রাবণের সোমবারে শিবপুজো শ্রীময়ীর! বিয়ের পর শ্রাবণ একেবারে অন্যরকম, কাঞ্চনের সঙ্গেই কি নিয়ম পালন করেন শ্রীময়ী?

এ যেন শিল্পীদের প্রতি নির্মম অবহেলা। দেবযানী নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন যে তিনি বয়সের আগেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন। তাঁর এই মন্তব্য টেলিপাড়ার চেনা বাস্তবতাকেই যেন আবারও খোলসা করে দিল সবার সামনে। যেখানে শিল্পীর সম্মান নয়, শুধুই বাজারের নিয়মেই বেঁচে থাকে বহু প্রতিভাবান মুখ। দেবযানীর বিদায়ী সুর যেন সেই সমস্ত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য এক প্রতিবাদ, যাঁরা আজও পর্দায় থাকলেও উপেক্ষার অন্ধকারে রয়েছেন।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।

You cannot copy content of this page