বাংলা টেলিভিশন জগতে এমন কিছু অভিনেত্রী আছেন যাঁদেরকে ভোলা অসম্ভব। আর তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন টেলি দুনিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় মুখ সমতা দাস। এখজন শিশু অভিনেত্রী থেকে সিনিয়র অভিনেত্রীর এই সফল যাত্রা পথে নিজের অভিনয় দিয়ে বিভিন্ন সময় দর্শকদের মন জিতে নিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় প্রথম অভিনয় হাতে খড়ি হয়েছিল এই অভিনেত্রীর। জন্মভূমি ধারাবাহিকে একজন শিশু শিল্পীর চরিত্রে তাঁর অভিনয় জগতে পথচলা শুরু করেন অভিনেত্রী সমতা দাস। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলা টেলিভিশনের দুনিয়ায় অন্যতম পরিচিত মুখ।
জনপ্রিয় এক আকাশের নিচে ধারাবাহিকে টুসকির চরিত্রে বেজায় জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। আসলে এই ধারাবাহিকে অভিনয়ের মধ্যে দিয়েই বাংলা ইন্ডাস্ট্রি পেয়েছিল দুজন সুদক্ষ অভিনেত্রীকে। অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সমতা দাস এই দুই অভিনেত্রীকেই খ্যাতি এনে দিয়েছিল এই ধারাবাহিকটি।
কনীনিকা নিজের জনপ্রিয়তাকে ধরে রাখতে পারলেও সেই জনপ্রিয়তাকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি সমতা। হঠাৎ করেই তিনি কার্যত উবে যান অভিনয় জগত থেকে। দীর্ঘ বিরতি নেন তিনি। পরে জানা যায় নিজের জীবনে হঠাৎ করেই একটা বিশাল বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছিলেন সমতা। আর যার জন্য সেই সময়টা তিনি কোনভাবেই আর নিজের অভিনয় ক্যারিয়ারের ওপর ফোকাস করতে পারেননি এই অভিনেত্রী।
জানা যায়, অত্যন্ত রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে সমতা। তার প্রেম বাড়ি থেকে মেনে না নেওয়ায় অত্যন্ত অল্প বয়সে তিনি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন। এই ঘটনার জন্য কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। তাঁর এই সিদ্ধান্তে একেবারেই মত ছিল না তার পরিবারের!
দারুণ অভিনয় দক্ষতা সত্ত্বেও কখনও নায়িকা হওয়া হয়ে ওঠেনি সমতা দাসের বরং পার্শ্ব চরিত্রে আজও উজ্জ্বল তিনি। ছোট পর্দায় কামব্যাক করলেও কোনদিন মূল চরিত্রে অভিনয় করেননি এই গুনী অভিনেত্রী। ‘সৌদামিনীর সংসার’ ধারাবাহিক দিয়ে আবারও তিনি ফেরেন ছোটপর্দায়। যথারীতি প্রশংসিত হয় তাঁর অভিনয়। সৌদামিনীর শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সমতা। এরপর রানী রাসমনি ধারাবাহিকেও রাসমনির শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করেন সমতা। জি বাংলায় বোধিসত্ত্বের বোধবুদ্ধি ধারাবাহিকেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে।
এছাড়াও ‘গৌরী এলো’ ধারাবাহিকে গৌরীর মায়ের চরিত্রে এবং স্টার জলসার ধারাবাহিক রামপ্রসাদে রামপ্রসাদ সেনের মায়ের চরিত্রের অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। আসলে বর্তমান সময়ে, শাশুড়ি, মা, কাকিমা এই ধরনের চরিত্রে বেশি অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে এই গুণী অভিনেত্রীকে। বলাই যায় পর্দা থেকে তাঁর দীর্ঘ বিরতি এর কারণ।
যদিও এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে বিশেষ আপত্তি নেই অভিনেত্রীর।তার মতে চরিত্র ভালো হলে আর সেখানে তাঁর অভিনয়ের সুযোগ থাকলে তিনি সমস্ত চরিত্রকেই হ্যাঁ বলেন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এই অভিনেত্রী জানিয়েছেন, মেয়েদের নায়িকা হওয়ার উপযুক্ত বয়স হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫। আর সেই বয়সের দীর্ঘ সময়টায় কার্যত অভিনয়ের বাইরে ছিলেন তিনি।আর সেই কারণেই হয়ত নায়িকা হয়ে ওঠা হলো না তাঁর।