স্টার হয়ে ওঠার পথ কখনওই সহজ নয়। আলোয় ভরা পর্দার পেছনে লুকিয়ে থাকে সংগ্রামের বহু অজানা অধ্যায়। ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ স্বস্তিকা ঘোষের জীবনও তার ব্যতিক্রম নয়। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকে দীপার চরিত্রে যাকে দেখে আজ দর্শক মুগ্ধ হন, সেই মেয়েটির যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল একেবারে সাধারণ পরিবেশ থেকে।স্বপ্ন ছিল বড়, কিন্তু পথ ছিল কাঁটায় ভরা।
ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর প্রবেশ খুব দিনের নয়। কিন্তু স্বল্প সময়ের মধ্যেই স্বস্তিকা নিজের অভিনয়ের জোরে জায়গা করে নিয়েছেন দর্শকের মনে। ‘সরস্বতীর প্রেম’-এ প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেও ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র দীপা তাঁকে এনে দেয় আলাদা পরিচিতি। মাত্র ১৯ বছর বয়সে এমন জনপ্রিয়তা—এটা যে সহজে পাওয়া নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অভিনয়ের দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পাশাপাশি স্বস্তিকা পূরণ করেছেন নিজের প্রথম বড় স্বপ্ন—নিজের গাড়ি। নিজের উপার্জিত টাকায় কেনা এই গাড়ি তাঁর কাছে শুধু সম্পদ নয়, বরং নিজেকে প্রমাণ করার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এরপরে কলকাতায় নিজের বাসস্থান তৈরি থেকে শুরু করে দর্শকের ভালোবাসা সবকিছুকেই অর্জন করেছেন অভিনেত্রী। বর্তমানে ধারাবাহিক শেষ হওয়ার খবর সামনে আসলে মন খারাপ অনেক দর্শকেরই।
কিন্তু এই সাফল্য হঠাৎ করে এসে পড়েনি। স্বস্তিকার ছোটবেলার দিনগুলো ছিল একেবারেই অন্য রকম। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘির সাধারণ ঘরেই বেড়ে ওঠা মেয়েটি ছোট থেকেই নাচ-গানের মধ্যে ডুবে থাকতেন। পরিবারও তাকে মানসিকভাবে শক্ত করে বলেছিল—”তুই পারবি, তুই বড় হবি।” সেই কথাই যেন তার পথচলার সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার পরে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ‘বিয়ে করে বালিগঞ্জে বাড়ি ভাড়া ছিলাম, ভালোবাসা একটা হয়েছিল…’ উত্তম কুমারকে নিয়ে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের অকপট স্বীকারোক্তি! বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর আবেগঘন স্মৃতি চর্চার পর টলিউডে নতুন গুঞ্জন!
তাঁর সেই কঠিন দিনের গল্প জানলে আজও অনেক দর্শকের চোখেই জল আনবে। অভিনেত্রীকে কখনও কখনও রাত স্টেশনেই কাটাতে হয়েছে। রায়দিঘি থেকে কলকাতায় প্রতিদিন যাতায়াত করতে গিয়ে মাঝরাতে বাড়ি ফেরা সম্ভব হতো না। বাবার সঙ্গে স্টেশনের বেঞ্চেই কেটেছে বহু রাত। তবু হাল ছাড়েননি স্বস্তিকা। নিজের জেদের জোরে তিনি মনকে বোঝাতেন—কলকাতা শহরেই একদিন নিজের সত্যিকারের জায়গা তৈরি করবেন। আজ তাঁর সাফল্যই সেই লড়াইয়ের সবচেয়ে বড় প্রমাণ।






