“নিজেই সিঁদুর পরে স্ত্রী হয়ে গেল পার্বতী, এখন নাকি স্বতন্ত্র আর কাউকে বিয়ে করতে পারবে না!” “কাল কাঁদছিলো অধিকার চাইবে না বলে, আজ দাবি করছে স্বতন্ত্রই তাঁর স্বামী!” “স্বতন্ত্রের এটা জীবন না নাটকের মঞ্চ?”— পার্বতীর চরিত্র নিয়ে ক্ষুব্ধ ‘চিরসখা’র দর্শকরা!

স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’-এর (Chiroshokha) সাম্প্রতিক পর্বে আবারও এমন মোড় এসেছে, যেটা অনেক দর্শকের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি করেছে। স্বতন্ত্র, যে কিনা সবসময় কমলিনীর প্রতি তার ভালোবাসার কথা বলে, তার শৈশবের খেলার সঙ্গী পার্বতীর সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব আসা এবং পার্বতীর জোর করে সম্পর্ক চাপানোর বিষয়টা যেন নতুন করে লেখিকার একই পুরানো গল্প পুনরাবৃত্তি করছে, দাবি দর্শকদের।

যদিও গ্রামের লোকজন থেকে পুরোহিতের অনুরোধ এবং স্বতন্ত্রের মায়ের দেওয়া পুরনো প্রতিশ্রুতি জটিলতা বাড়িয়েছে, তবুও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ছোটবেলার খেলার সঙ্গী হওয়া মানেই কি বড় হয়ে বিয়ে করতেই হবে? সবথেকে বেশি কটাক্ষের সম্মুখীন হচ্ছে পার্বতী চরিত্রটি। যাঁকে দেখে বোঝা যায়, সে শৈশব থেকেই স্বতন্ত্রের প্রতি কিছুটা আলাদা অনুভূতি পুষে এসেছে। কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর তার আচরণ যেন খুব বেশি নাটকীয় এবং সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে।

ব্যক্তিগত কথোপকথনে স্বতন্ত্র তাঁকে বিয়ে করতে না পারার কারণে জানালে, সে স্বতন্ত্রকে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা করলেও, বাইরে গিয়ে নিজেই স্বতন্ত্রকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে সিঁদুর পরেছে। এই দ্বৈধ্বন্ধপূর্ণ এবং সুবিধাবাদী আচরণে দর্শকরা অনেকেই বিরক্ত। পার্বতীর এমন মনোভাব অনেকের কাছে এক ধরনের নাটকীয় আর কূটনৈতিক চাল হিসেবে ধরা পড়েছে, যা চরিত্রের সঙ্গে একপ্রকার অসঙ্গতি তৈরি করেছে। গ্রামের সমাজ আর পরিবারিক ঐতিহ্যের কারণে অনেক সময়ই এমন জোরজবরদস্তির বিয়ের ঘটনা দেখা যায়।

সেটাই ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকেও প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু এই একই ধরনের গল্প বারবার দেখানো হলে দর্শকরা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। গ্রামের ঐক্যের নামে স্বতন্ত্রকে পার্বতীর সঙ্গে জোর করে যুক্ত করার চেষ্টায় অনেকেই অনুভব করছেন যে গল্পের গতিপ্রকৃতি যেন একঘেয়ে হয়ে পড়ছে। ছোটবেলার বন্ধুত্বকে অতিরঞ্জিত করে বিয়ের সঙ্গে যুক্ত করা যেন একটা অবাস্তব ও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। উল্লেখ্য, স্বতন্ত্র যেখানে বরাবর স্পষ্ট করেছে, মায়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি থাকলেও সে নিজের জীবনে অন্য কাউকে ভালোবাসে।

আরও পড়ুনঃ “মাতৃত্বের অনুভূতিটা একেবারেই আলাদা… যাঁরা মা হয়নি, তাদের এই অনুভূতিটা বোঝা কঠিন!” “সন্তান জন্ম না দিলে ভেতর থেকে মাতৃত্ববোধ আসে না!”— অকপট স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়! অভিনেত্রীর বক্তব্যে মাতৃত্বহীন নারীদের প্রতি একরকম ‘অযোগ্যতার’ ইঙ্গিত? বিতর্কে মুখর নেটপাড়া!

কিন্তু পার্বতীর আচরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, সে পুরো ঘটনাটিকে নিজের মতো করে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, যেটা সমাজের কাছে দৃষ্টিকটু হয়ে উঠেছে। স্বতন্ত্রের প্রতি তার এই হঠাৎ বদল যেন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে, “এই পার্বতী এতটা পল্টি’বাজ আর সুবিধা’বাদী! নিজে কথা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ভান করে, আবার পরের দিন নিজেকে স্বতন্ত্রের স্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করছে! বলছে আর কাউকে বিয়ে করতে পারবে না সে!” ‘চিরসখা’র এই নতুন মোড় দর্শকদের জন্য নতুন না হয়ে, বরং পুরনো জটিলতা ও বিরক্তিকর গল্প বলার পুনরাবৃত্তি মনে হচ্ছে, যা ধারাবাহিকটির দর্শক সংখ্যাও যথেষ্ট কমিয়ে দিচ্ছে।