মা হওয়ার সব যন্ত্রনা ভোগ করেও, কোল খালি হয় কৃষ্ণকলি খ্যাত সুস্মিতার! তার যন্ত্রণা চোখে জল আনবে আপনার

বাস্তবটা বড্ড কঠিন। পর্দার সামনে যিনি জাঁদরেল খলনায়িকা, ক্যামেরা অন্তরালে কখনও তিনি লড়াকু এক নারী, অসহায় এক মা। তবে পছন্দের পেশায় অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য সবার থাকেনা। যাঁরা পান, তাঁদের সেই সুযোগ অর্জন করে নিতে হয়। তেমনি ছিল টেলি পর্দার জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী সুস্মিতা রায়ের (Sushmita Roy) জীবন। মনে পড়েছে জি বাংলার (Zee Bangla) ‘কৃষ্ণকলি’ (Krishnakali) ধারাবাহিকের এই পার্বতীকে? অভিনেত্রী সুস্মিতা জীবনে একাধিক উত্থান পতন মধ্যে দিয়ে গেছেন। নিজের জীবন সম্পর্কে এই প্রথম মুখ খুললেন তিনি।

সম্প্রতি ‘জোশ টক’- এর (Josh Talk) মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সুস্মিতা। অভিনেত্রী জানান, তিনি সুন্দরবনের গোসাবার মেয়ে। ছোটবেলায় স্কুলে যেতেন হাতে জুতো নিয়ে কাদামাটির পথ পেরিয়ে। পড়াশোনা করতেন ঘরে হ্যারিকেনের আলোয়। বাড়ির সবাই চেয়েছিলেন সুস্মিতা আর পাঁচটা মেয়ের মতো চাকরি করবেন। কিন্তু অভিনেত্রী জানতেন তিনি অভিনয়ের পথেই যাবেন।

জোশ টকে অভিনেত্রী ভাগ করে নেন জীবনে দুঃখ জড়ানো দিগুলির কাহিনি

স্কুল পাশের পরেই নিজের স্বপ্নের পথে হাঁটা শুরু করেন সুস্মিতা। কলেজে পড়ার সময় তিনি চলে আসেন কলকাতায়। সেখানে মেসে থাকাকালীন অভিনয়ের অডিশন দেওয়া শুরু। স্বাভাবিক ভাবেই পথটা বরাবরই এতটা সহজ ছিল না। তিনি একা মেয়ে তাই কলকাতায় বাড়ি ভাড়া পাওয়াও মুশকিল হয়ে পড়ে। কাজ নেই, টাকার অভাবে দিনে রাতে খাওয়ার জোগাড় করাও মুশকিল হয়ে পড়ে তাঁর।

অভিনেত্রী জানান, তাঁকে রোগা হওয়ার জন্য কোনোদিনও ডায়েট করতে হয়নি। না খেতে পেয়েই রোগা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি! কখনও জুটতো রাস্তার মোমো তো কখনও রাত কাটানোর ঠাঁই হতো রাস্তার ত্রিপল। এভাবেই একদিন ধারাবাহিকের জুনিয়র আর্টিস্টের কাজ পান সুস্মিতা। একসময় জি বাংলার ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকে পার্বতীর ভূমিকায় বাছা হয় তাঁকে।

জি বাংলার মেগায় অভিনয়ের সময় গর্ভবতী হন সুস্মিতা। জীবনে আসে সন্তান আসার আনন্দও। কিন্তু সে সময় গর্ভবতী সুস্মিতার অপারেশনের জন্য ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওটির ভিতর থেকেই সন্তানের হার্টবিট মিলছিল না! আশঙ্কা সত্যি করে ডাক্তার জানান সুস্মিতার গর্ভস্থ সন্তান মৃত। ডাক্তার বলেছিলেন সুস্মিতার গর্ভে ছিল কন্যা সন্তান। তিনি জানান ‘’চিকিৎসকের একটা ‘ছোট্ট’ ভুলে আমি মৃত সন্তান প্রসব করি। মায়ের শরীরের সমস্ত কষ্ট সহ্য করেও, আমার কোল ছিল শূন্য ’’।

আরও পড়ুন: নীল ও অনির্বাণের চরিত্রে কী মিল! যেন ইচ্ছেপুতুল লাইট, মিঠিঝোরার নায়কের চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ নেটদুনিয়ায়

যন্ত্রণা সয়ে পার্বতীর ভূমিকায় অভিনয় শেষ করেন অভিনেত্রী। প্রায় কুড়িটি ধারাবাহিকে অভিনয় করে ফেলেছেন তিনি। দর্শকদের কাছে সুস্মিতা কেমন প্রশ্ন করা হলে অভিনেত্রী জানান ‘সিরিয়ালে আমাদের অন্নপূর্ণা পুজো সবে দেখানো হল । সেখানে দিৎসা পুজোর সমস্ত পায়েস নষ্ট করে দেয় । এ বার দিন কয়েক আগে আমার জন্মদিন ছিল । সেখানে আমার পায়েসের বাটির ছবি দেখে লোকে বলছে, ‘তোমার পায়েসটাও নষ্ট করে দেওয়া উচিত’। কিন্তু এটাতে রেগে হয়ে না অভিনেত্রীর উল্টে তিনি খুশি থাকেন এই ভেবে যে দর্শকদের উপর তার অভিনয়ের প্রভাব পড়ছে।

Back to top button