বর্তমানে বাংলা বিনোদনের জগতের এখন একটি জনপ্রিয় মুখ তিনি। ছোটবেলা থেকেই শখ ছিল অভিনয়ের। পাশে পেয়েছিলেন বাবা মাকে। সেই টানেই ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতা আছেন তিনি। ছোট থেকেই দিয়েছেন একের পর এক অডিশন। রাতের পর রাত কাটিয়েছেন কলকাতার হোটেলে থেকে। তবুও হাল ছাড়েনি তিনি। বর্তমানে কলেজের প্রথম বর্ষের পরেছেন। ইতিমধ্যেই করেছেন তিনটি ধারাবাহিককে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়। কেমন ছিল তার অভিনয়ের যাত্রা? সাংবাদিকদের জানালেন মিঠিঝোরার (Mithijhora) রাইপূর্ণা ওরফে আরত্রিকা মাইতি (Aratrika Maiti)।
অভিনেত্রী জানিয়েছেন মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের যাত্রা তিনি শুরু করেছিলেন ২০২১ সালের অগ্নিশিখা ধারাবাহিকের মাধ্যমে। তবে এটাই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছেন জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক রানী রাসমনিতে। যদিও তিনি জানিয়েছেন ধারাবাহিককে কাজ করাকালীন শুধু ক্যামেরার সামনে দাড়িয়ে ছিলেন তিনি। কোন সংলাপ ছিল না তার। যদিও সেই সুযোগটিও তিনি পেয়েছিলেন অডিশনের মাধ্যমেই। “আমি অনেক ছোট থেকেই অডিশন দিয়েছি। তবে অনেক ভুলভাল জায়গায়ও অডিশন দিয়েছিলাম। কিন্তু অগ্নিশিখায় প্রথম ঠিকঠাক জায়গায় অডিশন দিই। সুযোগও পেয়ে যাই। লকডাউনের সময় হয়েছিল পুরো বিষয়টা” বলেছেন আরত্রিকা।
দাদু যুক্ত ছিলেন থিয়েটারের সঙ্গে। একটি নাটকদলও ছিল তার। এছাড়াও তিনি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকতাও করেছেন। যেখানে পড়াশোনা করেছিলেন অভিনেত্রীর বাবা, জেঠু। বিশেষভাবে কোন প্রস্তুতি না নিলেও ছোট থেকেই স্কুলের, পাড়ার নানা অনুষ্ঠানে নাচে এবং নাটকে অংশ নিতেন তিনি। বাকি সবটাই করেছিলেন অভিনেত্রীর মা। কাজের সূত্রে কলকাতায় এসে আরত্রিকার ছবি তিনি দিয়ে আসতেন স্টুডিও পাড়ায়। অডিশনের জায়গা খুঁজে বের করা, তাকে অডিশনে নিয়ে যাওয়া সমস্ত দায় দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এই সবটাই শুরু হয়েছিল যখন তিনি পড়তেন পঞ্চম শ্রেণীতে। রানী রাসমনি ধারাবাহিককে যখন তিনি সুযোগ পান তখন চলছিল তার অষ্টম শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষা। তারপর লকডাউনের সময় তিনি সুযোগ পান অগ্নিশিখার। তবে প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, অভিনেত্রীর দাদু গৌরাঙ্গ প্রসাদ মাইতির নাটক দলের নাম নবোদয় সঙ্ঘ।”
আরত্রিকা বর্তমানে যোগমায়া কলেজের মনবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তবে এরমধ্যেই তিনি করেছেন তিন তিনটি ধারাবাহিককে মেন লিড। অগ্নিশিখার পর তিনি সুযোগ পান জি বাংলার খেলনা বাড়ি ধারাবাহিককে। প্রায় দেড় বছর সফলতার সঙ্গে চলার পর শেষ হয় ধারাবাহিকটি। তার ২-৩ দিন পরই তিনি সুযোগ পেয়ে যান মিঠিঝোরা ধারাবাহিকের। ফলে বসে থাকার অবসর পাননি তিনি। যদিও তিনি জানিয়েছেন অনেক অডিশন থেকেই বাদ করেছিলেন তিনি কোনও রোগা হওয়ার কারণে তো কখন “বাচ্চা বাচ্চা” দেখতে হওয়ার কারণে কিন্তু অগ্নিশিখাতেই মুখ্য চরিত্রের অডিশন দেন তিনি। তারপর আর অডিশন দিতে হয়নি, নিজের দক্ষতায় তিনি পেয়েছেন বাকি দুটি ধারাবাহিক। প্রয়াত সন্দীপ চৌধুরীর হাত ধরেই তিনি শুরু করেছিল তার প্রথম কাজ।
বড়পর্দায় কি দেখা যাবে তাকে? উত্তরে তিনি জানিয়েছেন “অবশ্যই, অনেক সুযোগও এসেছিল কিন্তু সময়ের সমস্যার কারণে, চুক্তির কারণে করতে পারনি। তবে আফোসেস নেই। যেটা করছি মন দিয়ে করছি। পরে আবার সুযোগ আসবে।” নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীদের জন্য টিপস দিয়ে তিনি বলেছেন “যদি ইচ্ছে থাকে তাহলে হবে। লেগে থাকতে হবে। আমি ৫ থেকে শুরু করেছি। প্রধান অভিনেত্রীর কাজ পেয়েছি ১০এ। কতবার হবে না! হতেই হবে। বাড়িতে মনোলোগ বলতাম, সংলাপ বলতাম। যদিও ছোট থেকে এত স্ট্রেজ শো করেছি, এত প্রতিযোগিতায় গেছি যে ক্যামেরার সামনে ভয় লাগেনি। তবে আমি সন্দীপ চৌধুরীর কাছে কৃতজ্ঞ আমায় সুযোগ দেওয়ার জন্য। তবে আমি মনে করি মন পেলে হবে না, নিজেকে প্রতিদিন তৈরি করতে হবে।”
অভিনেত্রী জানিয়েছেন প্রথমে দুটো ট্রেনে করে কলকাতায় আসতেন তিনি। তারপর অগ্নিশিখার অডিশন দেওয়ার সময় প্রথম প্রথম হোটেলে থাকতেন তিনি। তারপর সুযোগ পাওয়ার পর ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে তার মা বাবাও থাকছেন তার সঙ্গে। এখন তার লক্ষ্য একটি নিজস্ব আস্তানা। অভিনেত্রীর জন্য রইল অনেক শুভেচ্ছা, আরও এগিয়ে যান তিনি, এই আশাই করব।